সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

খ্রীষ্টের রাজ্যের গৌরবের পূর্ব প্রদর্শন

খ্রীষ্টের রাজ্যের গৌরবের পূর্ব প্রদর্শন

অধ্যায় ৬০

খ্রীষ্টের রাজ্যের গৌরবের পূর্ব প্রদর্শন

যীশু কৈসরিয়া ফিলিপীর এক অংশে এসে পৌঁছেছেন, এবং তিনি এক জনতাকে শিক্ষা দিচ্ছেন, যার মধ্যে তাঁর প্রেরিতরাও অন্তর্ভুক্ত। তিনি এই চমক জাগানো ঘোষণাটি করলেন: “আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি যাহারা এখানে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে, তাহাদের মধ্যে এমন কয়েকজন আছে, যাহারা কোন মতে মৃত্যুর আস্বাদ পাইবে না, যে পর্যন্ত মনুষ্য পুত্রকে আপনার রাজ্যে আসিতে না দেখিবে।”

‘যীশু এর দ্বারা কি বোঝাতে চাইলেন?’ তাঁর শিষ্যরা ভাবতে থাকেন। প্রায় এক সপ্তাহ পরে, যীশু পিতর, যাকোব, ও যোহনকে সঙ্গে নিয়ে, এক উচ্চ পাহাড়ে উঠলেন। সেই সময়টি হয়ত রাত্রিকাল, কারণ শিষ্যরা নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছিল। যীশু প্রার্থনা করার সময়ে, তাদের সামনে রূপান্তরিত হলেন। তাঁর মুখ সূর্য্যের ন্যায় উজ্জ্বল এবং তাঁর পরিচ্ছদ দীপ্তির ন্যায় শুভ্র হল।

এরপর, দুজন দেখা দিলেন, সনাক্তকরণ করা গেল, “মোশি ও এলিয় রূপে,” ও তাঁরা যীশুর সঙ্গে কথোপকথন শুরু করলেন ‘যীশুর যাত্রাটির বিষয় যা তিনি যিরূশালেমে সম্পাদন করবেন।’ যাত্রাটি হল যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থান। এইরূপে, এই কথোপকথন প্রমাণ করে যে তাঁর অবমাননাজনক মৃত্যু তিনি এড়াতে পারবেন না, পিতর যেমন চেয়েছিলেন।

শিষ্যরা এখন সম্পূর্ণ জাগরিত অবস্থায়, লক্ষ্য করতে লাগলেন ও আশ্চর্য্য হয়ে শুনতে লাগলেন। যদিও এটি একটি দর্শন মাত্র, কিন্তু এত বাস্তব ছিল যে পিতর এই সময়ে, বলে ওঠেন: “নাথ, এখানে আমাদের থাকা ভাল। আমরা তিনটি কুটীর নির্ম্মাণ করি; একটি আপনার জন্য, একটি মোশির জন্য, আর একটি এলিয়ের জন্য।”

যখন পিতর কথা বলছেন, এক উজ্জ্বল মেঘ এসে তাদের উপর ছায়া করল, এবং সেই মেঘ হইতে এই বাণী হল: “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, আমার মনোনীত; ইহাঁর কথা শুন।” এই স্বর শুনে শিষ্যরা উবুড় হয়ে পড়লেন ও অত্যন্ত ভয় পেলেন। কিন্তু যীশু বললেন: “উঠ, ভয় করিও না।” তারা চক্ষু তুলে কাউকে দেখতে পেলেন না, কেবল যীশু একলা ছিলেন।

পরদিন পর্বত থেকে নামার পথে, যীশু আদেশ দিলেন: “যে পর্যন্ত মনুষ্যপুত্র মৃতগণের মধ্য হইতে না উঠেন, সে পর্যন্ত তোমরা এই দর্শনের কথা কাহাকেও বলিও না।” এই দর্শনে এলিয়ের আগমন শিষ্যদের মনে এক প্রশ্ন সৃষ্টি করে। “তবে,” তারা প্রশ্ন করলেন, “অধ্যাপকরা কেন বলেন যে প্রথমে এলিয়ের আগমন হওয়া আবশ্যক?”

“এলিয় আসিয়া গিয়াছেন,” যীশু বললেন, “লোকেরা তাঁহাকে চিনিল না।” যীশু এখানে, যোহন বাপ্তাইজকের কথা বললেন, যিনি ঠিক এলিয়র ভূমিকারই যোগ্য। যোহন যীশুর জন্য, যেমন এলিয় ইলীশায়ের জন্য পথ প্রস্তুত করেন।

কতই না শক্তিবর্দ্ধক এই দর্শনটি, যীশু ও তাঁর শিষ্যদের পক্ষে! এই দর্শনটি কিন্তু আসলে খ্রীষ্টের রাজ্যের গৌরবের পূর্ব প্রদর্শন। শিষ্যরা, এর ফলে চাক্ষুষ দেখলেন, “মনুষ্যপুত্রকে আপনার রাজ্যে আসিতে,” ঠিক যেমন এর এক সপ্তাহ আগে যীশু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। যীশুর মৃত্যুর পর, পিতর নিজেদের সম্বন্ধে লেখেন ‘যখন তাঁহার সঙ্গে পবিত্র পর্বতে ছিলাম, খ্রীষ্টের মহিমার চাক্ষুষ সাক্ষী হইয়াছিলাম।’

ফরীশীরা যীশুর কাছে দাবি করে তিনি যেন চিহ্নের মাধ্যমে প্রমাণ দেন যে শাস্ত্রের প্রতিজ্ঞাত ব্যক্তি ও ঈশ্বরের মনোনীত রাজা হলেন তিনি নিজে। তাদের সেই চিহ্ন দেখান হয়নি। অন্যদিকে, যীশুর অন্তরঙ্গ শিষ্যরা তাঁর রূপান্তরিত রূপ দেখার অনুমতি পায় যা হল রাজ্য সম্পর্কিত ভাববাণীর নিশ্চয়তা। এইভাবে, পিতর পরে লেখেন: “ভাববাণীর বাক্য দৃঢ়তর হইয়া আমাদের কাছে রহিয়াছে।” মথি ১৬:১৩, ২৮–১৭:১৩; মার্ক ৯:১-১৩; লূক ৯:২৭-৩৭; ২ পিতর ১:১৬-১৯.

▪ মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করার পূর্বে, কিভাবে কয়েকজন খ্রীষ্টকে আপন রাজ্যে আসতে দেখলেন?

▪ দর্শনে, মোশি ও এলিয়কে যীশুর সঙ্গে কোন্‌ বিষয়ে কথোপকথন করতে দেখা গেল?

▪ কেন এই দর্শনটি শিষ্যদের কাছে এত শক্তিদায়ক সাহায্যস্বরূপ ছিল?