সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রাঙ্গণে অস্বীকার করা

প্রাঙ্গণে অস্বীকার করা

অধ্যায় ১২০

প্রাঙ্গণে অস্বীকার করা

গেৎশিমানী বাগানে যীশুকে ছেড়ে অন্য প্রেরিতদের সাথে পালাবার সময়, পিতর ও যোহন তাদের ধাবনকালে থামেন। সবেত যখন যীশুকে হাননের গৃহে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন তাঁকে দেখতে পান। যখন হানন তাঁকে মহাযাজক কায়াফার কাছে পাঠায়, পিতর ও যোহন অনেক দূর থেকে তাঁর পিছু নেন, অপাতরূপে দুটির মধ্যে তারা বিভ্রান্ত ছিলেন, তাদের নিজেদের জীবনের চিন্তা এবং তাদের প্রভুর কি হবে সে বিষয়ে গভীর চিন্তা।

কায়াফার প্রশস্ত গৃহে পৌঁছে, যোহন প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন, কারণ মহাযাজক তাকে চেনে। কিন্তু, পিতর, বাইরে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকেন। শীঘ্র কিন্তু যোহন ফিরে আসেন ও দ্বার রক্ষকের সাথে কথা বলেন, যে একজন মেয়ে পরিচারিকা, আর পিতরকে ঢুকতে দেওয়া হয়।

এখন ঠাণ্ডা পড়েছে, আর গৃহের চাকরেরা ও মহাযাজকের অফিসাররা মিলে কাঠের আগুন প্তালিয়েছে। পিতর তাদের সাথে যোগ দেন নিজেকে উষ্ণ রাখতে, আর অপেক্ষা করেন যীশুর বিচারের ফলের জন্য। সেইখানে, সেই আগুনের উজ্জ্বল আলোয়, সেই দ্বার রক্ষী যে পিতরকে ঢুকতে দিয়েছিল তাকে ভালভাবে দেখতে পায়। “তুমিও, সেই গালীলীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে!” সে বলে ওঠে।

তাকে চেনা গেছে এই ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে, পিতর তাদের সকলের সাক্ষাতে অস্বীকার করেন তিনি কখনও যীশুকে চেনেন বলে। “তুমি যাহা বলিতেছ, তাহা আমি জানিও না, বুঝিও না,” তিনি বলেন।

তাহাতে, পিতর দ্বারের কাছে যান। সেখানে, আর একজন পরিচারিকা তাকে দেখতে পায় এবং সেস্থানের লোকেদের বলে: “এ ব্যক্তি সেই নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিল।” আরও একবার পিতর অস্বীকার করেন, দিব্য করে বলেন: “আমি সে ব্যক্তিকে চিনি না।”

পিতর সেই প্রাঙ্গণেই থাকেন, যতটা সবে নিজেকে অন্যদের দৃষ্টিগোচরে না আনার চেষ্টা করেন। আর হয়ত এই সময় তিনি বিচলিত হন যখন ভোরের অন্ধকারে কুকুড়ার ডাক শোনেন। এর মধ্যে, যীশুর বিচার এগিয়ে চলেছে, হয়ত প্রাঙ্গণের উপরের অংশের গৃহে তা চলছে। কোন সন্দেহ নেই নিচে অপেক্ষারত পিতর ও অন্যরা যে বিভিন্ন সাক্ষীরা যাওয়া আসা করছে সাক্ষ্য দেবার জন্য তাদের দেখতে পান।

প্রায় এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে যখন শেষবার তাকে কেউ যীশুর সাথী বলে চিহ্নিত করেছে। এবার অনেকে যারা তার কাছে দাঁড়িয়ে আছে তার কাছে এগিয়ে এসে বলে: “সত্যই তুমিও তাদের একজন, কেননা তোমার ভাষা তোমার পরিচয় দিতেছে।” এই দলের একজন মল্কের আত্মীয়, যার কান পিতর কেটে ফেলেছিলেন। “আমি কি উদ্যানে উহার সঙ্গে তোমাকে দেখি নাই?” সে বলে।

“আমি সেই ব্যক্তিকে চিনি না!” পিতর দৃঢ়তার সাথে বলেন। (NW) তিনি তাদের বিশ্বাস জন্মাবার জন্য দিব্য দিয়ে এবং অভিশাপ তার উপরে অসুক, যদি তিনি সত্য কথা না বলেন, এই মন্তব্য করেন।

পিতর এই তৃতীয়বার অস্বীকার করার সাথে সাথে, কুকুড়া ডেকে ওঠে। আর সেই মুহূর্তে যীশু, যিনি প্রাঙ্গণের উপরের ভাগে যে বারান্দা আছে সেখানে বেরিয়ে এসেছেন, ফিরে তার দিকে তাকান। আর সঙ্গে সঙ্গে, পিতরের মনে পড়ে মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে উপরের কুঠরিতে যীশু তাকে কি বলেছিলেন: “এই রাত্রিতে, কুকুড়া দুইবার ডাকিবার পূর্বে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করিবে।” তার পাপের বোঝায় ভারাআন্ত হয়ে, পিতর বাইরে গিয়ে তিক্ত মনে রোদন করেন।

কি করে এমন ঘটতে পারে? তার আত্মিক শক্তি সম্বন্ধে এত প্রত্যয় থাকা সত্ত্বেও, কি করে পিতর ঘনঘন তার প্রভুকে এক সাথে তিনবার অস্বীকার করতে পারেন? নিঃসন্দেহে পরিস্থিতি পিতরকে অজ্ঞতায় ফেলে দেয়। সত্যকে বিকৃত করা হয়েছে, যীশুকে একজন ঘৃণ্য অপরাধী হিসাবে প্রদর্শন করা হচ্ছে। যা সঠিক তাকে ভুল প্রমাণ করা হচ্ছে, এবং নির্দোষকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। পরিস্থিতির চাপ এত যে, পিতর তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। হঠাৎ তার বিশ্বস্ততার উপযুক্ত চেতনা উলট পালট হয়ে গেছে; দুঃখজনক ভাবে মানুষের ভয় তাকে অবশ করে দিয়েছে। এমন যেন কখনও আমাদের জন্য না ঘটে! মথি ২৬:৫৭, ৫৮, ৬৯-৭৫; মার্ক ১৪:৩০, ৫৩, ৫৪, ৬৬-৭২; লূক ২২:৫৪-৬২; যোহন ১৮:১৫-১৮, ২৫-২৭.

▪ পিতর ও যোহন কি করে মহাযাজকের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন?

▪ পিতর ও যোহন যখন প্রাঙ্গণে আছেন, তখন গৃহের মধ্যে কি হচ্ছে?

▪ কতবার কুকুড়া ডাকে, এবং কতবার পিতর অস্বীকার করেন যে তিনি খ্রীষ্টকে জানেন না?

▪ পিতর দিব্য দেন এবং অভিশাপ দেন তার অর্থ কি?

▪ কি পিতরকে অস্বীকার করতে পরিচালিত করে যে তিনি যীশুকে জানেন?