সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিবাহ ভোজের দৃষ্টান্ত

বিবাহ ভোজের দৃষ্টান্ত

অধ্যায় ১০৭

বিবাহ ভোজের দৃষ্টান্ত

দুইটি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে, যীশু প্রধান যাজক ও অধ্যাপকদের মুখোস অনাবৃত করেন, এবং তারা তাঁকে হত্যা করতে চায়। যীশুর কিন্তু তাদের সম্বন্ধে বলা শেষ হয়নি। তিনি তাদের আরও একটি দৃষ্টান্ত বলেন, এই জানিয়ে:

“স্বর্গ রাজ্য এমন একজন রাজার তুল্য, যিনি আপন পুত্রের বিবাহভোজের আয়োজন করিলেন। সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদিগকে ডাকিবার জন্য আপন দাসদিগকে প্রেরণ করিলেন; কিন্তু তাহারা আসিতে চাহিল না।”

যিহোবা ঈশ্বর হচ্ছেন সেই রাজা যিনি তাঁর পুত্র, যীশু খ্রীষ্টের জন্য বিবাহভোজ প্রস্তুত করেন। অবশেষে, কন্যা সেই ১৪৪,০০০ অভিষিক্ত অনুগামীরা যীশুর সাথে স্বর্গে একত্রিত হবেন। রাজার প্রজারা হচ্ছে ইস্রায়েলের লোকেরা, যাদের আইন চুক্তির অধীনে আনা হয় ১৫১৩ সা.শ.পূ. এবং যারা সুযোগ পায় “যাজকদের এক রাজ্য” হবার জন্য। তাই, সেই ক্ষেত্রে, তাদের প্রথমে নিমন্ত্রণ দেওয়া হয় বিবাহ ভোজে।

যাইহোক, নিমন্ত্রিতদের এই প্রথম আহ্বান ২৯ সা.শ. শরৎকাল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি, যখন যীশু ও তাঁর শিষ্যরা (যারা রাজার দাস) রাজ্যের প্রচার শুরু করেন। কিন্তু স্বাভাবিক ইস্রায়েলীয়রা যারা দাসদের দ্বারা আহ্বান পায় ২৯ সা.শ. থেকে ৩৩ সা.শ. পর্যন্ত তারা আসতে অস্বীকার করে। সেইজন্য ঈশ্বর সেই আমন্ত্রিত জাতিকে আর একটি সুযোগ দেন, যেমন যীশু ব্যাখ্যা করেন:

“আবার অন্য দাসদিগকে প্রেরণ করিলেন, বলিলেন, ‘নিমন্ত্রিত লোকদিগকে বল: “দেখ! আমার ভোজ প্রস্তুত করিয়াছি, আমার বৃষাদি হৃষ্টপুষ্ট পশু সকল মারা হইয়াছে, সকলই প্রস্তুত। তোমরা বিবাহ ভোজে আইস।”’” এই দ্বিতীয় ও শেষ আহ্বান আমন্ত্রিতদের দেওয়া আরম্ভ হয় ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমীতে যখন পবিত্র আত্মা বর্ষণ করা হয় যীশুর শিষ্যদের উপর। এই আহ্বান চলে ৩৬ সা.শ. পর্যন্ত।

বেশীর ভাগ ইস্রায়েলীয়রা, অবশ্য এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। “তাহারা অবহেলা করিয়া,” যীশু বলেন, “কেহ আপন ক্ষেত্রে, কেহ বা আপন ব্যাপারে চলিয়া গেল; অবশিষ্ট সকলে তাঁহার দাসদিগকে ধরিয়া অপমান করিল ও বধ করিল।” “তাহাতে,” যীশু বলে চলেন: “রাজা ক্রুদ্ধ হইলেন, এবং সৈন্য সামন্ত পাঠাইয়া সেই হত্যাকারীদের বিনষ্ট করিলেন, ও তাদের নগর পোড়াইয়া দিলেন।” এই ঘটনা ঘটে ৭০ সা.শ., যখন রোমীয়রা যিরূশালেমকে ধূলিসাৎ করে, ও সেই হত্যাকারীদের বধ করে।

