স্মরণার্থক ভোজ
অধ্যায় ১১৪
স্মরণার্থক ভোজ
যীশু তাঁর প্রেরিতদের পা ধুয়ে দেবার পর, তিনি গীতসংহিতা ৪১:৯ পদের কথা উবতি করেন, এই বলে: “যে আমার রুটি খায়, সে আমার বিরুদ্ধে পাদমূল উঠাইয়াছে।” এরপর তিনি আত্মায় উদ্বিগ্ন হন, ও ব্যাখ্যা করেন: “তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে সমর্পণ করিবে।”
প্রেরিতেরা এই কথায় দুঃখ পায় ও এক এক জন করে যীশুকে বলতে থাকে: “প্রভু, সে কি আমি?” এমন কি ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদাও যোগ দেয় জিজ্ঞাসা করায়। যোহন যে যীশুর পাশে মেজেতে ছিল, যীশুর বক্ষঃস্থলের দিকে পশ্চাতে হেলে বলে: “প্রভু, সে কে?”
“এই বার জনের মধ্যে একজন, যে আমার সহিত ভোজন পাত্রে হাত ডুবাইতেছে,” যীশু উত্তর করেন। “কেননা, মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে যেমন লিখিত আছে, তেমনি তিনি যাইতেছেন; কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যাহার দ্বারা মনুষ্যপুত্র সমর্পিত হন! সেই মনুষ্যের জন্ম না হইলে তাহার পক্ষে ভালই ছিল।” এরপর, শয়তান আবার যিহূদার মধ্যে প্রবেশ করে, মন্দ হয়ে গিয়ে তার হৃদয়ে যে ফাঁক সৃষ্টি হয়েছে, তার সুযোগ নিয়ে। উপযুক্তভাবে পরে সেই রাত্রে, যীশু যিহূদাকে “বিনাশের সন্তান” বলেন।
যীশু এবার যিহূদাকে বলেন: “যাহা করিতেছ, শীঘ্র কর।” যীশু কি বলতে চাইছেন অন্য প্রেরিতরা বুঝলেন না। কেউ কেউ মনে করলেন যেহেতু যিহূদার কাছে টাকার থলি থাকে, যীশু তাকে বলছেন: “পর্বের নিমিত্ত যাহা অবশ্যক কিনিয়া আন,” বা সে গিয়ে দরিদ্রদের যেন কিছু দেয়।
যিহূদা চলে যাবার পর, যীশু এক সম্পূর্ণ নূতন উদ্যাপনের বা স্মরণার্থের পরিচয় করিয়ে দেন, তাঁর বিশ্বস্ত প্রেরিতদের। তিনি রুটি নেন, ধন্যবাদপূর্বক তা ভাঙ্গেন, এবং তাদের দিয়ে, বলেন: “লও, ভোজন কর।” তিনি ব্যাখ্যা করেন: “ইহার অর্থ আমার শরীর যাহা তোমাদের নিমিত্ত দেওয়া যায়। ইহা আমার স্মরণার্থে করিও।” (NW)
যখন প্রত্যেকের রুটি খাওয়া শেষ হয়, যীশু দ্রাক্ষারসের পাত্র নেন, স্পষ্টত নিস্তারপর্বের চতুর্থ কাপ্। তিনি এর জন্য ধন্যবাদ ও প্রার্থনা করেন, ও তাদের তা দেন, ও তার থেকে পান করতে বলেন, এবং জানান: “এই পানপাত্রের অর্থ আমার রক্তের নূতন নিয়ম, যে রক্ত তোমাদের নিমিত্ত পাতিত হয়।” (NW)
প্রকৃতপক্ষে, ইহা যীশুর মৃত্যুর স্মরণার্থক। প্রত্যেক বৎসর নিশান ১৪ তারিখে ইহা করতে হবে, যেমন যীশু বলেন, তাঁর স্মরণার্থে। ইহা সকলকে স্মরণ করাবে যে তাঁর স্বর্গীয় পিতা ও যীশু মানবজাতিকে মৃত্যু থেকে মুক্তি দেবার জন্য কি করেছেন। যে যিহূদীরা খ্রীষ্টের অনুগামী হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই উদ্যাপন নিস্তারপর্বের স্থান নেবে।
নূতন চুক্তি, যা যীশুর পাতিত রক্তের মাধ্যমে চালু হয়েছে, পুরাতন নিয়ম চুক্তির বদল করেছে। যীশু খ্রীষ্টের মধ্যস্ততায় দুই দলের মধ্যে তা সাধিত হয়েছে—একদিকে যিহোবা ঈশ্বর এবং অন্যদিকে আত্মায় জাত ১৪৪,০০০ খ্রীষ্টানেরা। পাপের ক্ষমা ছাড়াও এই চুক্তি এক স্বর্গীয় রাজা ও যাজকের জাতি তৈরীর অনুমোদন দেয়। মথি ২৬:২১-২৯; মার্ক ১৪:১৮-২৫; লূক ২২:১৯-২৩; যোহন ১৩:১৮-৩০; ১৭:১২; ১ করিন্থীয় ৫:৭.
▪ বাইবেলের কোন ভাববাণী যীশু উবতি করেন যখন এক সহচর সম্বন্ধে বলেন, আর কিভাবে তিনি তা প্রয়োগ করেন?
▪ প্রেরিতরা কেন দুঃখিত হয়, এবং প্রত্যেকে কি জিজ্ঞাসা করে?
▪ যীশু যিহূদাকে কি করতে বলেন, এর অর্থ আপর প্রেরিতরা কি করেন?
▪ যিহূদা চলে যাবার পর যীশু কোন উদ্যাপনের পরিচয় করান এবং ইহা কি উদ্দেশ্য সম্পাদন করে?
▪ নূতন নিয়মের দুই দল কারা ও এই চুক্তি কি সম্পাদন করে?