গালাতীয়দের প্রতি চিঠি ৪:১-৩১
৪ কিন্তু, আমি তোমাদের বলছি, একজন উত্তরাধিকারী সমস্ত কিছুর প্রভু হলেও যতদিন পর্যন্ত সে ছোটো থাকে, ততদিন দাসদের সঙ্গে তার কোনো পার্থক্য থাকে না।
২ কারণ তার বাবার নিরূপিত সময় পর্যন্ত সে নির্দেশকদের ও গৃহাধ্যক্ষদের অধীনে থাকে।
৩ একইভাবে, আমরাও যখন ছোটো ছিলাম, তখন আমরা এই জগতের চিন্তাভাবনা ও আচরণের দাস ছিলাম।
৪ কিন্তু, যখন নিরূপিত সময় উপস্থিত হয়েছিল, তখন ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছিলেন। এই পুত্র একজন নারীর গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছিলেন এবং তিনি আইনের অধীনে ছিলেন,
৫ যেন আইনের অধীনে থাকা লোকদের তিনি মূল্য দিয়ে মুক্ত করতে পারেন এবং আমরা যেন দত্তকপুত্র হতে পারি।
৬ যেহেতু তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তাই ঈশ্বর আমাদের হৃদয়ে পবিত্র শক্তি দিয়েছেন। এটা হল সেই পবিত্র শক্তি, যা তাঁর পুত্রের হৃদয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই পবিত্র শক্তির দ্বারা পরিচালিত হয়ে আমরা “আব্বা,* পিতা” বলে ডেকে উঠি।
৭ অতএব, তোমরা আর দাস নও, বরং ঈশ্বরের সন্তান; আর তোমরা যদি ঈশ্বরের সন্তান হও, তা হলে তিনি তোমাদের উত্তরাধিকারও দেবেন।
৮ যখন তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না, তখন তোমরা তাদের দাস ছিলে, যারা আসলে ঈশ্বর নয়।
৯ কিন্তু, এখন যেহেতু তোমরা ঈশ্বরকে জেনেছ অথবা বলতে পার, ঈশ্বরের জানা লোক হয়েছ, তা হলে কীভাবে তোমরা আবার এই জগতের নিষ্ফল বিষয়গুলোর দিকে ফিরে যেতে চাইছ এবং পুনরায় সেগুলোর দাস হতে চাইছ?
১০ তোমরা বিশেষ বিশেষ দিন, মাস, কাল ও বছর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করছ।
১১ তোমাদের বিষয়ে আমার ভয় হচ্ছে, কি জানি, তোমাদের সাহায্য করার জন্য আমি হয়তো বৃথাই পরিশ্রম করেছি।
১২ হে ভাইয়েরা, একসময় আমিও তোমাদের মতো ছিলাম, কিন্তু আমি পরিবর্তিত হয়েছি। তাই, আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, আমি যেমন পরিবর্তিত হয়েছি, তোমরাও তেমনই পরিবর্তিত হও। অতীতে তোমরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করনি।
১৩ কিন্তু তোমরা জান, আমি আমার শারীরিক অসুস্থতার জন্যই প্রথম বার তোমাদের কাছে সুসমাচার ঘোষণা করার সুযোগ পেয়েছিলাম।
১৪ আর যদিও আমার অসুস্থতার জন্য তোমাদের ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল, তবুও তোমরা আমাকে অবজ্ঞা করনি কিংবা ঘৃণা করনি;* বরং ঈশ্বরের একজন স্বর্গদূতকে অথবা খ্রিস্ট যিশুকে যেভাবে গ্রহণ করতে, তোমরা আমাকে সেভাবেই গ্রহণ করেছিলে।
১৫ আমাকে গ্রহণ করার সময় তোমাদের যে-আনন্দ ছিল, সেটা এখন কোথায়? আমি তোমাদের পক্ষে এই সাক্ষ্য দিতে পারি, যদি সম্ভব হতো, তা হলে তোমরা নিজেদের চোখ উপড়ে আমাকে দিতে।
১৬ তবে, তোমাদের কাছে সত্য বলায় এখন কি আমি তোমাদের শত্রু হয়ে গেলাম?
