ইষ্রা ৯:১-১৫

 এই সমস্ত কিছু হওয়ার ঠিক পরেই অধ্যক্ষেরা আমার কাছে এসে বললেন: “ইজরায়েলের লোকেরা, যাজকেরা ও লেবীয়েরা আশেপাশের কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরীয় ও ইমোরীয়দের থেকে এবং তাদের জঘন্য কাজগুলো থেকে নিজেদের পৃথক করেনি। ২  তারা তাদের মেয়েদের বিয়ে করেছে এবং তাদের মেয়েদের সঙ্গে নিজেদের ছেলেদের বিয়ে দিয়েছে। এর ফলে, এই পবিত্র বংশ* আশেপাশের দেশের লোকদের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। অধ্যক্ষ ও আধিকারিকেরাই* প্রথমে এই অবিশ্বস্ততার কাজ করেছে।” ৩  এই কথা শোনামাত্রই আমি দুঃখে নিজের পোশাক এবং হাতকাটা জামা ছিঁড়লাম, নিজের চুল ও দাড়ি ছিঁড়লাম এবং হতভম্ব হয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। ৪  তখন যে-লোকেরা ইজরায়েলের ঈশ্বরের বাক্যকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করত,* তারা আমার চারপাশে একত্রিত হল। তারাও আপশোস করছিল কারণ বন্দিত্ব থেকে ফিরে আসা লোকেরা অবিশ্বস্ততার কাজ করেছিল। আমি বিকেলের শস্য নৈবেদ্যের* সময় পর্যন্ত হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম। ৫  যখন বিকেলের শস্য নৈবেদ্যের সময় এল, তখন আমি সেই জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ালাম, যেখানে বসে আমি শোক করছিলাম। আমি সেই ছেঁড়া পোশাক এবং হাতকাটা জামা পরে ছিলাম। আমি হাঁটু গেড়ে আমার ঈশ্বর যিহোবার উদ্দেশে হাত বাড়ালাম। ৬  আমি তাঁকে বললাম: “হে আমার ঈশ্বর, আমি এতটাই লজ্জিত এবং এতটাই অস্বস্তি বোধ করছি যে, আমি তোমার দিকে মুখ তুলতে পারছি না কারণ আমাদের অপরাধ অনেক বেড়ে গিয়েছে আর আমাদের দোষ বাড়তে বাড়তে আকাশ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। ৭  আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত অনেক খারাপ কাজ করেছি। আমাদের অপরাধের কারণে আমাদের, আমাদের রাজাদের এবং আমাদের যাজকদের অন্য দেশের রাজাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তারা তাদের তলোয়ার দিয়ে আমাদের হত্যা করেছে, আমাদের বন্দি করে নিয়ে গিয়েছে, আমাদের পুরোপুরি লুট করেছে আর আমাদের অপমান করেছে। আজও আমরা সেই একই অবস্থায় রয়েছি। ৮  কিন্তু, হে আমাদের ঈশ্বর যিহোবা, কিছু সময়ের জন্য তুমি আমাদের প্রতি অনুগ্রহ দেখিয়েছ আর আমাদের পুরোপুরিভাবে বিনষ্ট হয়ে যেতে দাওনি। এর পরিবর্তে, তুমি আমাদের ফিরিয়ে এনে তোমার পবিত্র স্থানে এক সুরক্ষিত জায়গা দিয়েছ। তুমি আমাদের চোখ উজ্জ্বল করে তুলেছ আর এই দাসত্ব থেকে আমাদের কিছুটা রেহাই দিয়েছ। ৯  যদিও আমরা দাস, তারপরও তুমি আমাদের একা ছেড়ে দাওনি। এর পরিবর্তে, তুমি আমাদের প্রতি অটল প্রেম দেখিয়েছ আর পারস্যের রাজাদের অনুপ্রাণিত করেছ, যেন তারা আমাদের প্রতি দয়া দেখায়। তুমি আমাদের সাহায্য করেছ, যাতে আমরা তোমার গৃহ নির্মাণ করতে পারি এবং সেটার ধ্বংস হয়ে যাওয়া জায়গাগুলো পুনর্নির্মাণ করতে পারি। তুমি যিহূদা ও জেরুসালেমে আমাদের চারপাশে সুরক্ষার* প্রাচীর জুগিয়েছ। ১০  “এত কিছুর পরও হে আমাদের ঈশ্বর, আমরা তোমার সেই আজ্ঞাগুলো পালন করা ছেড়ে দিয়েছি, ১১  যেগুলো তুমি তোমার দাসদের, তোমার ভাববাদীদের মাধ্যমে আমাদের দিয়েছিলে এবং বলেছিলে: ‘তোমরা যে-দেশ দখল করতে যাচ্ছ, সেটা একটা অশুচি দেশ কারণ সেখানকার লোকেরা অশুচি আর তারা জঘন্য কাজ করে দেশটাকে কলুষিত করে তুলেছে। তারা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত দেশটাকে অশুচি কাজে ভরিয়ে দিয়েছে। ১২  তাই, তোমরা তাদের ছেলেদের সঙ্গে তোমাদের মেয়েদের বিয়ে দেবে না এবং তাদের মেয়েদের সঙ্গে তোমাদের ছেলেদের বিয়ে দেবে না। তোমরা তাদের শান্তি ও মঙ্গলের জন্য কিছুই করবে না। এতে তোমরা শক্তিশালী হতে পারবে এবং দেশের উত্তম ফসল খেতে পারবে আর এই দেশটাকে তোমাদের ছেলেদের উত্তরাধিকার হিসেবে দিতে পারবে, যাতে এটা চিরকাল তাদের অধীনে থাকে।’ ১৩  আমরা আমাদের মন্দ কাজ এবং পাপের ফল ভোগ করেছি, কিন্তু আমরা যতটা শাস্তি পাওয়ার যোগ্য ছিলাম, সেটার চেয়ে তুমি আমাদের কম শাস্তি দিয়েছ আর আমাদের উদ্ধার করেছ। ১৪  এখন আমরা কি আবার তোমার আজ্ঞাগুলো লঙ্ঘন করব এবং যারা সেই জঘন্য কাজগুলো করে, তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা গড়ে তুলব? এমনটা করার ফলে আমাদের বিরুদ্ধে কি তোমার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠবে না আর তুমি কি আমাদের বিনষ্ট করে দেবে না? তখন আমাদের মধ্যে তো কেউই রক্ষা পাবে না। ১৫  হে ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবা, তুমি ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর কারণ তুমি এখনও পর্যন্ত আমাদের কয়েক জনকে বাঁচিয়ে রেখেছ। দেখো, আমরা তোমার সামনে দোষী অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছি, যদিও আমরা আমাদের অপরাধের কারণে তোমার সামনে দাঁড়ানোর যোগ্য নই।”

পাদটীকাগুলো

আক্ষ., “বীজ।”
বা “কর্মকর্তারাই।”
আক্ষ., “বাক্যের কারণে কাঁপত।”
বা “ভক্ষ্য নৈবেদ্যের।”
বা “পাথরের।”