গালাতীয়দের প্রতি চিঠি ২:১-২১

  • পৌল জেরুসালেমে প্রেরিতদের সঙ্গে দেখা করেন (১-১০)

  • পৌল পিতরকে (কৈফাকে) সংশোধন করেন (১১-১৪)

  • কেবল বিশ্বাস করার কারণে ধার্মিক বলে ঘোষণা করা হয় (১৫-২১)

 এর ১৪ বছর পর, আমি বার্ণবাকে নিয়ে আবারও জেরুসালেমে যাই আর তীতকেও সঙ্গে নিই। ২  প্রভু যিশুর আদেশ অনুসারেই আমি সেখানে যাই। সেখানে আমি কেবল গণ্যমান্য ভাইদের সঙ্গে দেখা করি এবং তাদের সেই সুসমাচার সম্বন্ধে বলি, যা আমি ন-যিহুদি লোকদের কাছে প্রচার করি। কারণ আমি জানতে চেয়েছিলাম, ঈশ্বরের জন্য আমি যে-কাজ করছিলাম, সেটা ভালো কি না। যদি ভালো না হয়, তা হলে আমার কাজই বৃথা। ৩  এমনকী তীত, যিনি আমার সঙ্গে ছিলেন, গ্রিক হওয়া সত্ত্বেও তাকে ত্বকচ্ছেদ* করার জন্য জোর করা হয়নি। ৪  কিন্তু, সেই ভণ্ড ভাইদের কারণে সমস্যাটা উত্থাপিত হয়েছিল, যারা গোপনে আমাদের উপর নজর রাখার জন্য মণ্ডলীতে এসেছিল। খ্রিস্ট যিশুর শিষ্য হিসেবে আমরা যে-স্বাধীনতা উপভোগ করি, সেটাকে তারা ক্ষতিগ্রস্ত করতে চেয়েছিল, যেন তারা পুরোপুরিভাবে আমাদের দাস করতে পারে; ৫  আমরা তাদের কথা মেনে নিইনি, এমনকী এক মুহূর্তের* জন্যও নয়, যেন তোমরা সুসমাচারের সত্যে দৃঢ় থাকতে পার। ৬  কিন্তু, যাদের গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হতো, সেই গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমাকে আসলে নতুন কোনো বিষয়ই জানাননি। হ্যাঁ, তারা যেরকম ব্যক্তিই হোন না কেন, সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ ঈশ্বর মানুষের বাহ্যিক বিষয় দেখে বিচার করেন না। ৭  কিন্তু তারা দেখলেন, আমাকে অছিন্নত্বক* লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার কাজ দেওয়া হয়েছে, ঠিক যেমন পিতর ছিন্নত্বক* লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার কাজ পেয়েছেন। ৮  ঈশ্বর পিতরকে ছিন্নত্বক লোকদের মধ্যে একজন প্রেরিত হওয়ার জন্য শক্তি দিয়েছেন। আর তিনি আমাকেও ন-যিহুদি লোকদের মধ্যে একজন প্রেরিত হওয়ার জন্য শক্তি দিয়েছেন। ৯  হ্যাঁ, তারা যখন জানতে পারলেন, ঈশ্বর আমার প্রতি মহাদয়া দেখিয়েছেন, তখন যাকোব, কৈফা* ও যোহন, যারা প্রধান ব্যক্তি* ছিলেন, সম্মতির চিহ্ন হিসেবে আমার ও বার্ণবার দিকে ডান হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যেন আমরা ন-যিহুদি লোকদের কাছে যাই আর তারা ছিন্নত্বক লোকদের কাছে যান। ১০  তারা কেবল একটা বিষয় আমাদের বললেন, যেন আমরা দরিদ্র ভাই-বোনদের কথা মনে রাখি। আর আমি নিজেও তা করার ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলাম। ১১  কিন্তু, কৈফা* যখন আন্তিয়­খিয়ায় এলেন, তখন আমি সামনাসামনি তার প্রতিরোধ করলাম, কারণ তিনি যা করেছিলেন, সেটার জন্য