“বুঝিতে পারিল না”
“বুঝিতে পারিল না”
উদাসীনভাবে বিভিন্ন সাবধানবাণী উপেক্ষা করার ফলে দুর্দশা আসতে পারে।
১৯৭৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার ডারউইন শহর ছুটির দিনের উৎসবগুলোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল আর তখন এক সাইক্লোন এগিয়ে আসার সাইরেন বেজে ওঠে। কিন্তু ডারউইন প্রায় ৩০ বছর ধরে কোনো সাইক্লোন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তা হলে এখন কেন? বেশির ভাগ অধিবাসী সেই পর্যন্ত বিপদকে প্রকৃতই গুরুতর হিসেবে দেখেনি যতক্ষণ পর্যন্ত না দমকা হাওয়া বাড়ির ছাদগুলোকে বিদীর্ণ করতে ও দেয়ালগুলোকে উপড়ে ফেলতে শুরু করেছিল, যেখানে লোকেরা ভিড় করেছিল। পরদিন সকালে, শহরটা এক ধ্বংসপ্রাপ্ত জনশূন্য স্থানে পরিণত হয়েছিল।
কলম্বিয়ায় ১৯৮৫ সালে এক আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরিত হয়। তুষার ও বরফ গলা জল কাদার প্রবাহ ঘটিয়েছিল, যা আরমেরো শহরের ২০,০০০রেরও বেশি অধিবাসীদের সমাহিত করেছিল। সেখানে কি আগে থেকে সাবধানবাণী দেওয়া হয়নি? পর্বতটা কয়েক মাস ধরে কাঁপছিল। কিন্তু, আগ্নেয়গিরির কাছে থাকতে অভ্যস্ত হওয়ায়, আরমেরোর বেশির ভাগ লোক উদাসীন ছিল। সরকারি কর্মকর্তারা সাবধানবাণী পেয়েছিল যে, এক আকস্মিক বিপর্যয় শীঘ্রই আঘাত করবে কিন্তু তারা সাধারণ লোকেদের নামমাত্র সাবধান করেছিল। জনগণকে আশ্বস্ত করার জন্য বেতার ঘোষণাগুলো করা হয়েছিল। গির্জা থেকে মাইকের মাধ্যমে লোকেদের শান্ত থাকার জন্য জোরালোভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সন্ধ্যাবেলায় প্রচণ্ড দুটো বিস্ফোরণ ঘটেছিল। আপনি কি আপনার ধনসম্পত্তি ছেড়ে পালিয়ে যেতেন? শুধু অল্প কিছু লোক দেরি হয়ে যাওয়ার আগে তা করেছিল।
প্রায়ই ভূবিজ্ঞানীরা কোথায় ভূমিকম্প হবে, সেই বিষয়ে বেশ যথাযথভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করে। কিন্তু তারা খুব কমই একেবারে সঠিকভাবে বলতে পারে যে, সেগুলো ঠিক কখন আঘাত করবে। ১৯৯৯ সালে সারা বিশ্ব জুড়ে ভূমিকম্পগুলো প্রায় ২০,০০০ জীবন কেড়ে নিয়েছিল। যারা মারা গিয়েছে তাদের অনেকেই ভেবেছিল যে তাদের প্রতি এটা কখনোই ঘটবে না।
স্বয়ং ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা সতর্কবাণীর প্রতি আপনি কীভাবে সাড়া দেন?
বাইবেল অনেক আগে থেকে স্পষ্টভাবে সেই ঘটনাগুলো সম্বন্ধে বর্ণনা করেছে, যা শেষ কালকে চিহ্নিত করে। সেই বিষয়গুলোর সঙ্গে যুক্ত করে, এটা আমাদের ‘নোহের সময়ের’ কথা বিবেচনা করতে জোরালো পরামর্শ দেয়। “জলপ্লাবনের মথি ২৪:৩৭-৩৯) আপনি কি সেই সতর্কবাণীতে মনোযোগ দিতেন? আপনি কি এখন তা করছেন?
সেই পূর্ব্ববর্ত্তী কালে,” লোকেরা জীবনের রীতিগত কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত ছিল, যদিও নিঃসন্দেহে তারা চারিদিকে ছেয়ে যাওয়া দৌরাত্ম্য সম্বন্ধেও চিন্তিত ছিল। ঈশ্বর তাঁর দাস নোহের মাধ্যমে যে-সতর্কবাণী দিয়েছিলেন, সেটা তারা “বুঝিতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল।” (আপনি যদি অব্রাহামের এক ভাইপো, লোটের সময়ে ডেড সীর নিকটে অবস্থিত সদোমে বাস করতেন, তা হলে কী? সদোমের গ্রামাঞ্চল পরমদেশের মতো ছিল। শহরটা ছিল সমৃদ্ধশালী। লোকেরা ছিল নিশ্চিন্ত। লোটের সময়ে, “লোকে ভোজন পান, ক্রয় বিক্রয়, বৃক্ষ রোপণ ও গৃহ নির্ম্মাণ করিত।” যে-সমাজে তারা বাস করত, সেটাও চরম অনৈতিকায় ভরা ছিল। লোট যখন মন্দ অভ্যাসগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, তখন আপনি কি সেই সতর্কবাণীতে মনোযোগ দিতেন? তিনি যখন আপনাকে বলতেন যে, ঈশ্বর সদোম শহর ধ্বংস করবেন বলে স্থির করেছেন, তখন আপনি কি তা শুনতেন? অথবা আপনি কি এটাকে একটা রসিকতা বলে উড়িয়ে দিতেন, যেমন লোটের ভাবী জামাতারা করেছিল। আপনি কি পালাতে শুরু করতেন কিন্তু পরে লোটের স্ত্রীর মতো পিছু ফিরে তাকাতেন? যদিও অন্যরা সতর্কবাণীকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি, তবুও লোট যেদিন সদোম থেকে বের হয়ে এসেছিলেন সেদিন, “আকাশ হইতে অগ্নি ও গন্ধক বর্ষিয়া সকলকে বিনষ্ট করিল।”—লূক ১৭:২৮, ২৯.
আমাদের দিনে বেশির ভাগ লোক বোঝে না। কিন্তু আমাদের জেগে থাকতে উৎসাহিত করার জন্য এই উদাহরণগুলো ঈশ্বরের বাক্যে আমাদের জন্য এক সতর্কবাণী হিসেবে সংরক্ষিত হয়েছে!
[২২ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]
সত্যিই কি বিশ্বব্যাপী এক বন্যা হয়েছিল?
অনেক সমালোচকেরা বলে, না। কিন্তু বাইবেল বলে, হ্যাঁ।
যিশু খ্রিস্ট নিজে এই সম্বন্ধে বলেছিলেন আর এটা যখন ঘটেছিল তখন তিনি জীবিত ছিলেন, স্বর্গ থেকে তা দেখেছিলেন।
[২৩ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]
সদোম ও ঘমোরা কি সত্যিই ধ্বংস হয়েছিল?
প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা এই ঘটনার সত্যতাকে প্রমাণ করে।
জগতের ইতিহাস এই বিষয়ে উল্লেখ করে।
যিশু খ্রিস্ট এই ঘটনাকে সত্য বলে প্রমাণ করেছিলেন এবং যা ঘটেছিল, সেই বিষয়ে বাইবেলের ১৪টা ভিন্ন ভিন্ন বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।