যখন লাসারকে পুনরুত্থিত করা হয়
অধ্যায় ৯১
যখন লাসারকে পুনরুত্থিত করা হয়
যীশু, অন্যান্যদের যারা তাঁর সাথে ছিল তাদের নিয়ে লাসারের কবরের কাছে পৌঁছান। আসলে, ইহা একটি গুহা যার দ্বারে একটি পাথর রাখা ছিল। “পাথরখানা সরাইয়া ফেল,” যীশু বলেন।
মার্থা বাধা দেয়, যীশু কি করবেন তা এখনও না বুঝে। “প্রভু,” সে বলে, “এখন উহাতে দুর্গন্ধ হইয়াছে, কেননা আজ চারিদিন।”
কিন্তু যীশু প্রশ্ন করেন: “আমি কি তোমাকে বলি নাই যে, যদি বিশ্বাস কর, তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখিতে পাইবে?”
সেই কারণে পাথর সরানো হল। তারপর যীশু তাঁর চোখ উপরের দিকে তুলে প্রার্থনা করেন: “পিতঃ, তোমার ধন্যবাদ করি যে, তুমি আমার কথা শুনিয়াছ। আর আমি জানিতাম, তুমি সর্ব্বদা আমার কথা শুনিয়া থাক; কিন্তু এই যে সকল লোক চারিদিকে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে, ইহাদের নিমিত্তে এই কথা কহিলাম, যেন ইহারা বিশ্বাস করে তুমি আমাকে প্রেরণ করিয়াছ।” যীশু জনসাধারণ্যে প্রার্থনা করেন যাতে লোক জানতে পারে যে তিনি এখন যা সম্পাদন করতে চলেছেন তা ঈশ্বরের কাছ থেকে শক্তি পেয়ে করছেন। এরপর তিনি উচ্চরবে ডাকিয়া বলেন: “লাসার, বাহিরে আইস!”
আর, লাসার বেরিয়ে আসে। তার হাত, পা ও মুখ কবর বস্ত্রে বাঁধা। “ইহাকে খুলিয়া দেও ও যাইতে দেও,” যীশু বলেন।
এই আশ্চর্য্য কার্য্য দেখে, অনেক ব্যক্তিরা যারা মরিয়ম ও মার্থাকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিলেন যীশুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেন। অন্যরা, অবশ্য, ফরীশীদের নিকট গেল এবং কি ঘটেছে তা বর্ণনা করল। তখন তারা ও প্রধান যাজকগণ মিলে সভার আয়োজন করল, যিহূদী উচ্চ আদালত মহাসভার।
মহাসভার অন্তর্ভুক্ত সদস্যরা হচ্ছে বর্ত্তমান মহাযাজক কায়াফা ও ফরীশী এবং সদ্দূকীগণ, মুখ্য যাজকগণ ও পূর্বের মহাযাজকগণ। তারা বিলাপ করে: “আমরা কি করি, এ ব্যক্তি ত অনেক চিহ্ন কার্য্য করিতেছে? আমরা যদি ইহাকে এইরূপ চলিতে দিই, তবে সকলে ইহাতে বিশ্বাস করিবে, আর রোমীয়রা আসিয়া আমাদের স্থান ও জাতি উভয়ই কাড়িয়া লইবে।”
যদিও ধর্মীয় নেতারা স্বীকার করে যে যীশু “অনেক চিহ্ন কার্য্য করিতেছে,” যে বিষয় তারা চিন্তিত তা হল তাদের নিজেদের পদ ও ক্ষমতা সম্বন্ধে। লাসারকে জীবিত করা বিশেষ করে সদ্দূকীদের জন্য এক আঘাত স্বরূপ, কারণ তারা পুনরুত্থানে বিশ্বাস করে না।
কায়াফা, যে সবেত একজন সদ্দূকী এখন কথা বলে, এই বলে: “তোমরা কিছুই বুঝ না, আর বিবেচনাও কর না যে, তোমাদের পক্ষে এটি ভাল, যেন প্রজাগণের জন্য এক ব্যক্তি মরে, আর সমস্ত জাতি বিনষ্ট না হয়।”
ঈশ্বর কায়াফাকে প্রভাবিত করেন এই কথা বলতে, কারণ পরে প্রেরিত যোহন লেখেন: “এই কথা যে তিনি [কায়াফা] আপনা হইতে বলিলেন, তাহা নয়।” কায়াফা যা বলতে চান তা হল যে যীশুকে হত্যা করা দরকার যাতে তিনি তাদের পদের ক্ষমতা ও প্রভাব কমিয়ে দিতে না পারেন। কিন্তু, যোহনের কথা অনুসারে, ‘কায়াফা ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে যীশু কেবল সেই জাতির জন্য মরিবেন তা নয়, কিন্তু যেন ঈশ্বরের সন্তানেরা একত্রিত হয়।’ আর, সত্যই, ঈশ্বরের উদ্দেশ্য তাই যেন তাঁর পুত্র মুক্তির মূল্যরূপে সকলের জন্য মরেন।
কায়াফা এবার সফল হন মহাসভাকে প্রভাবিত করতে যাতে তারা পরিকনো করে যীশুকে হত্যা করার জন্য। কিন্তু যীশু, এই পরিকনোর কথা হয়ত নিকোদিমের কাছ থেকে জানতে পারেন, যিনি মহাসভার সদস্য ছিলেন, ও তাঁর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলেন, তাই তিনি সেই স্থান ত্যাগ করেন। যোহন ১১:৩৮-৫৪.
▪ যীশু কেন জনসাধারণ্যে প্রার্থনা করেন লাসারকে পুনরুত্থিত করার পূর্বে?
▪ যারা এই পুনরুত্থান দেখে তারা কিরূপ সাড়া দেয়?
▪ কি মহাসভার সদস্যদের মন্দতা ব্যক্ত করে?
▪ কায়াফার উদ্দেশ্য কি ছিল, কিন্তু ঈশ্বর তাকে কি ভাববাণী করতে পরিচালিত করেন?