কলসীয়দের প্রতি চিঠি ১:১-২৯
১ আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছায় খ্রিস্ট যিশুর একজন প্রেরিত এবং আমাদের ভাই তীমথিয়,
২ আমরা কলসীর পবিত্র ব্যক্তিদের প্রতি এবং খ্রিস্টের শিষ্য এমন বিশ্বস্ত ভাইদের প্রতি এই চিঠি লিখছি:
আমাদের পিতা ঈশ্বর যেন তোমাদের প্রতি মহাদয়া দেখান এবং তোমাদের শান্তি দান করেন।
৩ আমরা যখন তোমাদের জন্য প্রার্থনা করি, তখন সবসময় আমাদের প্রভু যিশু খ্রিস্টের পিতা, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই।
৪ কারণ আমরা খ্রিস্ট যিশুর উপর তোমাদের বিশ্বাসের কথা এবং সমস্ত পবিত্র ব্যক্তির প্রতি তোমরা যে-প্রেম দেখিয়ে থাক, সেই বিষয়ে শুনেছি।
৫ স্বর্গে তোমাদের জন্য ঈশ্বর যে-বিষয়গুলো রেখেছেন, সেগুলো পাওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে বলে তোমরা এইরকম মনোভাব দেখাচ্ছ। তোমরা সেই সময় এই প্রত্যাশার বিষয়ে জেনেছিলে, যখন তোমরা সত্য শিক্ষাগুলো অর্থাৎ সুসমাচার সম্বন্ধে শুনেছিলে,
৬ যে-সুসমাচার তোমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। এই সুসমাচার সমস্ত জগতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং ফল উৎপন্ন করছে। আর এটা সেই দিন থেকে তোমাদের মধ্যেও একইভাবে কাজ করছে, যে-দিন তোমরা এই সুসমাচার শুনেছিলে এবং ঈশ্বরের মহাদয়া আসলে কী, তা জানতে পেরেছিলে।
৭ এই মহাদয়া সম্বন্ধেই তোমরা আমাদের প্রিয় সহদাস ইপাফ্রার কাছ থেকে শিখেছিলে, যিনি আমাদের পক্ষ থেকে খ্রিস্টের একজন বিশ্বস্ত সেবক।
৮ আর তিনি আমাদের এও জানিয়েছেন যে, পবিত্র শক্তির মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে প্রেম গড়ে উঠেছে।
৯ এই কারণে যে-দিন আমরা তোমাদের এই প্রেম ও বিশ্বাসের কথা শুনেছি, সেই দিন থেকে তোমাদের জন্য কখনো প্রার্থনা করা বন্ধ করিনি, যাতে তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছার সঠিক জ্ঞানে পূর্ণ হও এবং প্রকৃত প্রজ্ঞা আর সেইসঙ্গে পবিত্র শক্তির মাধ্যমে বোঝার ক্ষমতা লাভ কর।
১০ আর যিহোবা* যেভাবে চান, তোমরা যেন সেই অনুযায়ী চলে তাঁকে পুরোপুরি খুশি করতে পার এবং একই সময়ে তোমরা ভালো ভালো কাজ করে চল এবং ঈশ্বরের সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ কর;
১১ আর তোমরা যেন তাঁর গৌরবময় ক্ষমতার দ্বারা শক্তিশালী হও, যাতে তোমরা ধৈর্য ও আনন্দ সহকারে পূর্ণরূপে কষ্ট সহ্য করতে পার।
১২ আর তোমরা পিতা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও, যিনি সেই পবিত্র ব্যক্তিদের সঙ্গে উত্তরাধিকার লাভ করার জন্য তোমাদের যোগ্য করে তুলেছেন, যারা আলোতে রয়েছে।
১৩ তিনি আমাদের অন্ধকারের কর্তৃত্ব থেকে উদ্ধার করে তাঁর প্রিয় পুত্রের রাজ্যে নিয়ে এসেছেন।
১৪ তাঁর পুত্রের মাধ্যমে মুক্তির মূল্য জোগানোর দ্বারা আমাদের মুক্ত করা হয়েছে অর্থাৎ আমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে।
১৫ তিনিই অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি, সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত;
