সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

তারা তাঁকে বন্দী করতে অসমর্থ হয়

তারা তাঁকে বন্দী করতে অসমর্থ হয়

অধ্যায় ৬৭

তারা তাঁকে বন্দী করতে অসমর্থ হয়

যখন কুটীরবাস পর্ব চলছে, ধর্মীয় নেতারা যীশুকে বন্দী করার জন্য পদাতিকদের পাঠাল। তিনি লুকিয়ে থাকবার কোন প্রচেষ্টা করলেন না। বরং, প্রকাশ্যে শিক্ষাদান চালিয়ে গিয়ে, বললেন: “আমি এখন অল্পকাল তোমাদের সঙ্গে আছি, তারপর যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহার নিকটে যাইতেছি। তোমরা আমার অন্বেষণ করিবে, কিন্তু আমাকে পাইবে না; আর আমি যেখানে আছি, সেখানে তোমরা আসিতে পার না।”

যিহূদীরা বুঝতে পারল না, তাই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল: “এ কোথায় যাইবে যে, আমরা ইহাকে পাইতে পারিব না? এ কি গ্রীকদের মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন লোকেদের নিকটে যাইবে, ও গ্রীকদের উপদেশ দিবে? এ যে বলিল, ‘আমার অন্বেষণ করিবে, কিন্তু আমাকে পাইবে না; এবং আমি যেখানে আছি, সেখানে তোমরা আসিতে পার না,’ এ কি কথা?” যীশু অবশ্য, এখানে তাঁর আগত মৃত্যু ও স্বর্গীয় জীবনে পুনরুত্থানের বিষয় বলছেন, যেখানে তাঁর শত্রুরা তাঁর পিছনে ধাওয়া করতে পারবে না।

পর্বের সপ্তম ও শেষ দিন এসে পড়ল। পর্বের প্রতি দিন ভোরবেলা, এক পুরোহিত শীলোহ সরোবর থেকে জল এনে, বেদীর নীচে ঢেলে দিতেন, সেইজন্য এই জল বইতে থাকত। লোকেদের প্রতিদিনের এই রীতিটি মনে করিয়ে দিয়ে, যীশু উচ্চৈঃস্বরে বললেন: “কেহ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, তবে আমার কাছে আসিয়া পান করুক। যে আমাতে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রে যেমন বলে, ‘তাহার অন্তর হইতে জীবন্ত জলের নদী বহিবে।’”

আসলে, যীশু এখানে পবিত্র আত্মার বর্ষণের যে অপূর্ব প্রতিফল হবে তার বিষয়ে বলছেন। এর পরের বছর পঞ্চাশত্তমীর দিন এই পবিত্র আত্মার বর্ষণ হয়। সেখানে, জীবন্ত জলের নদী বইতে শুরু করল যখন ১২০ জন শিষ্য লোকেদের পরিচর্য্যা কাজ শুরু করলেন। সেই সময় পর্য্যন্ত পবিত্র আত্মা ছিল না, ইহার অর্থ যীশুর শিষ্যরা এর আগে পবিত্র আত্মায় অভিষিক্ত হয়ে স্বর্গীয় জীবনে আহূত হননি।

যীশুর শিক্ষার উত্তরে, কেউ বলতে শুরু করল: “ইনি সত্যই সেই ভাববাদী,” সুস্পষ্টরূপে ভাববাদীর অর্থ মোশির চাইতে মহান, যাঁর বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করা ছিল তিনি আসছেন। অন্যরা বলল: “ইনি সেই খ্রীষ্ট।” কেহ কেহ বাধা দিয়ে বলল: “খ্রীষ্ট কি গালীল হইতে আসিবেন? শাস্ত্রে কি বলে নাই, থ্রীষ্ট দায়ূদের বংশ হইতে, এবং দায়ূদ যেখানে ছিলেন, সেই বৈৎলেহম গ্রাম হইতে আসিবেন?”

সুতরাং জনতার মধ্যে এবার মতভেদ দেখা দিল। কেউ চাইল যীশু বন্দী হন, কিন্তু কেউই তাঁর গায়ে হাত দিতে চাইল না। যখন পদাতিকরা যীশুকে ছাড়াই ফেরৎ এলেন, যাজকেরা ও ফরীশীরা জিজ্ঞাসা করলেন: “তাঁহাকে আন নাই কেন?”

“কোনও মানুষে কখনও এরূপ কথা কহে নাই,” পদাতিকেরা উত্তর দেয়।

ক্রোধে, তখন ধর্মীয় নেতারা উপহাস শুরু করল, এর সঙ্গে ভ্রমপূর্ণ বর্ণনা, ও নানা-নামকরণ করল। তারা অবজ্ঞা সহ বললেন: “তোমরাও কি ভ্রান্ত হইলে? শাসকদের মধ্যে কিম্বা ফরীশীদের মধ্যে কেহ কি উহাতে বিশ্বাস করিয়াছেন? কিন্তু এই যে লোকেরা ব্যবস্থা জানে না, ইহারা শাপগ্রস্ত।”

এই সময়, নীকদীম, একজন ফরীশী ও যিহূদীদের এক শাসক (অর্থাৎ মহাসভার এক সদস্য), সাহস করে যীশুর পক্ষ নিয়ে কথা বললেন। আপনার হয়ত স্মরণে আছে আড়াই বছর আগে, নীকদীম রাত্রে যীশুর কাছে আসেন এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস আছে দেখান। এখন নীকদীম বলেন: “অগ্রে মানুষের নিজের কথা না শুনিয়া, ও সে কি করে, না জানিয়া, আমাদের ব্যবস্থা কি কাহারও বিচার করে?”

ফরীশীরা আগের থেকে আরও রেগে গেল যে তাদেরই এক সদস্য যীশুর পক্ষ নিচ্ছে। “তুমিও কি গালীলের লোক?” তারা শ্লেষাত্বক ভাবে উত্তর দিল। “অনুসন্ধান করে দেখ, গালীল হইতে কোন ভাববাদীর উদয় হয় না।”

যদিও শাস্ত্র সরাসরি বলে না যে গালীল হইতে এক ভাববাদী আসিবে, তবুও, তা সঙ্কেত দেয় যে খ্রীষ্ট সেখান হইতে আসিবেন, বলা আছে “এক মহা আলোক” এই এলাকায় দেখা দেবে। এ ছাড়া, যীশু বৈৎলেহমে জন্ম নেন, আর তিনি দায়ূদের এক বংশধর। যদিও ফরীশীরা এটি জানত, তারাই সবেত যীশুর সম্বন্ধে লোকের কাছে ভুল ধারণা ছড়াবার জন্য দায়ী ছিল। যোহন ৭:৩২-৫২; যিশাইয় ৯:১, ২; মথি ৪:১৩-১৭.

▪ পর্বের প্রত্যেকদিন সকালে কি করা হত, আর যীশু কিভাবে এই বিষয়টির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন?

▪ কেন পদাতিকেরা যীশুকে বন্দী করতে অসমর্থ হয়, এবং ধর্মীয় নেতারা কিভাবে উত্তর দিল?

▪ নীকদীম কে ছিলেন, যীশুর প্রতি তার মনোভাব কেমন ছিল? তার সহ-ফরীশীদের দ্বারা তিনি কি ব্যবহার পান?

▪ কোন প্রমাণ ছিল যার দ্বারা বোঝা যায় খ্রীষ্ট গালীল থেকে আসবেন?