সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

এক সম্ভাবনাহীন শিষ্য

এক সম্ভাবনাহীন শিষ্য

অধ্যায় ৪৫

এক সম্ভাবনাহীন শিষ্য

যীশু সেই তীরে পা দিয়ে কি ভয়ংকর এক দৃশ্য দেখলেন! দুইজন অস্বাভাবিকভাবে হিংস্র ব্যক্তি নিকটবর্ত্তী কবরখানা থেকে বেরিয়ে এসে তাঁর দিকে দৌড়াতে থাকে। তারা ভূতগ্রস্ত লোক। যেহেতু তাদের মধ্যে একজন অপর ব্যক্তির থেকে বেশী ভয়ংকর কারণ সে বেশী সময় দুষ্ট আত্মার কবলে রয়েছে ও কষ্ট পেয়েছে, তাই সে দৃষ্টির কেন্দ্রস্থল হয়।

অনেকদিন ধরে এই ব্যক্তি উলঙ্গ অবস্থায় কবরখানায় বাস করছে। সে অবিরত, রাত-দিন চেঁচায় ও নিজেকে পাথর দিয়ে আঘাত করে। সে এত ভয়ংকর যে কারুরই সেই রাস্তা দিয়ে যাবার সাহস নেই। তাকে বেঁধে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সে তার পায়ের শিকল ও দেহের বেড়ি ছিঁড়ে ফেলে। তাকে শান্ত করার ক্ষমতা কারুর নেই।

এই ব্যক্তি যীশুর নিকটে এসে তাঁর পায়ে পড়ে, তখন যে দুষ্ট আত্মারা তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখছিল তারা তাকে চিৎকার করতে বাধ্য করে: “হে যীশু, পরাৎপর ঈশ্বরের পুত্র, আপনার সাথে আমার সম্পর্ক কি? আমি আপনাকে ঈশ্বরের দিব্য দিতেছি, আমাকে যাতনা দিবেন না।”

“হে অশুচি আত্মা, এই ব্যক্তি হইতে বাহির হও,” যীশু বলতে থাকেন। কিন্তু তারপর যীশু জিজ্ঞাসা করেন: “তোমার নাম কি?”

“আমার নাম বাহিনী, কারণ আমরা অনেকগুলি আছি,” সে উত্তরে বলে। এই মন্দ দূতেরা যাদের উপর ভর করে তাদের কষ্ট দেখতে মজা পায়, আর সবেত ভীরুর মত দলবদ্ধ হয়ে আক্রমণ করে। কিন্তু যীশুর সম্মুখীন হয়ে, তারা ভিক্ষা চায় যেন তাদের অন্ধকারময় সেই কারাকূপে নিক্ষেপ করা না হয়। আমরা আবার দেখি যে যীশুর মহা ক্ষমতা আছে; তিনি দুরন্ত মন্দ আত্মাদের উপরও জয়ী হতে পারেন। ইহা আরও প্রদর্শন করে যে দুষ্ট দূতরা জানে যে তাদের ও তাদের নেতা, শয়তান দিয়াবলের, ঈশ্বরের থেকে শেষ বিচার হচ্ছে অন্ধকারময় কারাকূপে নিক্ষেপ।

প্রায় ২০০০ শূকরের এক পাল পর্বতের কাছে চরছিল। তাই আত্মাগুলি বলে: “ঐ শূকরপালের মধ্যে প্রবেশ করিতে আমাদের পাঠাইয়া দিউন।” এর থেকে মনে হয় যে এই মন্দ দূতেরা মাংসিক দেহে প্রবেশ করে কোন অদ্ভুত, পাশবিক আনন্দ উপভোগ করে। যখন যীশু তাদের অনুমতি দেন শূকরগুলিতে প্রবেশ করতে, সমস্ত ২০০০ শূকর মহাবেগে দৌড়ে ঢালু পাড় দিয়ে গিয়ে সমুদ্রে ডুবে মরে।

যখন এই ঘটনা ঘটে তা দেখে যারা ওই পালের দেখাশুনা করছিল, তারা গিয়ে এই সংবাদ নগরে ও পল্লীতে দেয়। তখন, লোকেরা বেরিয়ে এসে দেখে যে কি ঘটেছে। তারা সেই ব্যক্তিকে দেখে, যার মধ্যে থেকে মন্দ আত্মা বেরিয়ে এসেছে। সে ভাল কাপড় পরে, সুস্থ মস্তিস্কে, যীশুর পায়ের কাছে বসে আছে!

যারা স্বচক্ষে দেখেছিল তারা বর্ণনা করে কিভাবে এই ব্যক্তি সুস্থ হয়। তারা সেই শূকরদের অদ্ভুত মৃত্যুর কথাও বর্ণনা করে। যখন লোকে এই বিষয় শুনে, এক বিরাট ভয় তাদের গ্রাস করে, আর তারা নিবেদন করে যেন যীশু তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যান। তাই তিনি তাদের ইচ্ছায় নৌকায় উঠেন। সেই পূর্বের ভূতগ্রস্ত লোকটি আবেদন করে যাতে যীশু তাকে তাঁর সাথে যেতে অনুমতি দেন। কিন্তু যীশু তাকে বলেন: “তুমি বাটীতে তোমার আত্মীয়গণের নিকটে চলিয়া যাও, এবং যিহোবা তোমার জন্য যে মহৎ কার্য্য করিয়াছেন, ও তোমার প্রতি যে কৃপা করিয়াছেন, তাহা তাহাদিগকে জ্ঞাত কর।”

যীশু সাধারণত যাদের সুস্থ করেন তাদের বলেন যেন তারা কাউকে না বলে, কারণ তিনি চান না যে ব্যক্তিরা লোমহর্ষক খবর শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু এই ব্যতিক্রমটি যথাযথ যেহেতু এই পূর্বের ভূতগ্রস্ত ব্যক্তি সেই লোকেদের কাছে সাক্ষ্য দেবে, যাদের কাছে যীশু সাক্ষ্য দেবার সুযোগ হয়ত পাবেন না। আরও, এই ব্যক্তির উপস্থিতি যীশুর ভাল কাজের যে ক্ষমতা আছে তার প্রতি সাক্ষ্য দেবে, এবং তা ঐ শূকরগুলি নষ্ট হবার জন্য যে অপ্রীতিকর খবর ছড়িয়েছে তাকে খণ্ডন করবে।

যীশুর উপদেশের সাথে মিল রেখে, সেই পূর্বের ভূতগ্রস্ত ব্যক্তিটি চলে যায়। সে সমস্ত দিকাপলিতে যীশু তার জন্য যা যা করেছেন তা প্রচার করে, আর লোকেরা তা শুনে আশ্চর্য্য হয়। মথি ৮:২৮-৩৪; মার্ক ৫:১-২০; লূক ৮:২৬-৩৯; প্রকাশিত বাক্য ২০:১-৩.

▪ কেন, কেবল, একজন মন্দ আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তির উপর দৃষ্টি পড়ে যখন দুইজন উপস্থিত আছে?

▪ কি দেখায় যে মন্দ দূতেরা জানে যে ভবিষ্যতে তাদের অন্ধকারময় কূপে ফেলা হবে?

▪ কেন, মনে হয়, মন্দ দূতেরা মানুষ ও পশুর মধ্যে প্রবেশ করতে চায়?

▪ কেন যীশু এবার ব্যতিক্রম করেন এই পূর্বে মন্দ আত্মাগ্রস্ত ব্যক্তিটির ক্ষেত্রে, ও আদেশ দেন যাতে সে অন্যদের বলে যে তিনি তার জন্য কি করেছেন?