সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যীশু ফরীশীদের ভর্ৎসনা করেন

যীশু ফরীশীদের ভর্ৎসনা করেন

অধ্যায় ৪২

যীশু ফরীশীদের ভর্ৎসনা করেন

যদি শয়তানের ক্ষমতায় তিনি ভূতদের বার করেন, যীশু তর্ক করেন, তাহলে শয়তান তার নিজের বিপক্ষে বিভক্ত হয়েছে। “হয় গাছকে ভাল বল, এবং তাহার ফলকেও ভাল বল,” তিনি বলে চলেন, “নয় গাছকে মন্দ বল, এবং তাহার ফলকেও মন্দ বল; কেননা ফল দ্বারাই গাছ চেনা যায়।”

ইহা মূর্খতার অভিযোগ যে ভূতদের বার করে দেবার ক্ষেত্রে ভাল ফল যীশুর শয়তানকে সেবা করার জন্য হয়েছে। কারণ, ফল যদি ভাল হয়, তাহলে গাছ খারাপ হতে পারে না। অন্যদিকে, যীশুর বিরুদ্ধে ফরীশীদের অযৌক্তিক দোষারোপ ও ভিত্তিহীন বিপক্ষতার মন্দ কাজ প্রমাণ দিচ্ছে যে তারা নিজেরাই মন্দ। “হে সর্পের বংশেরা,” যীশু বলেন, “তোমরা মন্দ হইয়া কেমন করিয়া ভাল কথা কহিতে পার? কেননা হৃদয় হইতে যাহা ছাপিয়া উঠে, মুখ তাহাই বলে।”

যেহেতু আমাদের কথা আমাদের হৃদয়ের দশা ব্যক্ত করে, আমরা যা বলি তার দ্বারা বিচারিত হতে পারি। “আমি তোমাদিগকে বলিতেছি,” যীশু বলেন, “মনুষ্যেরা যত অনর্থক কথা বলে, বিচারদিনে সেই সকলের হিসাব দিতে হইবে; কারণ তোমার বাক্য দ্বারাই তুমি দোষী বলিয়া গণিত হইবে।”

যীশুর এই সব জোরালো কাজগুলি দেখার পরও, অধ্যাপকরা ও ফরীশীরা বলে: “হে গুরু, আমরা আপনার কাছে কোন চিহ্ন দেখিতে ইচ্ছা করি।” যদিও এই ব্যক্তিরা যারা যিরূশালেম থেকে এসেছিল তারা ব্যক্তিগতভাবে তাঁর আশ্চর্য্য কাজসকল দেখেনি, কিন্তু সন্দেহ নেই যে অনেক প্রত্যক্ষদর্শী ছিল যাদের সাক্ষ্য উড়িয়ে দেবার নয়। সেই কারণে যীশু যিহূদী নেতাদের বলেন: “এই কালের দুষ্ট ও ব্যভিচারী লোকে চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনা ভাববাদীর চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন ইহাদিগকে দেওয়া যাইবে না।”

তিনি কি বলতে চান তা ব্যাখ্যা করে, যীশু বলে চলেন: “কারণ যোনা যেমন তিন দিবারাত্র বৃহৎ মৎস্যের উদরে ছিলেন, তেমনি মনুষ্যপুত্রও তিন দিবারাত্র পৃথিবীর গর্ভে থাকিবেন।” মাছ তাকে গিলে নেবার পর, যোনা যেন পুনরুত্থিত হয়েছেন সেইভাবে বেরিয়ে আসেন, তাই যীশু পূর্বেই বলছেন যে তিনি মারা যাবেন ও তৃতীয় দিনে আবার জীবিত হবেন। তবুও, যিহূদী নেতারা, যীশু পুনরুত্থিত হবার পরও, “যোনার চিহ্ন” অস্বীকার করে।

যীশু বলেন যে নীনবীর লোকেরা যারা যোনার প্রচার দ্বারা মন পরিবর্তন করেছিল তারা বিচার দিনে উঠে যিহূদীরা, যারা যীশুকে উপেক্ষা করেছে, তাদের ভর্ৎসনা করবে। সেইভাবে, তিনি শিবার রাণীর সাথে তুলনা দেখান, যিনি শলোমনের প্রজ্ঞার কথা শুনতে পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন ও যা দেখে এবং শুনে তিনি চমৎকৃত হয়েছিলেন। “আর দেখ!” যীশু নির্দেশ করেন, “শলোমন হইতে মহান্‌ এক ব্যক্তি এখানে আছেন।”

যীশু তারপর এক উপমা দেন একজন ব্যক্তি সম্বন্ধে যার মধ্যে থেকে অশুচি আত্মা বেরিয়ে আসে। সেই ব্যক্তি, কিন্তু, তার খালি মন ভাল জিনিষ দিয়ে পূর্ণ করে না, তাই সে সাতটি আরও বেশী অশূচি আত্মা দ্বারা পরিপূর্ণ হয়। “এই দুষ্ট বংশের প্রতিও তদ্রূপ করা যাইবে,” যীশু বলেন। ইস্রায়েল জাতিকে পরিষ্কার করা হয়েছিল এবং তারা সংশোধন অভিজ্ঞতা করেছিল—যেমন মন্দ আত্মা থেকে ক্ষণিকের মুক্তি। কিন্তু সেই জাতির ঈশ্বরের ভাববাদীদের উপেক্ষা করা, যার শেষে তারা খ্রীষ্টেরও বিরোধীতা করে, প্রদর্শন করে তাদের মন্দ অবস্থা যা প্রথমের থেকেও আরও খারাপ।

যীশু যখন এই কথা বলছেন, তখন তাঁর মা ও ভাইরা এসে ভিড়ের এক ধারে দাঁড়ায়। তাই কেউ বলে: “দেখুন! আপনার মাতা ও ভ্রাতারা আপনার সহিত কথা কহিবার চেষ্টায় বাহিরে দাঁড়াইয়া আছেন।”

“আমার মাতা কে, এবং আমার ভ্রাতারাই বা কাহারা?” যীশু জিজ্ঞাসা করেন। তাঁর শিষ্যদের দিকে হাত বাড়িয়ে, তিনি বলেন: “দেখ! আমার মাতা ও আমার ভ্রাতারা! কেননা যে কেহ আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার ভ্রাতা ও ভগিনী ও মাতা।” এর মাধ্যমে যীশু দেখান যে তাঁর আত্মীয়দের সাথে সম্বন্ধ যত নিকটের হোক না কেন, কিন্তু তাঁর শিষ্যদের সাথে তাঁর সম্বন্ধ আরো নিকটতম। মথি ১২:৩৩-৫০; মার্ক ৩:৩১-৩৫; লূক ৮:১৯-২১.

▪ ফরীশীরা কিভাবে “গাছ” ও তার “ফল” উভয়কে উত্তম তৈরী করা থেকে ব্যর্থ হয়?

▪ “যোনার চিহ্ন” কি, ও কিভাবে পরে এই চিহ্নকে প্রত্যাখ্যান করা হয়?

▪ প্রথম শতাব্দীর ইস্রায়েলীয় জাতি কিভাবে সেই ব্যক্তির তুল্য যার মধ্যে থেকে অশুচি আত্মা বেরিয়ে আসে?

▪ যীশু কিভাবে তাঁর শিষ্যদের সাথে তাঁর যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ আছে তার উপর জোর দেন?