ইয়োব ৩৪:১-৩৭

৩৪  ইলীহূ বলে চললেন:  ২  “হে বিজ্ঞ লোকেরা, আমার প্রতি মনোযোগ দিন!আপনারা, যারা এত কিছু জানেন, আমার কথা শুনুন!  ৩  যেভাবে জিভ খাবারের স্বাদ গ্রহণ করে,সেভাবে কানও কথা পরীক্ষা করে।  ৪  আসুন, আমরা পরীক্ষা করে দেখি যে, কোনটা সঠিক,একসঙ্গে নির্ধারণ করে দেখি, কোনটা ভালো।  ৫  কারণ ইয়োব বলেছেন, ‘আমি নির্দোষ,তবুও ঈশ্বর আমার প্রতি ন্যায়বিচার করেননি।  ৬  আমার বিচার কেমন হওয়া উচিত, সেই বিষয়ে আমি কি মিথ্যা কথা বলব? আমি কোনো অপরাধ করিনি, তবুও আমার ক্ষত সেরে উঠছে না।’  ৭  ইয়োবের মতো আর কে রয়েছে,যে জলের মতোই উপহাস পান করে?  ৮  তিনি অন্যায়কারীদের সঙ্গে থাকেন,মন্দ লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করেন।  ৯  তাই তিনি বলেছেন, ‘মানুষ ঈশ্বরকে খুশি করার যত প্রচেষ্টাই করুক না কেন,কোনো লাভ নেই।’ ১০  তাই আপনারা, যাদের বোঝার ক্ষমতা রয়েছে, আমার কথা শুনুন: এমনটা হতেই পারে না যে, সত্য ঈশ্বর মন্দ কাজ করবেন,সর্বশক্তিমান অন্যায় করবেন! ১১  ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে তার কাজ অনুসারে ফল দেন,যে যে-পথে চলে, তাকে সেটার ফল ভোগ করতে দেন। ১২  নিশ্চিতভাবেই ঈশ্বর মন্দ কাজ করেন না,সর্বশক্তিমান অবিচার করেন না। ১৩  কে ঈশ্বরকে পৃথিবীর দায়িত্ব দিয়েছে? কে তাঁকে পুরো বিশ্বের উপর নিযুক্ত করেছে? ১৪  তিনি যদি মানুষের উপর মনোযোগ দিয়েতাদের জীবনীশক্তি ও নিঃশ্বাস কেড়ে নেন, ১৫  তা হলে তারা সবাই একসঙ্গে বিনষ্ট হয়ে যাবেএবং ধুলোতে মিশে যাবে। ১৬  তাই, আপনাদের যদি বোঝার ক্ষমতা থাকে, তা হলে আমার প্রতি মনোযোগ দিন,আমি যা বলতে চলেছি, সেটা ভালো করে শুনুন। ১৭  যিনি ন্যায়বিচার ঘৃণা করেন, তাঁর কি শাসন করার অধিকার রয়েছে? কিংবা যিনি শক্তিশালী এবং সঠিক কাজ করেন, আপনি কি তাঁকে দোষী বলে গণ্য করবেন? ১৮  আপনি কি রাজাকে বলবেন, ‘তুমি অপদার্থ’? উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বলবেন, ‘তোমরা মন্দ’? ১৯  ঈশ্বর অধ্যক্ষদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না,তিনি ধনী ও গরিবের মধ্যে ভেদাভেদ করেন নাকারণ তারা সবাই তাঁরই হাতের কাজ। ২০  তারা হয়তো মাঝরাতে হঠাৎই মারা যায়,প্রচণ্ড কাঁপতে কাঁপতে তারা মারা যায়,শক্তিশালী লোকেরাও বিনষ্ট হয়ে যায়, তবে মানুষের হাতে নয়। ২১  মানুষের পথের উপর ঈশ্বরের দৃষ্টি রয়েছে,তিনি তার প্রতিটা পদক্ষেপ লক্ষ করেন। ২২  এমন কোনো অন্ধকার বা ঘন ছায়া নেই,যেখানে অন্যায়কারীরা নিজেদের লুকোতে পারে। ২৩  কোনো মানুষের বিচার করার জন্যঈশ্বরকে আগে থেকে সময় নির্ধারণ করতে হয় না। ২৪  তিনি শক্তিশালী লোকদের শক্তি বিনষ্ট করে দেনএবং তাদের জায়গায় অন্যদের বসান,তাঁর তদন্ত করার প্রয়োজন হয় না। ২৫  কারণ তারা কী করে, তা তিনি জানেন। তিনি রাতারাতি তাদের পরাজিত করেন আর তারা বিনষ্ট হয়ে যায়। ২৬  ঈশ্বর সবার সামনেতাদের মন্দ কাজের জন্য তাদের আঘাত করেন। ২৭  কারণ তারা তাঁকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দিয়েছে,তাঁর দেখানো পথকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ২৮  তারা গরিব লোকদের এমন অবস্থা করে যে, সেই লোকেরা ঈশ্বরের কাছে কেঁদে ওঠেআর ঈশ্বর সেই অসহায় লোকদের আর্তনাদ শোনেন। ২৯  ঈশ্বর যখন চুপ করে থাকেন, তখন কে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে? তিনি যখন তাঁর মুখ ঘুরিয়ে নেন, তখন কে তাঁকে দেখতে পারে? জাতি হোক বা ব্যক্তি, তিনি সবার সঙ্গে একই আচরণ করেন, ৩০  যাতে কোনো ভক্তিহীন* ব্যক্তি রাজত্ব করতে না পারেকিংবা লোকদের জন্য ফাঁদ পাততে না পারে। ৩১  কেউ কি ঈশ্বরকে বলবে,‘আমি কোনো অপরাধ করিনি, তারপরও আমাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ৩২  আমাকে বলুন, এমন কী রয়েছে, যেটা আমি দেখতে পাইনি।আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি, তা হলে আমি পুনরায় সেটা করব না’? ৩৩  তাঁর রায় আপনার পছন্দ হয়নি বলেতাঁকে কি আপনার ইচ্ছামতো আপনাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে? তাহলে আপনি যা জানেন, তা বলুন। ৩৪  বোঝার ক্ষমতা রয়েছে এমন লোকেরা আমাকে বলবে,হ্যাঁ, আমার কথা শোনে এমন সমস্ত বিজ্ঞ ব্যক্তি বলবে, ৩৫  ‘ইয়োব এমন কথা বলছেন, যেগুলোর বিষয়ে তার সম্পূর্ণ জ্ঞান নেইআর তার কথাগুলো দেখায়, তার বোঝার ক্ষমতা নেই।’ ৩৬  তাই, ইয়োবকে* যেন পুরোপুরি পরীক্ষা করা হয়কারণ তার কথাগুলো মন্দ লোকদের কথার মতো! ৩৭  তিনি পাপ করার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্রোহ করছেন,আমাদের সামনে হাততালি দিয়ে উপহাস করছেনআর সত্য ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক বেশি কথা বলছেন!”

পাদটীকাগুলো

বা “ধর্মভ্রষ্ট।”
বা সম্ভবত, “হে আমার পিতা, ইয়োবকে।”