ইষ্টের ৪:১-১৭

 মর্দখয় যখন জানতে পারলেন যে, কী ঘটেছে, তখন তিনি দুঃখে নিজের পোশাক ছিঁড়লেন এবং চট পরে ছাই মাখলেন। তিনি নগরের মধ্যে গিয়ে জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন। ২  এই অবস্থায় তিনি রাজপ্রাসাদের দরজার কাছে গেলেন, কিন্তু তিনি দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকলেন না কারণ কারোরই চট পরে ভিতরে ঢোকার অনুমতি ছিল না। ৩  যে-সমস্ত প্রদেশে রাজার এই আজ্ঞা পড়ে শোনানো হল, সেই সমস্ত এলাকায় যিহুদিদের উপর শোকের ছায়া নেমে এল। তারা জোরে জোরে কেঁদে এবং বুক চাপড়ে নিজেদের দুঃখ প্রকাশ করতে লাগল ও সেইসঙ্গে উপবাস করতে লাগল। অনেক যিহুদি মাটিতে চট পেতে এবং ছাই ঢেলে সেটার উপর শুয়ে পড়ল। ৪  যখন ইষ্টেরের পরিচারিকা ও নপুংসকেরা এসে তাকে খবর দিল, তখন রানি খুবই উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়লেন। তিনি মর্দখয়ের জন্য পোশাক পাঠালেন, যাতে তিনি চট ছেড়ে সেই পোশাক পরেন। কিন্তু, মর্দখয় তা নিতে চাইলেন না। ৫  তখন ইষ্টের রাজনপুংসকদের মধ্য থেকে হথককে ডেকে পাঠালেন, যাকে রাজা ইষ্টেরের সেবা করার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। ইষ্টের হথককে আদেশ দিলেন যেন তিনি গিয়ে মর্দখয়কে জিজ্ঞেস করেন, এমন কী ঘটেছে যে, তিনি চট পরে বসে রয়েছেন। ৬  তখন হথক রাজপ্রাসাদের দরজার সামনে নগরের যে-খোলা জায়গা রয়েছে, সেখানে মর্দখয়ের কাছে গেলেন। ৭  মর্দখয় হথককে জানালেন যে, তিনি কোন বিপদে পড়েছেন আর হামন যিহুদিদের বিনষ্ট করার জন্য রাজকোষে কত অর্থ দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে। ৮  তিনি হথককে সেই রাজাজ্ঞার একটা প্রতিলিপিও দিলেন, যেটা যিহুদিদের বিনাশ করার জন্য শূশনে* জারি করা হয়েছিল। মর্দখয় হথককে বললেন, তিনি যেন এই রাজাজ্ঞা ইষ্টেরকে দেখিয়ে তাকে সমস্ত বিষয় বুঝিয়ে বলেন। মর্দখয় এই নির্দেশনাও দিলেন, ইষ্টের যেন রাজার কাছে গিয়ে তার লোকদের হয়ে এই অনুরোধ করেন যে, রাজা যেন তার লোকদের প্রতি দয়া দেখান। ৯  হথক ফিরে এসে ইষ্টেরকে সেই সমস্ত কথা বললেন, যেগুলো মর্দখয় তাকে বলেছিলেন। ১০  ইষ্টের তাকে আবারও মর্দখয়ের কাছে পাঠালেন আর তাকে এই কথা বলতে বললেন: ১১  “রাজার সমস্ত দাস এবং তার প্রদেশের সমস্ত লোক এই আইনটা ভালোভাবে জানে যে, কেউ যদি বিনা আমন্ত্রণে রাজার সঙ্গে দেখা করার জন্য রাজপ্রাসাদের ভিতরের প্রাঙ্গণে যায়, তা হলে আইন অনুযায়ী তার একটাই শাস্তি রয়েছে, সেটা হল মৃত্যুদণ্ড। সেই ব্যক্তি একমাত্র তখনই রক্ষা পেতে পারে, যদি রাজা তার দিকে সোনার রাজদণ্ড বাড়িয়ে দেন। আর আজ ৩০ দিন হল আমাকে রাজার কাছে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।” ১২  ইষ্টেরের এই কথাগুলো যখন মর্দখয়কে জানানো হল, ১৩  তখন মর্দখয় ইষ্টেরকে বললেন: “ভেবো না যে, তুমি রাজপ্রাসাদে আছ বলে রেহাই পেয়ে যাবে আর বাকি যিহুদিদের সঙ্গে তোমাকে হত্যা করা হবে না। ১৪  তুমি যদি এখন চুপ করে থাক, তা হলে যিহুদিরা অন্য কোনো উপায়ে সাহায্য পাবে এবং রক্ষাও পাবে। কিন্তু, তুমি তোমার বাবার বংশের সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কে জানে, তোমাকে হয়তো এই দিনের জন্যই রানি করা হয়েছিল!” ১৫  তখন ইষ্টের মর্দখয়কে এই খবর পাঠালেন: ১৬  “তুমি যাও আর শূশনে* যত যিহুদি আছে, সবাইকে একত্রিত করো আর আমার জন্য উপবাস করো। তিন দিন এবং তিন রাত ধরে কেউ যেন কিছু না খায় আর আমিও আমার পরিচারিকাদের সঙ্গে উপবাস করব। আর আমি বিনা আমন্ত্রণে রাজার কাছে যাব, যেটা আইনের বিরুদ্ধে। এরজন্য যদি আমাকে মরতেও হয়, মরব।” ১৭  তখন মর্দখয় গিয়ে ঠিক তা-ই করলেন, যা ইষ্টের তাকে বলেছিলেন।

পাদটীকাগুলো

বা “সুসায়।”
বা “সুসায়।”