তিনি দোষী ছিলেন। ১২  আসলে যাকোবের কাছ থেকে কয়েক জন ব্যক্তি আসার আগে, তিনি ন-যিহুদি লোকদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন; কিন্তু তারা আসার পর, ছিন্নত্বক ব্যক্তিদের ভয়ে তিনি তা করা বন্ধ করে দিলেন এবং নিজেকে ন-যিহুদি লোকদের কাছ থেকে আলাদা রাখতে শুরু করলেন। ১৩  অন্যান্য যিহুদিও তার সঙ্গে ভণ্ডামিতে যোগ দিল, এমনকী বার্ণবাও তাদের ভণ্ডামির দ্বারা প্রভাবিত হলেন। ১৪  কিন্তু, আমি যখন দেখলাম, তারা সুসমাচারের সত্য অনুসারে চলছে না, তখন আমি সকলের সামনে কৈফাকে* বললাম: “তুমি নিজে একজন যিহুদি হয়েও যদি যিহুদিদের মতো জীবনযাপন না করে ন-যিহুদিদের মতো জীবনযাপন কর, তা হলে কীভাবে তুমি ন-যিহুদি লোকদের যিহুদি রীতিনীতি অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য বাধ্য করতে পার?” ১৫  আমরা জন্মগতভাবে যিহুদি আর আমরা সেই ন-যিহুদি লোকদের মতো নই, যারা পাপ করে। ১৬  তবুও আমরা বুঝতে পারি, একজন ব্যক্তিকে ব্যবস্থায় যা বলা আছে, তা পালন করার কারণে নয়, বরং যিশু খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস করার কারণে ধার্মিক বলে ঘোষণা করা হয়। তাই, আমরা খ্রিস্ট যিশুর উপর বিশ্বাস করেছি, যেন খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস করার কারণে আমাদের ধার্মিক বলে ঘোষণা করা হয়, ব্যবস্থায় যা বলা আছে, তা পালন করার কারণে নয়। কারণ কোনো মানুষকেই ব্যবস্থায় যা বলা আছে, তা পালন করার কারণে ধার্মিক বলে ঘোষণা করা হবে না। ১৭  খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস করার কারণে আমাদের যেন ধার্মিক বলে ঘোষণা করা হয়, সেই বিষয়ের চেষ্টা করার পাশাপাশি আমরা যদি পাপী বলেও সাব্যস্ত হই, তা হলে এর অর্থ কি এই যে, খ্রিস্ট আমাদের পাপ করতে উৎসাহিত করেন? কখনোই না! ১৮  যে-জিনিসগুলো আমি একবার ভেঙে ফেলেছি, সেগুলোই যদি আবার তৈরি করি, তা হলে আমি দেখাই যে, আমি একজন অপরাধী। ১৯  কারণ আইনের দ্বারা আমি আইনের কাছে মারা গিয়েছি, যেন ঈশ্বরের জন্য জীবিত হতে পারি। ২০  খ্রিস্টের সঙ্গে আমি দণ্ডে বিদ্ধ হয়েছি। তাই, আমি আর জীবিত নই, বরং খ্রিস্ট আমার মধ্যে জীবিত আছেন। অতএব, এখন আমি ঈশ্বরের সেই পুত্রের উপর বিশ্বাস অনুসারে একজন মানুষ হিসেবে বেঁচে আছি, যিনি আমাকে ভালোবাসেন এবং আমার জন্য তাঁর জীবন দান করেছেন। ২১  আমি ঈশ্বরের মহাদয়া প্রত্যাখ্যান করি না, কারণ একজন ব্যক্তি যদি আইন পালন করার কারণে ধার্মিক বলে গণ্য হয়, তা হলে খ্রিস্ট বৃথাই মৃত্যুবরণ করেছেন।

পাদটীকাগুলো

শব্দকোষ দেখুন।
আক্ষ., “এক ঘণ্টার।”
শব্দকোষ দেখুন।
শব্দকোষ দেখুন।
যাকে পিতর বলেও ডাকা হয়।
বা “যারা মণ্ডলীর জন্য স্তম্ভস্বরূপ।”
যাকে পিতর বলেও ডাকা হয়।
যাকে পিতর বলেও ডাকা হয়।