সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পুনরুত্থানের আশা

পুনরুত্থানের আশা

অধ্যায় ৯০

পুনরুত্থানের আশা

যীশু অবশেষে বৈথনিয়ার শহরতলিতে এসে পৌঁছান, এই গ্রামটি যিরূশালেম থেকে তিন কিলোমিটার। লাসারের মৃত্যু ও কবর হবার পর অল্প কদিন কেটে গেছে। তার বোন মার্থা ও মরিয়ম এখনও শোকে কাতর, আর অনেকেই তাদের ঘরে এসে সান্ত্বনা দিচ্ছে।

তাদের শোকের সময়ে, কেউ এসে মার্থাকে খবর দিল যীশু আসিতেছেন। সে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে, হয়ত তার বোনকে না বলেই। যীশুর কাছে এসে মার্থা সেই কথাই বলে, যা সে ও তার বোন গত চার দিন বারবার বলেছে: “আপনি যদি এখানে থাকিতেন আমার ভাই মরিত না।”

যাইহোক, মার্থা এই ইঙ্গিত দিয়ে আশা প্রকাশ করে, যে যীশু হয়ত এখনও তার ভাই-এর জন্য কিছু করতে পারেন। “আমি জানি, আপনি ঈশ্বরের কাছে যে কিছু যাচ্ঞা করিবেন, তাহা ঈশ্বর আপনাকে দিবেন,” সে বলে।

“তোমার ভাই আবার উঠিবে,” যীশু প্রতিজ্ঞা করলেন।

মার্থা বোঝে যে যীশু ভবিষ্যতের পার্থিব পুনরুত্থানের বিষয় বলছেন, যার প্রতি অব্রাহাম, ও অন্যান্য ঈশ্বরের দাসেরা সাগ্রহে অপেক্ষা করেছিল। তাই সে উত্তর দিল: “আমি জানি, শেষ দিনে পুনরুত্থানে সে উঠিবে।”

তবুও, যীশু আসন্ন মুক্তি সম্বন্ধে আশা দিলেন, উত্তর দিয়ে: “আমিই পুনরুত্থান ও জীবন।” তিনি মার্থাকে মনে করিয়ে দিলেন ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যুর উপর শক্তি দিয়েছেন, এই বলে: “যে আমাতে বিশ্বাস করে, সে মরিলেও জীবিত থাকিবে; আর, যে কেহ জীবিত আছে, এবং আমাতে বিশ্বাস করে, সে কখনও মরিবে না।”

যীশু মার্থাকে এই ইঙ্গিত দিচ্ছেন না যে সেই সময়ের বিশ্বস্ত ব্যক্তিরা আর মরবে না। না, কিন্তু যে বিষয় তিনি এখানে বলছেন তা হল তাঁর প্রতি বিশ্বাস অনন্ত জীবনে পরিচালিত করতে পারে। এই প্রকার জীবন বেশীর ভাগ মানুষই উপভোগ করতে পারবে শেষ দিনে পুনরুত্থিত হয়ে। তবে যারা বিশ্বস্তভাবে পৃথিবীতে এই পরিস্থিতির শেষে বেঁচে থাকতে পারবে, তাদের জন্য যীশুর এই কথা আক্ষরিক অর্থে সত্যি। তারা সত্যই আর মরবে না! এই উল্লেখযোগ্য উক্তির পর যীশু মার্থাকে জিজ্ঞাসা করেন, “ইহা কি বিশ্বাস কর?”

“হ্যাঁ প্রভু,” সে উত্তর দিল। “আমি বিশ্বাস করিয়াছি যে, জগতে যাঁহার আগমন হইবে, আপনি সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র।”

মার্থা তাড়াতাড়ি চলে গেল, তার ভগিনী মরিয়মকে ডেকে গোপনে বলতে: “গুরু উপস্থিত, তোমাকে ডাকিতেছেন।” মরিয়ম উঠে তাঁহার নিকট গেল। যখন অন্যরা তাকে যেতে দেখল, তারাও অনুসরণ করে, ভাবে তিনি হয়ত কবরস্থানে যাচ্ছেন।

যীশুর কাছে এসে রোদন করে মরিয়ম তাঁর চরণে পড়ে। “প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকিতেন, আমার ভাই মরিত না,” সে বলে। যীশু যখন দেখলেন, সে কাঁদছে, ও তার সঙ্গে যারা আসছে তারাও কাঁদছে, তিনি আত্মাতে উত্তেজিত হয়ে উঠলেন। “তাহাকে কোথায় রাখিয়াছ?” তিনি বললেন।

“প্রভু, আসিয়া দেখুন,” তারা উত্তর দিল।

যীশুও কাঁদলেন, তাতে যিহূদীরা বলল: “দেখ, ইনি তাহাকে কেমন ভালবাসিতেন!”

কিছু জনের মনে পড়ে গেল, কয়েক মাস পূর্বের নিস্তারপর্বের সময়ে তিনি একজন যুবক ব্যক্তিকে সুস্থ করেন, যে জন্মান্ধ ছিল, তাই তারা জিজ্ঞাসা করে: “এই যে ব্যক্তি অন্ধের চক্ষু খুলিয়া দিয়াছেন, ইনি কি উহার মৃত্যুও নিবারণ করিতে পারিতেন না?” যোহন ৫:২১; ৬:৪০; ৯:১-৭; ১১:১৭-৩৭.

▪ কখন যীশু অবশেষে বৈথনিয়ার কাছে এলেন, আর তখন সেখানকার পরিস্থিতি কি ছিল?

▪ পুনরুত্থানে বিশ্বাস করার কোন ভিত্তি মার্থার ছিল?

▪ লাসারের মৃত্যুর দ্বারা যীশু কিভাবে প্রভাবিত হন?