ইষ্টের ৩:১-১৫
৩ এর কিছুসময় পর, রাজা অহশ্বেরশ অগাগীয় হম্মদাথার ছেলে হামনকে তার সহঅধ্যক্ষদের চেয়ে উচ্চপদ দিয়ে সম্মানিত করলেন।
২ রাজপ্রাসাদের দরজার কাছে রাজার যত দাস ছিল, তারা হামনের সামনে মাথা নত করত এবং তার সামনে উবুড় হয়ে পড়ত কারণ রাজা এই আদেশই দিয়েছিলেন। কিন্তু, মর্দখয় হামনের সামনে মাথা নত করতেন না কিংবা তার সামনে উবুড়ও হতেন না।
৩ রাজপ্রাসাদের দরজার কাছে রাজার যে-দাসেরা বসে থাকত, তারা মর্দখয়কে জিজ্ঞেস করল: “কেন তুমি রাজার আদেশ পালন কর না?”
৪ তারা প্রতিদিন এই বিষয়ে তাকে বলত, কিন্তু মর্দখয় তাদের কথা শুনলেন না। তখন তারা হামনকে এই বিষয়টা জানাল। তারা দেখতে চাইছিল যে, মর্দখয়ের এই আচরণ মেনে নেওয়া হবে কি না কারণ মর্দখয় তাদের জানিয়েছিলেন যে, তিনি একজন যিহুদি।
৫ হামন যখন দেখল যে, মর্দখয় তার সামনে মাথা নত করছেন না এবং তার সামনে উবুড় হয়ে পড়ছেন না, তখন সে প্রচণ্ড রেগে গেল।
৬ কিন্তু, সে শুধু মর্দখয়কে হত্যা করেই শান্তি পেত না কারণ তাকে মর্দখয়ের লোকদের বিষয়ে অর্থাৎ যিহুদিদের বিষয়েও জানানো হয়েছিল। তাই, হামন এমন এক উপায় খুঁজতে লাগল, যেটার মাধ্যমে সে অহশ্বেরশের রাজ্যের সমস্ত যিহুদিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।
৭ রাজা অহশ্বেরশের শাসনের ১২তম বছরের প্রথম মাসে অর্থাৎ নিশান* মাসে হামনের সামনে পূর (অর্থাৎ ঘুঁটি*) চালা হল, যাতে এটা জানা যায় যে, কোন মাসে এবং কোন দিনে তাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে। তাতে দ্বাদশ মাস অর্থাৎ অদর* মাসের নাম উঠল।
৮ এরপর হামন রাজা অহশ্বেরশের কাছে গিয়ে বলল: “আপনার রাজ্যের সমস্ত প্রদেশে এমন এক জাতির লোক ছড়িয়ে রয়েছে, যাদের নিয়মকানুন অন্য সমস্ত লোকের চেয়ে একেবারে আলাদা আর তারা মহারাজের নিয়মকানুন পালন করে না। যদি এদের বিষয়ে কিছু না করা হয়, তা হলে মহারাজকে হয়তো প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি ভোগ করতে হবে।
৯ তাই রাজা যদি অনুমতি দেন, তা হলে এই লোকদের মেরে ফেলার বিষয়ে এক রাজাজ্ঞা জারি করা হোক। এরজন্য আমি কর্মচারীদের ১০,০০০ তালন্ত* রুপো দেব, যাতে তারা রাজকোষে সেটা জমা করে দেয়।”*
১০ এই কথা শুনে রাজা নিজের সিলমোহর দেওয়ার আংটি খুলে অগাগীয় হম্মদাথার ছেলে এবং যিহুদিদের শত্রু হামনকে দিয়ে দিলেন।
১১ রাজা তাকে বললেন: “আমি সেই লোকদের তোমার হাতে সমর্পণ করছি আর তাদের রুপোও তোমাকে দিচ্ছি। তোমার যা ইচ্ছা, তাদের প্রতি তা-ই করো।”
১২ তখন প্রথম মাসের ১৩তম দিনে রাজার লেখকদের* ডাকা হল। তারা রাজার সুবেদারদের, আলাদা আলাদা প্রদেশের রাজ্যপালদের এবং লোকদের অধ্যক্ষদের জন্য হামনের সমস্ত আদেশ লিখল। এটা সমস্ত প্রদেশের লোকের ভাষায় ও লিপিতে লেখা হল। এটাকে রাজা অহশ্বেরশের নামে লেখা হল আর এর উপর রাজার আংটি দিয়ে সিলমোহর দেওয়া হল।
১৩ এই চিঠিগুলো রাজার বার্তাবাহকদের মাধ্যমে সমস্ত প্রদেশে পাঠানো হল। সেগুলোতে আদেশ দেওয়া হল যে, দ্বাদশ মাস অর্থাৎ অদর মাসের ১৩তম দিনে সমস্ত যিহুদিকে যেন হত্যা করা হয়। তাদের যুবক, বৃদ্ধ, বাচ্চা, মহিলা, সবাইকে যেন মেরে ফেলা হয়। তাদের যেন একেবারে নির্মূল করে দেওয়া হয় আর তাদের সব কিছু যেন লুট করে নেওয়া হয়।
১৪ চিঠিতে লেখা এই বিষয়গুলো সমস্ত প্রদেশে আইন হিসেবে প্রয়োগ করতে হত আর লোকদের কাছে এটা ঘোষণা করতে হত, যাতে তারা সেই দিনের জন্য প্রস্তুত হয়।
১৫ রাজার আদেশ অনুসারে বার্তাবাহকেরা দ্রুত রওনা হল আর শূশন* নামক দুর্গে* যে-লোকেরা বাস করত, তাদের জন্য এই একই আইন জারি করা হল। এতে শূশন* নগরের লোকেরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ল, কিন্তু রাজা ও হামন দ্রাক্ষারস* পান করতে বসলেন।
পাদটীকাগুলো
^ পরিশিষ্টের খ১৫ দেখুন।
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ পরিশিষ্টের খ১৫ দেখুন।
^ এক তালন্ত সমান ৩৪.২ কিলোগ্রাম। পরিশিষ্টের খ১৪ দেখুন।
^ বা সম্ভবত, “যারা এই কাজ করবে, তাদের জন্য আমি রাজকোষে ১০,০০০ তালন্ত রুপো জমা করব।”
^ বা “সচিবদের।”
^ বা “সুসা।”
^ ইষ্টের ১:২ পদের পাদটীকা দেখুন।
^ বা “সুসা।”
^ বা “ওয়াইন।”