সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যায়ীরের গৃহ ত্যাগ করে পুনরায় নাসরৎ পরিদর্শন

যায়ীরের গৃহ ত্যাগ করে পুনরায় নাসরৎ পরিদর্শন

অধ্যায় ৪৮

যায়ীরের গৃহ ত্যাগ করে পুনরায় নাসরৎ পরিদর্শন

এক খুব ব্যস্ত দিন যীশু কাটাচ্ছেন—তিনি দিকাপলি থেকে সমুদ্র পথে এসেছেন, সেই রক্তস্রাব-গ্রস্তা স্ত্রীলোকটিকে সুস্থ করেছেন, ও যায়ীরের কন্যাকে পুনরুত্থিত করেছেন। কিন্তু দিন শেষ হয়নি। যীশু যেই যায়ীরের গৃহ ত্যাগ করেন, দুই জন অন্ধ ব্যক্তি তাঁর পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসে, চিৎকার করতে করতে: “হে দায়ূদ সন্তান, আমাদের প্রতি দয়া করুন।”

যীশুকে “দায়ূদ সন্তান,” বলে সম্বোধন করে, এই ব্যক্তিরা তাদের বিশ্বাস দেখাচ্ছে যে যীশু দায়ূদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী, তাই তিনি হচ্ছেন প্রতিজ্ঞাত মশীহ। যীশু, কিন্তু, তাদের এই আবেদন যেন উপেক্ষা করে গেলেন, হয়ত তাদের ধৈর্য্য শক্তি কতটা তা দেখার জন্য। কিন্তু এই ব্যক্তিরা ছেড়ে দেয়নি। তারা যীশু যেখানে থাকেন সেখান অবধি যীশুর পিছু করেন, আর যখন তিনি গৃহে প্রবেশ করেন, তারা তাঁর পশ্চাৎ ভিতরে যায়।

সেখানে যীশু জিজ্ঞাসা করেন: “তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, আমি ইহা করিতে পারি?”

“হ্যাঁ প্রভু,” তারা দৃঢ়তার সাথে উত্তর দেয়।

তাই, তাদের চক্ষু স্পর্শ করে যীশু বলেন: “তোমাদের বিশ্বাস অনুসারে তোমাদের প্রতি হউক।” হঠাৎ তারা দেখতে আরম্ভ করে! যীশু তখন তাদের দৃঢ়ভাবে বলে দেন: “দেখিও যেন কেহ ইহা জানিতে না পারে।” কিন্তু আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে, তারা যীশুর আজ্ঞা উপেক্ষা করে সমস্ত দেশে সেই কীর্তি প্রকাশ করল।

এই ব্যক্তিরা চলে যাবার পর, লোকেরা এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসে যার কথা বলার ক্ষমতা মন্দ আত্মা হরণ করেছে। যীশু সেই ভূতকে বার করে দেন, আর সেই ব্যক্তি তখন কথা বলতে আরম্ভ করে। সেই জনতা এই আশ্চর্য্য কার্যে চমৎকৃত হয়ে বলে: “ইস্রায়েলের মধ্যে এমন কখনও দেখা যায় নাই।”

ফরীশীরাও সেখানে উপস্থিত আছে। তারা এই আশ্চর্য্য কাজ অস্বীকার করতে পারছে না, কিন্তু তাদের মন্দ অবিশ্বাস হেতু তারা দোষারোপ করে যে যীশুর এই ক্ষমতাযুক্ত কার্যগুলির উৎস হচ্ছে: “ভূতগণের অধিপতি দ্বারা সে ভূত ছাড়ায়।”

এই ঘটনাগুলির কিছু পরে, যীশু তাঁর গৃহনগরী নাসরৎ ফিরে যান, এবার তাঁর সাথে তাঁর শিষ্যরা ছিলেন। প্রায় বৎসর খানেক পূর্বে, তিনি সেখানে গিয়েছিলেন ও সমাজ গৃহে শিক্ষা দিয়েছিলেন। যদিও লোকেরা প্রথমে তাঁর প্রীতিকর কথা শুনে চমৎকৃত হয়, তারা পরে তাঁর শিক্ষার প্রতি বিরূপ মনোভাব দেখায় ও তাঁকে হত্যা করতে চায়। এখন, করুণা দেখিয়ে, যীশু তাঁর আগের প্রতিবেশীদের সাহায্য করার আর একটি চেষ্টা করছেন।

যদিও অন্য জায়গায় অনেক লোক যীশুর নিকট জড়ো হয়, এখানে কিন্তু সেরকম হয় না। তাই, বিশ্রামবারে, তিনি সমাজ গৃহে যান শিক্ষা দিতে। বেশীরভাগ লোক যারা তার কথা শুনে তারা আশ্চর্য্য হয়। “ইহার এমন জ্ঞান ও এমন পরাআম-কার্য্য সকল কোথা হইতে হইল?” তারা জিজ্ঞাসা করে। “এ কি সূত্রধরের পুত্র নয়? ইহার মাতার নাম কি মরিয়ম নয়, এবং যাকোব, যোষেফ, শিমোন ও যিহূদা কি ইহার ভ্রাতা নয়? আর ইহার ভগিনীরা কি সকলে আমাদের এখানে নাই? তবে এ কোথা হইতে এই সকল পাইল?”

‘যীশু আমাদের মত এক স্থানীয় ব্যক্তি,’ তারা চিন্তা করে। ‘আমরা তাঁকে বড় হতে দেখেছি, আর তাঁর পরিবারকেও জানি। কি করে সে মশীহ হতে পারে?’ তাই সব প্রমাণ পাওয়া সত্বেও—তাঁর প্রজ্ঞা ও আশ্চর্য্য কার্য সত্বেও—তারা তাঁকে উপেক্ষা করে। ঘনিষ্ঠ পরিচিতি থাকার জন্যই, এমনকি তাঁর নিজের আত্মীয়রা তাঁর উপর বিদ্ধ পায়, যা যীশুকে এই শেষ মন্তব্যে পরিচালিত করে: “আপনার দেশ ও কুল ছাড়া আর কোথাও ভাববাদী অনাদৃত হন না।”

সত্যই, যীশু তাদের বিশ্বাসের অভাব দেখে আশ্চর্য্য হন। সুতরাং, তিনি সেখানে কোন আশ্চর্য্য কার্য করেন না কেবল কিছু অসুস্থ ব্যক্তির উপর হস্তার্পণ ও তাদের সুস্থ করা ছাড়া। মথি ৯:২৭-৩৪; ১৩:৫৪-৫৮; মার্ক ৬:১-৬; যিশাইয় ৯:৭.

▪ যীশুকে “দায়ূদ সন্তান” বলে অভিহিত করে, ঐ অন্ধ ব্যক্তিরা কিসে বিশ্বাস করে বলে দেখায়?

▪ যীশু যে আশ্চর্য্য কার্য করেন তার কি ব্যাখ্যার উপর ফরীশীরা অটল থাকে?

▪ নাসরতে লোকেদের সাহায্য করার চেষ্টা যীশুর পক্ষে করুণার নিদর্শন কেন?

▪ যীশু নাসরতে কি ধরনের অভ্যর্থনা পান, এবং কেন?