সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

শেষ আবির্ভাবগুলি, এবং ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমী

শেষ আবির্ভাবগুলি, এবং ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমী

অধ্যায় ১৩১

শেষ আবির্ভাবগুলি, এবং ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমী

কোন এক সময় যীশু বন্দোবস্ত করেন যাতে তাঁর ১১ জন প্রেরিত তাঁর সাথে একত্রিত হন গালীলের এক পাহাড়ে। অন্য শিষ্যদেরও এই একত্র হওয়া সম্বন্ধে সবেত খবর দেওয়া হয়, আর মোট ৫০০ জনের অধিক সেখানে উপস্থিত হন। এই সমাবেশ কি সুন্দর এক সম্মেলনে পরিণত হয় যখন যীশু তাদের সম্মুখে আবির্ভূত হন ও শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন!

যে বিষয়গুলি তিনি বুঝিয়ে দেন সেই বিরাট সমাবেশকে, তার মধ্যে ছিল ঈশ্বর তাঁকে স্বর্গে ও পৃথিবীতে যে কর্ত্তৃত্ব দান করেছেন সেই বিষয়টিও। “তোমরা গিয়া,” তিনি পরামর্শ দেন, “সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর, আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও।”

এই বিষয়ে চিন্তা করুন! পুরুষ, স্ত্রীলোক, এবং ছেলেমেয়েরা সকলে এই কাজ করার, যা হল শিষ্যকরণের কাজ, তাতে অংশ নিতে পারেন। বিরোধীরা তাদের প্রচার ও শিক্ষার কাজ বন্ধ করে দিতে চেষ্টা করবে, কিন্তু যীশু তাদের সান্ত্বনা দেন: “দেখ! আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।” যীশু তাঁর অনুগামীদের সাথে থাকবেন সেই পবিত্র আত্মার মাধ্যমে, যা সাহায্য করবে তাদের পরিচর্য্যা কাজ সম্পাদন করতে।

সর্বমোট, যীশু যে জীবিত তা তাঁর শিষ্যদের দেখান ৪০ দিন ধরে তাঁর পুনরুত্থানের পর। এই আবির্ভাব হবার সময়গুলিতে তিনি তাদের উপদেশ দেন ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে, এবং জোর দেন যে শিষ্য হিসাবে তাদের দায়িত্বগুলি কি। এইরূপ এক উপলক্ষে তিনি তাঁর অর্ধ ভ্রাতা যাকোবের কাছে আবির্ভূত হন ও একসময় যিনি অবিশ্বাসী ছিলেন তাকে বিশ্বাস করান যে তিনিই খ্রীষ্ট।

শিষ্যরা যখন গালীলে আছেন, যীশু স্পষ্টতই তাদের আদেশ দেন যিরূশালেমে ফিরে যেতে। আর সেখানে যখন তাদের সাথে মিলিত হন, তিনি তাদের বলেন: “তোমরা যিরূশালেম হইতে প্রস্থান করিও না, কিন্তু পিতার অঙ্গীকৃত যে দানের কথা আমার কাছে শুনিয়াছ, তাহার অপেক্ষায় থাক। কেননা যোহন জলে বাপ্তাইজিত করিতেন বটে, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হইবে বেশীদিন পরে নয়।”

পরে যীশু তাঁর প্রেরিতদের সাথে আবার মিলিত হন এবং বৈথনিয়া পর্যন্ত নগরের বাইরে নিয়ে আসেন, যা জৈতুন পর্বতের পূর্বদিকের ঢালুর উপরে অবস্থিত। তিনি শীঘ্র তাদের ছেড়ে স্বর্গে চলে যাবেন সে সম্বন্ধে সব বলা সত্ত্বেও, আশ্চর্যের বিষয় যে তবুও তারা বিশ্বাস করে তাঁর রাজ্য পৃথিবীতে স্থাপিত হবে। তাই তারা প্রশ্ন করেন: “প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইস্রায়েলের হাতে রাজ্য ফিরাইয়া আনিবেন?”