এই সময়ের মাঝে কি হয় যীশু তা ব্যাখ্যা করেন: “পরে তিনি [রাজা] আপন দাসদিগকে কহিলেন, ‘বিবাহ ভোজ ত প্রস্তুত, কিন্তু ঐ নিমন্ত্রিত লোকেরা যোগ্য ছিল না। অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়া যত লোকের দেখা পাও, সকলকে বিবাহ ভোজে ডাকিয়া আন।’” দাসেরা তাহাই করিল, এবং তাহাতে “বিবাহবাটী অতিথিগণে পরিপূর্ণ হইল।”

নিমন্ত্রিতদের শহরের বাইরের রাস্তার ধার থেকে আহ্বান করা আরম্ভ হয় ৩৬ সা.শ. থেকে। রোমীয় সেনাধ্যক্ষ কর্ণীলিয় এবং তার পরিবার প্রথম সমবেত অছিন্নত্বক যিহূদী নয় এমন ব্যক্তি। এই ব্যক্তিদের সমাবেশ তাদের স্থান পূর্ণ করার জন্য যারা প্রথম আহ্বানে সাড়া দেয়নি তাদের পরিবর্তে, এই আহ্বান বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত চলেছে।

এই বিংশ শতাব্দীতে বিবাহবাটী পরিপূর্ণ হয়। যীশু এরপর কি ঘটে, বর্ণনা করে বলেন: “পরে রাজা অতিথিদিগকে দেখিবার জন্য ভিতরে আসিয়া এমন এক ব্যক্তিকে দেখিতে পাইলেন, যাহার বিবাহ-বস্ত্র ছিল না। তিনি তাহাকে কহিলেন, ‘বন্ধু, তুমি কেমন করিয়া বিবাহ-বস্ত্র বিনা এখানে প্রবেশ করিলে?’ সে নিরুত্তর রহিল। তখন রাজা পরিচারকদিগকে কহিলেন, ‘উহার হাত পা বাঁধিয়া উহাকে বাহিরের অন্ধকারে ফেলিয়া দেও। সেখানে রোদন ও দন্ত ঘর্ষণ হইবে।’”

যে ব্যক্তির বিবাহ-বস্ত্র ছিল না সে চিত্রিত করে খ্রীষ্টিয় জগতের নকল খ্রীষ্টানদের। ঈশ্বর এদের কখনও সঠিক চিহ্নধারী আত্মিক ইস্রায়েল বলে স্বীকার করেননি। ঈশ্বর তাদের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে অভিষিক্ত করেননি রাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসাবে। তাই তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হয়েছে যেখানে তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।

যীশু তাঁর দৃষ্টান্ত এই বলে শেষ করেন: “বাস্তবিক অনেকে আহূত, কিন্তু অল্পই মনোনীত।” হ্যাঁ, ইস্রায়েল জাতির থেকে অনেককে ডাকা হয়েছে খ্রীষ্টের বধূশ্রেণী হবার জন্য, কিন্তু খুব অল্প স্বাভাবিক ইস্রায়েলীয়রা মনোনীত হয়। বেশীর ভাগ ১৪৪,০০০ অতিথি যারা স্বর্গীয় পুরস্কার পাবে তারা ইস্রায়েলীয় নয়। মথি ২২:১-১৪; যাত্রাপুস্তক ১৯:১-৬; প্রকাশিত বাক্য ১৪:১-৩.

▪ কাদের প্রথমে বিবাহ ভোজে ডাকা হয়, আর এই আমন্ত্রণ কখন দেওয়া হয়?

▪ যাদের আমন্ত্রণ করা হয় তাদের কখন প্রথম আহ্বান দেওয়া হয়, এবং কারা সেই দাস যাদের মাধ্যমে বলা হয়?

▪ দ্বিতীয় আহ্বান কখন দেওয়া হয়, এরপর কাদের আমন্ত্রণ করা হয়?

▪ যে ব্যক্তি বিবাহ-বস্ত্রবিহীন সে কাদের চিত্রিত করে?

▪ কারা সেই অনেকে যারা আহূত ও কারা অল্প যাদের মনোনীত করা হয়েছে?