সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গর্ব্বিত ও নম্র ব্যক্তিরা

গর্ব্বিত ও নম্র ব্যক্তিরা

অধ্যায় ৩৯

গর্ব্বিত ও নম্র ব্যক্তিরা

যোহন বাপ্তাইজকের সদ্‌গুণাবলী উল্লেখ করার পর, যীশু গর্ব্বিত ও চপল ব্যক্তিরা যারা তাঁর চারি ধারে ছিল, তাদের দিকে দৃষ্টি দেন। “এই কালের লোকেরা,” তিনি ঘোষণা করেন, “তাহারা এমন বালকদের তুল্য, যাহারা বাজারে বসিয়া আপনাদের সঙ্গীগণকে ডাকিয়া বলে, ‘আমরা তোমাদের নিকটে বাঁশী বাজাইলাম, তোমরা নাচিলে না; আমরা বিলাপ করিলাম, তোমরা বুক চাপড়াইলে না।’”

যীশু এই কথার দ্বারা কি বলতে চান? তিনি ব্যাখ্যা করেন: “কারণ যোহন আসিয়া ভোজন পান করেন নাই; তাহাতে লোকে বলে, ‘সে ভূতগ্রস্ত’; মনুষ্যপুত্র আসিয়া ভোজন পান করেন; তাহাতে লোকে বলে, ‘দেখ! একজন পেটুক ও মদ্যপায়ী, করগ্রাহী ও পাপীদের বন্ধু।’”

মানুষকে সন্তুষ্ট করা সবে নয়। কিছুই তাদের খুশি করে না। যোহন, একজন নাসরীয় রূপে কঠোর আত্মসংযমের সাথে জীবনের চাহিদাগুলি পরিহার করে, যেমন দূত ঘোষণা করেছিলেন যে “সে দ্রাক্ষারস কি সুরা কিছুই পান করিবে না।” আর তাও লোকে বলে যে সে ভূতগ্রস্ত। অন্যদিকে, যীশু অন্যান্য লোকের মত জীবন যাপন করেন, তিনি কঠোর জীবন যাপন করেননি, আর তাঁকে অমিতাচারী বলে দোষ দেওয়া হয়।

লোকদের সন্তুষ্ট করা কত কঠিন! তারা খেলার সাথীদের মত, যাদের কেহ কেহ নাচে না যখন তাদের সাথীরা বাঁশী বাজায় বা কাঁদে না যখন সাথীদের দুঃখ হয়। যাইহোক, যীশু বলেন: “প্রজ্ঞা নিজ কর্ম্মসমূহ দ্বারা নির্দোষ বলিয়া গণিত হয়।” হ্যাঁ, প্রমাণ—কাজ—প্রদর্শন করে যে যোহন ও যীশুর বিপক্ষে দোষারোপগুলি মিথ্যা।

যীশু ভর্ৎসনার জন্য বিশেষ করে কোরাসীন্‌, বৈৎসৈদা ও কফরনাহূমকে বেছে নেন, যে নগরগুলিতে তিনি তাঁর বেশীর ভাগ বড় বড় পরাআম কার্য্য করেছেন। তিনি যদি এই কাজ ফৈনীকিয়ার নগর সোর ও সীদোনে করতেন, যীশু বলেন, এই নগরগুলি চট পরে ও ছাই মেখে মন ফিরাত। কফরনাহূম, যা পরিচর্য্যা কালে তাঁর গৃহ ছিল, তাকে ভর্ৎসনা করে, যীশু ঘোষণা করেন: “তোমাদের দশা হইতে বরং সদোম দেশের দশা বিচার দিনে সহনীয় হইবে।”

যীশু এরপর লোকসাধারণ্যে তাঁর পিতার প্রশংসা করেন। তিনি তা করতে পরিচালিত হন কারণ ঈশ্বর তাঁর মহামূল্যবান আত্মিক সত্যগুলি জ্ঞানীদের নিকট থেকে দূরে রাখেন কিন্তু এইগুলি নম্রদের কাছে, ঠিক যেন শিশুদের কাছে, ব্যক্ত করেন।

শেষে, যীশু আবেদনপূর্বক আমন্ত্রণ করেন: “হে পরিশ্রান্ত ও ভারাআন্ত লোকসকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। আমার যোঁয়ালি আপনাদের উপর তুলিয়া লও, এবং আমার কাছে শিক্ষা কর, কেননা আমি মৃদুশীল ও নম্রচিত্ত, তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে। কারণ আমার যোঁয়ালি সহজ ও আমার ভার লঘু।”

যীশু কিভাবে এই নব শক্তিদান করেন? তিনি তা করেন ধর্ম্মীয় নেতারা যে রীতিনীতির দাসত্বে লোকদের বন্দী করে রেখেছে তার থেকে মুক্তি দিয়ে, যার অন্তর্ভুক্ত, উদাহরণস্বরূপ, বিশ্রামবারের বাধা নিষেধগুলি। তিনি আরও দেখান তাদের জন্য পথ যারা রাজনৈতিক চাপের মধ্যে আছে শাসকদের তাড়নায় এবং যারা পাপের ভারে বিবেকের যন্ত্রণায় কাতর। তিনি তাদের কাছে ব্যক্ত করেন যে কিভাবে তাদের পাপের ক্ষমা হতে পারে এবং কিভাবে তারা ঈশ্বরের সাথে মূল্যবান সম্পর্ক গড়তে পারে।

যে সহজ যোঁয়ালি যীশু প্রদান করেন তাহল ঈশ্বরের কাছে পূর্ণ উৎসর্গীকরণ, আর তার মাধ্যমে আমাদের প্রেমময়, করুণাময় স্বর্গীয় পিতার সেবা করতে পারা। আর হাল্কা ভার যা তিনি তাদের দেন তা হল জীবনের জন্য ঈশ্বরের চাহিদাগুলি পালন করা, তাঁর আজ্ঞাসকল যেগুলি বাইবেলে লিপিবদ্ধ করা আছে। আর তা পালন করা ভারস্বরূপ নয়। মথি ১১:১৬-৩০; লূক ১:১৫; ৭:৩১-৩৫; ১ যোহন ৫:৩.

▪ কিভাবে যীশুর কালের গর্বিত, চপল লোকেরা বাচ্চাদের মত?

▪ কেন যীশু পরিচালিত হন তাঁর স্বর্গীয় পিতাকে প্রশংসা করতে?

▪ কিভাবে লোকেরা ভারগ্রস্ত, আর যীশু তাদের কিভাবে মুক্তি দেন?