পুনরায় তাদের ভুল ধারণা সংশোধনের চেষ্টা না করে, যীশু কেবল উত্তর দেন: “যে সকল সময় কি কাল পিতা নিজ কর্ত্তৃত্বের অধীন রাখিয়াছেন, তাহা তোমাদের জানিবার বিষয় নয়।” তারপর, যে কাজ তাদের করা খুব দরকার তার উপর আবার জোর দিয়ে, তিনি বলেন: “পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তিপ্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা যিরূশালেমে, সমুদয় যিহূদীয়া ও শমরিয়া দেশে এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।”

তারা তখনও দেখছেন, যীশু স্বর্গে উঠতে থাকেন, আর একখানি মেঘ তাঁকে তাদের দৃষ্টির আড়াল করে। তাঁর মনুষ্য দেহ ছেড়ে দেবার পর তিনি স্বর্গে যান এক আত্মিক ব্যক্তিরূপে। সেই ১১ জন আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন, আর তখন ২ জন শুক্লবস্ত্র পরিহিত ব্যক্তি তাদের পাশে আবির্ভূত হন। এই জড়দেহে রূপান্তরিত দূতেরা জিজ্ঞাসা করেন: “হে গালীলীয় লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে দৃষ্টি করিয়া দাঁড়াইয়া রহিয়াছ কেন? এই যে যীশু তোমাদের নিকট হইতে স্বর্গে ঊর্দ্ধে নীত হইলেন, উহাঁকে যেরূপে স্বর্গে গমন করিতে দেখিলে, সেইরূপে উনি আগমন করিবেন।”

যে ভাবে একটু আগে যীশু পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তাতে জনতার কোন তূর্যনিনাদ ছিল না, কেবল তাঁর বিশ্বস্ত অনুগামীরা তাঁকে লক্ষ্য করেন। তাই তিনি পুনরায় আসবেন ঠিক সেই রূপে—জনতার কোন তূর্যনিনাদ থাকবে না কেবল তাঁর বিশ্বস্ত দাসরা বুঝতে পারবেন যে তিনি পুনরায় এসেছেন ও তাঁর রাজ্যের ক্ষমতায় উপস্থিতি শুরু হয়েছে।

শিষ্যরা জৈতুন পর্বত থেকে নেমে, কিদ্রোন উপত্যকা পার হয়ে, পুনরায় যিরূশালেমে প্রবেশ করেন। তারা যীশুর আজ্ঞার বাধ্য হয়ে সেখানে থাকেন। দশদিন পরে, যিহূদীদের ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমীর পর্বের দিনে, যখন প্রায় ১২০ জন শিষ্য যিরূশালেমে উপরের কুঠুরীতে উপস্থিত হন, হঠাৎ আকাশ থেকে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দ এল ও গৃহের সর্বত্র ব্যাপ্ত হল। অগ্নিবৎ জিহ্বা তাদের দৃষ্টিগোচর হল, ও প্রত্যেক জনের উপর বসল, আর সব শিষ্যরা বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে আরম্ভ করল। যীশু যে পবিত্র আত্মা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন ইহা হল তারই সেচন! মথি ২৮:১৬-২০; লূক ২৪:৪৯-৫২; ১ করিন্থীয় ১৫:৫-৭; প্রেরিত ১:৩-১৫; ২:১-৪.

▪ গালীল পর্বতে যীশু চলে যাবার পূর্বে কাদের নির্দেশ দেন, আর এই নির্দেশগুলি কি?

▪ যীশু তাঁর শিষ্যদের জন্য কি সান্ত্বনা দেন, এবং কিভাবে তিনি তাদের সাথে থাকবেন?

▪ তাঁর পুনরুত্থানের পরে কতদিন পর্যন্ত যীশু তাঁর শিষ্যদের কাছে আবির্ভূত হন, আর তিনি তাদের কি শিক্ষা দেন?

▪ কোন ব্যক্তির কাছে যীশু আবির্ভূত হন যিনি শিষ্য ছিলেন না যীশুর মৃত্যুর পূর্বে?

▪ দুইটি কি অন্তিম সভা যীশু তাঁর শিষ্যদের সাথে করেন, আর এই সময়গুলিতে কি হয়?

▪ কিভাবে যীশু একই ভাবে ফিরবেন যেভাবে তিনি গেছেন?

▪ ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমীর দিন কি হয়?