সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এক কঠিন দিনের আরম্ভ

এক কঠিন দিনের আরম্ভ

অধ্যায় ১০৫

এক কঠিন দিনের আরম্ভ

যখন যীশু সোমবার বিকালে যিরূশালেম ছাড়েন, তিনি ফিরে যান বৈথনিয়াতে যা জৈতুন পর্বতের পূর্বপ্রান্তের ঢালুর উপরে অবস্থিত। যিরূশালেমে তাঁর অন্তিম পরিচর্য্যার দুইদিন পরিপূর্ণ হয়েছে। সন্দেহ নেই যে তিনি আবার তাঁর বন্ধু লাসারের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেছেন। শুআবার দিন যিরীহো থেকে আসার পর, তিনি এই নিয়ে চতুর্থ রাত্রি কাটালেন বৈথনিয়াতে।

এবার, মঙ্গলবার, নিশান ১১ তারিখের সকাল বেলা, তিনি ও তাঁর শিষ্যরা আবার রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন। এই দিনটি যীশুর পরিচর্য্যার এক কঠিন দিন, ও এখন অবধি সব থেকে ব্যস্ততাপূর্ণ। এই দিনে তিনি শেষবার মন্দিরে যান। আর তাঁর বিচার ও মৃত্যুর পূর্বে এটি তাঁর পরিচর্য্যার শেষ দিন।

যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জৈতুন পর্বতের উপর দিয়ে সেই একই পথ ধরে যিরূশালেমের দিকে যান। বৈথনিয়া থেকে যাবার পথে, পিতর সেই গাছটিকে লক্ষ্য করেন যেটিকে যীশু আগের দিন অভিশাপ দিয়েছিলেন। “রব্বি, দেখুন!” তিনি আশ্চর্য্য হয়ে বলেন, “আপনি যে ডুমুর গাছটিকে শাপ দিয়াছিলেন সেটি শুকাইয়া গিয়াছে।”

কিন্তু যীশু এই গাছটিকে কেন মেরে ফেলেন? কেন তা তিনি জানান, যখন তিনি বলে চলেন: “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে, আর সন্দেহ না কর, তবে তোমরা কেবল ডুমুর গাছের প্রতি এইরূপ করিতে পারিবে, তাহা নয়, কিন্তু এই পর্বতকেও [যে জৈতুন পাহাড়ে তারা দাঁড়িয়েছিলেন] যদি বল, ‘উপড়াইয়া যাও, সমুদ্রে গিয়া পড়,’ তাহাই হইবে। আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসপূর্বক যাহা কিছু যাচ্ঞা করিবে, সে সকলই পাইবে।”

এই ভাবে গাছটিকে মরে যেতে দেখিয়ে যীশু তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছেন কেন তাদের ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন। তিনি যেমন বলেন: “যাহা কিছু তোমরা প্রার্থনা ও যাচ্ঞা কর, বিশ্বাস করিও যে, তাহা পাইয়াছ, তাহাতে তোমাদের জন্য তাহাই হইবে।” কি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাই না তাদের জন্য, বিশেষ করে যে বিরাট পরীক্ষা তাদের উপরে আসতে যাচ্ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে! এছাড়া, বিশ্বাসের গুণ ও ডুমুর বৃক্ষের শুকিয়ে যাবার মধ্যে আর একটি যোগাযোগ আছে।

ইস্রায়েল জাতি, এই ডুমুর বৃক্ষের মত, ছলনার রূপ প্রদর্শন করছে। যদিও জাতিটি ঈশ্বরের সাথে চুক্তির সম্পর্কে আছে ও বাইরে থেকে প্রদর্শন করে যে ঈশ্বরের আইন মেনে চলে, আসলে প্রমাণ করেছে যে তাদের বিশ্বাস নেই, ভাল ফল উৎপাদনে শক্তিহীন। তাদের বিশ্বাসের আভাবের জন্য, ঈশ্বরের পুত্রকেও প্রত্যাখ্যান করেছে! তাই, সেই ফলহীন ডুমুর গাছটিকে শুকিয়ে যেতে দিয়ে, যীশু রূপকভাবে দেখাচ্ছেন এই ফলহীন, বিশ্বাসহীন জাতির শেষ পরিণতি কি হবে।

এর কিছু পরে, যীশু ও তাঁর শিষ্যরা যিরূশালেমে প্রবেশ করেন, এবং তাদের রীতি অনুসারে, তারা মন্দিরে যান আর সেখানে যীশু শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন। প্রধান যাজকগণ ও অন্যান্য প্রাচীনরা, যীশু তার আগের দিন পয়সার লেনদেনকারীদের সাথে কি করেছেন স্মরণে রেখে, তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে: “তুমি কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছ? আর কেই বা তোমাকে এই ক্ষমতা দিয়াছে?”

উত্তরে যীশু বলেন: “আমিও তোমাদিগকে একটি কথা জিজ্ঞাসা করিব। তাহা যদি আমাকে বল, তবে কি ক্ষমতায় এ সকল করিতেছি, তাহা আমিও তোমাদিগকে বলিব: যোহনের বাপ্তিস্ম কোথা হইতে হইয়াছিল? স্বর্গ হইতে না মনুষ্য হইতে?”

তখন সেই পুরোহিত শ্রেণী ও প্রাচীনেরা পরামর্শ করে তাদের মধ্যে যে কি করে প্রশ্নের উত্তর দেবে তাঁকে। “যদি বলি, ‘স্বর্গ হইতে,’ এ আমাদিগকে বলিবে, ‘তবে তোমরা, তাঁহাকে বিশ্বাস কর নাই কেন?’ আর যদি বলি ‘মনুষ্য হইতে,’ লোকসাধারণকে ভয় করি; কারণ সকলে যোহনকে ভাববাদী বলিয়া মানে।”

নেতারা জানে না তারা কি উত্তর দেবে। তাই তারা যীশুকে উত্তর দেয়: “আমরা জানি না।”

যীশু উত্তর করে বলেন: “তবে আমিও কি ক্ষমতায় এ সকল করিতেছি, তোমাদিগকে বলিব না।” মথি ২১:১৯-২৭; মার্ক ১১:১৯-৩৩; লূক ২০:১-৮.

▪ নিশান ১১ তারিখ, মঙ্গলবার কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

▪ যখন যীশু ডুমুর গাছকে শুকিয়ে যেতে দেন তার মাধ্যমে কি শিক্ষা প্রদান করেন?

▪ যারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করে কি ক্ষমতায় তিনি এই সকল করেন তিনি তাদের কি উত্তর দেন?