সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যীশুর অন্তিম নিস্তারপর্ব এসে গেছে

যীশুর অন্তিম নিস্তারপর্ব এসে গেছে

অধ্যায় ১১২

যীশুর অন্তিম নিস্তারপর্ব এসে গেছে

মঙ্গলবার, নিশান ১১, যখন শেষ হতে চলেছে, যীশু জৈতুন পর্বতে তাঁর প্রেরিতদের শিক্ষা দেওয়া শেষ করেন। কি ব্যস্ত, শ্রমসাপেক্ষ না এই দিন গেছে! এখন, হয়ত রাত্রি যাপনের জন্য বৈথনিয়াতে ফেরার সময়, তিনি তাঁর প্রেরিতদের বলেন: “তোমরা জান, দুই দিন পরে নিস্তারপর্ব আসিতেছে, আর মনুষ্যপুত্র যাতনাদণ্ডে বিদ্ধ হইবার জন্য সমর্পিত হইতেছেন।” (NW)

তার পরের দিন, নিশান ১২, বুধবার, যীশু তাঁর প্রেরিতদের নিয়ে একান্তে সময় কাটান। তার আগের দিন, তিনি ধর্মীয় নেতাদের, জনসাধারণ্যে ভর্ৎসনা করেন, আর তিনি বুঝতে পারেন যে তারা তাঁকে বধ করার চেষ্টা করছে। সেই কারণে বুধবার তিনি প্রকাশ্যে দেখা দেন না, কারণ তিনি চান না যে পরের দিন বিকালে তাঁর প্রেরিতদের সাথে নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপনের ক্ষেত্রে কিছু বিদ্ধ ঘটে।

এরমধ্যে, প্রধান যাজকগণ এবং প্রাচীনেরা, কায়াফা মহাযাজকের প্রাঙ্গনে একত্রিত হয়। যীশু যে গতদিনে তাদের আক্রমণ করেছিলেন তার প্তালায়, তারা ছলে তাঁকে ধরে বধ করার পরিকনো করছিল। কিন্তু তারা বলতে থাকে: “পর্বের সময় নয়, পাছে লোকেদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে।” তারা লোকেদের ভয় করে, যাদের অনুগ্রহ যীশুর সঙ্গে আছে।

যখন ধর্মীয় নেতারা দুষ্টতায় যীশুকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে, তাদের কাছে এক আগন্তুক আসে। তারা আশ্চর্য্য হয় যে, সে যীশুর একজন প্রেরিত, ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা, যার মনে শয়তান তার প্রভুর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার হীন বাসনাকে বদ্ধমূল করেছে! তারা কি খুশি হয় যখন যিহূদা জিজ্ঞাসা করে: “আমাকে কি দিতে চান, বলুন, আমি তাঁহাকে আপনাদের হস্তে সমর্পণ করিব?” তারা আনন্দের সাথে তাকে ৩০ রৌপ্য মুদ্রা দিতে রাজী হল, যা মোশির আইন অনুযায়ী এক দাসের মূল্য। সেই সময় থেকে, যিহূদা ভাল সুযোগ খুঁজতে থাকে যে কখন জনতা তাঁর সাথে থাকবে না আর সে বিশ্বাসঘাতকতা করে যীশুকে তাদের হাতে তুলে দেবে।

বুধবার সূর্য্য ডুবে যাবার সাথে নিশান ১৩ তারিখ শুরু হয়। যীশু যিরীহো থেকে শুআবার রাতে আসেন, তাই এই রাত্রি হল ষষ্ঠ ও শেষ রাত্রি যা তিনি বৈথনিয়াতে কাটান। তার পরের দিন, বৃহস্পতিবার, নিস্তারপর্বের শেষ প্রস্তুতি করার প্রয়োজন, যা শুরু হবে সূর্য্যাস্তের সাথে। এই সময় নিস্তারপর্বের মেষকে বলি দিয়ে তার মাংস ঝলসাতে হবে। কোথায় তারা এই ভোজন উদ্‌যাপন করবেন, আর কে এসব প্রস্তুত করবে?

যীশু এই বিষয়ে কোন বিশদ বর্ণনা দেননি, হয়ত এইজন্য যাতে যিহূদা তা জানতে পেরে প্রধান যাজকদের খবর না দেয় যাতে তারা নিস্তারপর্ব চলাকালীন যীশুকে গ্রেফতার করতে না পারে। কিন্তু এখন, বৃহস্পতিবার অপরাহ্নের প্রথমদিকে হয়ত, যীশু পিতর ও যোহনকে বৈথনিয়া থেকে পাঠালেন, এই বলে: “তোমরা গিয়া আমাদের জন্য নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তুত কর।”

“কোথায় প্রস্তুত করিব, আপনার ইচ্ছা কি?” তারা বললেন।

“তোমরা নগরে প্রবেশ করিলে,” যীশু ব্যাখ্যা করেন, “এক ব্যক্তি তোমাদের সম্মুখে পড়িবে, যে ব্যক্তি এক কলশী জল লইয়া আসিতেছে। তোমরা তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ, যে বাটীতে সে প্রবেশ করিবে, তথায় যাইবে। আর তোমরা বাটীর কর্ত্তাকে বলিবে, ‘গুরু আপনাকে বলিতেছেন: “যেখানে আমি আমার শিষ্যগণের সাথে নিস্তারপর্বের ভোজ ভোজন করিতে পারি, সেই অতিথিশালা কোথায়?”’ তাহাতে সে তোমাদিগকে সাজানো একটি উপরের কুঠরী দেখাইয়া দিবে; সেই স্থানে প্রস্তুত করিও।”

কোন সন্দেহ নেই সেই গৃহকর্ত্তা যীশুর কোন শিষ্য যে হয়ত আশা করছিল যে যীশু এই বিশেষ উপলক্ষে তার গৃহ ব্যবহার করবেন। যাইহোক, যখন পিতর ও যোহন যিরূশালেম উপস্থিত হন, যীশু যা বলেছিলেন তারা সব ঘটতে দেখেন। তাই তারা দেখেন যে মেষ প্রস্তুত হয়েছে কিনা এবং ১৩ জন, যীশু ও তাঁর ১২ জন প্রেরিতের জন্য আরও অন্য সব নিস্তারপর্বের প্রয়োজনীয় জিনিষগুলি আছে কিনা। মথি ২৬:১-৫, ১৪-১৯; মার্ক ১৪:১, ২, ১০-১৬; লূক ২২:১-১৩; যাত্রাপুস্তক ২১:৩২.

▪ যীশু বুধবার দিন কি করেন, এবং কেন?

▪ মহাযাজকের গৃহে কি সভা হয়, এবং কি উদ্দেশ্যে যিহূদা ধর্মীয় নেতাদের পরিদর্শন করে?

▪ কাদের যীশু বৃহস্পতিবার দিন যিরূশালেমে পাঠান, এবং কি জন্য?

▪ যাদের পাঠান হয় তারা কি দেখতে পান যা যীশুর অলৌকিক ক্ষমতা আছে তা আবার প্রমাণ করে?