সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

জন্মান্ধের আরোগ্যকরণ

জন্মান্ধের আরোগ্যকরণ

অধ্যায় ৭০

জন্মান্ধের আরোগ্যকরণ

যিহূদীরা যখন যীশুকে পাথর মারার চেষ্টা করে, তবুও তিনি যিরূশালেম ত্যাগ করেন না। পরে, বিশ্রাম দিনে, তিনি ও তাঁর শিষ্যরা যখন নগরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এক জন্মান্ধ ব্যক্তিকে দেখতে পান। শিষ্যরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করেন: “রব্বি, কে পাপ করিয়াছিল, এ ব্যক্তি না ইহার পিতামাতা, যাহাতে এ অন্ধ হইয়া জন্মিয়াছে?”

কিছু রব্বিদের মত হয়ত, শিষ্যরাও বিশ্বাস করেন যে, এক ব্যক্তি তার মাতার গর্ভেও পাপ করিতে পারে। কিন্তু যীশুর উত্তর: “পাপ এ করিয়াছে, কিম্বা ইহার পিতামাতা করিয়াছে, তাহা নয়; কিন্তু এই ব্যক্তিতে ঈশ্বরের কার্য্য যেন প্রকাশিত হয়, তাই এমন হইয়াছে।” এই মানুষটির অন্ধত্ব কিন্তু তার বা তার পিতামাতার কৃত কোনও পাপের প্রতিফল স্বরূপ নয়। প্রথম মানুষ আদমের পাপের ফল হল সমস্ত মানুষের অসিদ্ধতা, আর তার জন্য এলো অপূর্ণতা, যেমন অন্ধ হয়ে জন্ম নেওয়া। মানুষের এই অপূর্ণতা যীশুর জন্য সুযোগ দিল ঈশ্বরের কার্য্যকে প্রকাশ করার।

যীশু এই কাজগুলি করার গুরুত্ব বোঝালেন। “যতক্ষণ দিনমান ততক্ষণ, যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহার কার্য্য আমাদিগকে করিতে হইবে,” তিনি বললেন। “রাত্রি আসিতেছে, তখন কেহ কার্য্য করিতে পারে না। আমি যখন জগতে আছি, তখন জগতের জ্যোতি রহিয়াছি।” শীঘ্রই যীশুর মৃত্যু তাঁকে কবরের অন্ধকারে ঠেলে দেবে যেখানে তিনি আর কিছুই করতে পারবেন না। এর আগে পর্যন্ত, তিনিই হলেন জগতে আলোক সম্পাতকারী।

এই কথাগুলি বলে, যীশু মাটিতে থুতু দিয়ে কাদা তৈরী করেন। তিনি ইহা অন্ধ ব্যক্তির চোখে লাগান ও বলেন: “শীলোহ সরোবরে যাও, ধুইয়া ফেল।” লোকটি কথা শোনে। আর যখন তা করে, সে দেখতে পায়! সে ফিরে আসার সময় কতই না আনন্দিত হয়, জীবনে প্রথমবার সে দেখতে পাচ্ছে!

প্রতিবেশী ও অন্যরা যারা তাকে জানত আশ্চর্য্য হয়। “একি সেই নয়, যে বসিয়া ভিক্ষা চাহিত?” তারা জিজ্ঞাসা করে। “সেই বটে,” কেউ কেউ উত্তর দিল। অন্যরা বিশ্বাস করতে পারছে না: “না, কিন্তু তাহারই মত।” তবুও লোকটি বলল, “আমি সেই।”

“তবে কি প্রকারে তোমার চক্ষু খুলিয়া গেল?” লোকেরা জানতে চায়।

“যীশু নামে সেই ব্যক্তি কাদা করিয়া আমার চক্ষুতে লেপন করিলেন, আর আমাকে বলিলেন, ‘শীলোহ সরোবরে যাও, ধুইয়া ফেল।’ তাহাতে আমি গিয়া ধুইয়া ফেলিতে দৃষ্টি পাইলাম।”

“সেই ব্যক্তি কোথায়?” তারা জিজ্ঞাসা করল।

“তাহা জানি না,” সে উত্তর দিল।

লোকেরা এবার সেই পূর্বের অন্ধ ব্যক্তিকে ধর্মীয় নেতাদের, ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল। তারাও তাকে জিজ্ঞাসা করতে থাকে কি ভাবে সে দৃষ্টি ফিরে পায়। ব্যক্তিটি ব্যাখ্যা করে, “তিনি আমার চক্ষুর উপর কাদা দিলেন, পরে আমি ধুইয়া ফেলিলাম, আর দেখিতে পাইতেছি।”

নিশ্চয়ই, ফরীশীদেরও ঐ আরোগ্য প্রাপ্ত ভিক্ষুকের সঙ্গে আনন্দ করা উচিৎ ছিল! পরিবর্তে, তারা যীশুকে দোষারোপ করে। “সে ব্যক্তি ঈশ্বর হইতে আইসে নাই,” তারা দাবি করে। কেন? “কেননা সে বিশ্রামবার পালন করে না।” তবুও অন্য ফরীশীরা চিন্তা করে: “যে ব্যক্তি পাপী, সে কি প্রকারে এমন সকল চিহ্ন কার্য্য করিতে পারে?” তার ফলে তাদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিল।

যার ফলে, তারা ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞাসা করে: “তুমি তাঁহার বিষয়ে কি বল, কারণ সে তোমারই চক্ষু খুলিয়া দিয়াছে?”

“তিনি ভাববাদী,” সে উত্তর দিল।

ফরীশীরা এটি বিশ্বাসে অস্বীকৃত হয়। তারা নিশ্চিৎ যে এই ব্যক্তি ও যীশুর মধ্যে কোনও গোপনীয় চুক্তি আছে লোককে বোকা বানানোর জন্য। সুতরাং সমাধানের কারণে তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেই ব্যক্তির পিতামাতাকে ডেকে পাঠায়। যোহন ৮:৫৯; ৯:১-১৮.

▪ সেই ব্যক্তির অন্ধত্বের জন্য কোন বিষয় দায়ী, এবং কোন বিষয় দায়ী নয়?

▪ এই রাত্রি কি যখন কোন মানুষ কাজ করতে পারে না?

▪ যখন লোকটি আরোগ্য লাভ করে, যারা তাকে চিনত তাদের প্রতিক্রিয়া কি হয়?

▪ ফরীশীরা লোকটির আরোগ্য লাভে কি ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ল?