১৬ কারণ স্বর্গে ও পৃথিবীতে, যা-কিছু দেখা যায় এবং যা-কিছু দেখা যায় না, হোক তা শাসক, নেতা, সরকার কিংবা কর্তৃপক্ষ, সমস্ত কিছু তাঁর মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে। হ্যাঁ, তাঁর মাধ্যমেই এবং তাঁর জন্যই অন্য সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে।
১৭ আর অন্য সমস্ত কিছুর আগে তিনি অস্তিত্বে ছিলেন এবং তাঁর মাধ্যমেই সমস্ত কিছু অস্তিত্বে আনা হয়েছে।
১৮ তিনিই দেহের অর্থাৎ মণ্ডলীর মস্তক। তিনিই সমস্ত কিছুর শুরু। তিনিই মৃতদের মধ্য থেকে প্রথমজাত; তাই তিনিই হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি সমস্ত কিছুর প্রথমে রয়েছেন;
১৯ ঈশ্বর চেয়েছিলেন যেন সমস্ত পূর্ণতা খ্রিস্টের মধ্যেই বাস করে।
২০ ঈশ্বর এও চেয়েছিলেন যেন খ্রিস্টের মাধ্যমেই অর্থাৎ যাতনাদণ্ডে* তাঁর পাতিত রক্তের মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করে স্বর্গ ও পৃথিবীর সমস্ত কিছুকে নিজের সঙ্গে পুনরায় সম্মিলিত করেন।
২১ একসময় তোমরা ঈশ্বরের শত্রু ছিলে এবং তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলে, কারণ তোমরা মন্দ কাজগুলো নিয়ে চিন্তা করতে।
২২ কিন্তু, যিনি মৃত্যুর হাতে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন, সেই খ্রিস্টের মাংসিক দেহের মাধ্যমে ঈশ্বর এখন নিজের সঙ্গে তোমাদের পুনরায় সম্মিলিত করেছেন, যেন তোমরা তাঁর দৃষ্টিতে পবিত্র, নিষ্কলঙ্ক ও নির্দোষ হতে পার—
২৩ যদি তোমরা ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস অনুযায়ী জীবনযাপন করে চল, ভিত্তির উপর স্থির থাক এবং দৃঢ় হও আর তোমরা যে-সুসমাচার শুনেছ এবং যা সমস্ত জগতে প্রচার করা হয়েছে, সেই সুসমাচারের প্রত্যাশা থেকে সরে না পড়। আমি পৌল, এই সুসমাচারের একজন সেবক হয়েছি।
২৪ আমি তোমাদের জন্য যে-কষ্ট ভোগ করছি, সেটার জন্য এখন আনন্দ করছি এবং খ্রিস্টের যে-ক্লেশ এখনও আমার দেহে ভোগ করা বাকি রয়েছে, তা আমি তাঁর দেহের অর্থাৎ মণ্ডলীর উপকারের জন্য ভোগ করছি।
২৫ ঈশ্বর আমাকে যে-দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী আমি এই মণ্ডলীরই সেবক হয়েছি, যেন তোমাদের উপকারের জন্য আমি পূর্ণরূপে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করি।
২৬ এই বাক্যের মধ্যে সেই পবিত্র রহস্যও রয়েছে, যা বিগত বিধিব্যবস্থাগুলোর* এবং বিগত প্রজন্মগুলোর কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছিল। কিন্তু, এখন সেই রহস্য তাঁর পবিত্র ব্যক্তিদের কাছে প্রকাশ করা হয়েছে।
২৭ আর ঈশ্বর এই পবিত্র ব্যক্তিদের কাছেই সেই পবিত্র রহস্যের গৌরবময় ধন প্রকাশ করতে চেয়েছেন, যা ন-যিহুদিদের কাছেও প্রকাশ করা হয়েছে। এই পবিত্র রহস্য হল খ্রিস্টের সঙ্গে তোমাদের একতাবদ্ধ হওয়া অর্থাৎ তাঁর সঙ্গে তোমাদের গৌরবান্বিত হওয়ার প্রত্যাশা।
২৮ তাঁর সম্বন্ধেই আমরা ঘোষণা করছি অর্থাৎ প্রত্যেককে সতর্ক করছি এবং প্রকৃত প্রজ্ঞা সহকারে সকলকে শিক্ষা দিচ্ছি, যাতে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে খ্রিস্টের একজন পরিপক্ব শিষ্য হিসেবে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত করতে পারি।
২৯ এই লক্ষ্যেই আমি কঠোর পরিশ্রম করছি, তিনি আমাকে যে-শক্তি দেন, সেই শক্তি অনুসারে প্রাণপণ করছি।