১৭ কেউ কেউ তোমাদের জয় করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে, তবে কোনো ভালো উদ্দেশ্যের জন্য নয়; তারা আমার কাছ থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়, যেন তোমরা উৎসুকভাবে তাদের অনুসরণ কর।
১৮ কিন্তু, কেউ যদি তোমাদের জয় করতে চায়, তা হলে সেটা তোমাদের জন্য সবসময় উত্তম, যতক্ষণ পর্যন্ত এর পিছনে উদ্দেশ্য ভালো থাকে। তবে, এটা কেবল আমি যখন তোমাদের সঙ্গে থাকি, তখনই হওয়া উচিত নয়।
১৯ হে আমার প্রিয় সন্তানেরা, যতদিন না তোমরা খ্রিস্টের ব্যক্তিত্ব প্রতিফলিত করছ, ততদিন পর্যন্ত আমি তোমাদের জন্য আবারও একজন মায়ের মতো প্রসববেদনা ভোগ করছি।
২০ আমি যদি এখন তোমাদের সঙ্গে থাকতে পারতাম এবং আরও কোমলভাবে কথা বলতে পারতাম, তা হলে ভালো হতো। কারণ তোমাদের ব্যাপারে আমি কী করব, তা বুঝতে পারছি না।
২১ তোমরা যারা আইনের অধীনে থাকতে চাও, আমাকে বল দেখি, ব্যবস্থা কী বলে, তা কি তোমরা শুনতে পাও না?
২২ উদাহরণ স্বরূপ, লেখা আছে যে, অব্রাহামের দুই ছেলে ছিল, একজন ছিল দাসীর ছেলে এবং আরেকজন ছিল স্বাধীন স্ত্রীর ছেলে;
২৩ তবে, দাসীর ছেলের জন্ম স্বাভাবিক উপায়েই হয়েছিল, কিন্তু স্বাধীন স্ত্রীর ছেলের জন্ম ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার কারণে হয়েছিল।
২৪ এই বিষয়গুলোর রূপক অর্থ রয়েছে; কারণ এই দু-জন স্ত্রী দু-টো চুক্তিকে চিত্রিত করে; একটা চুক্তি সীনয় পর্বতে করা হয়েছিল; যারা এই চুক্তির অধীনে রয়েছে, তারা সকলে দাস; আর এই চুক্তিকে হাগারের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
২৫ হাগার আরব দেশে অবস্থিত সীনয় পর্বতকে চিত্রিত করে এবং তার পরিস্থিতি এখনকার জেরুসালেমের পরিস্থিতির মতো, কারণ সে তার সন্তানদের সঙ্গে দাসত্বে রয়েছে।
২৬ কিন্তু, স্বর্গীয় জেরুসালেম হল স্বাধীন স্ত্রী আর সে আমাদের জননী।
২৭ কারণ লেখা আছে: “হে বন্ধ্যা স্ত্রী, তুমি, যে সন্তানের জন্ম দাওনি, তুমি আনন্দ করো; তুমি, যে প্রসববেদনা ভোগ করনি, তুমি আনন্দে চিৎকার করো; কারণ বন্ধ্যা স্ত্রীর সন্তানদের সংখ্যা সেই স্ত্রীর সন্তানদের চেয়ে অনেক বেশি, যার স্বামী রয়েছে।”
২৮ হে ভাইয়েরা, ইস্হাকের মতো তোমাদের জন্মও ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার কারণে হয়েছে।
২৯ কিন্তু, সেই সময়ে যার জন্ম স্বাভাবিক উপায়ে হয়েছিল, সে তাকে তাড়না করতে শুরু করেছিল, যার জন্ম পবিত্র শক্তির দ্বারা হয়েছিল। আর এখনও তা-ই হচ্ছে।
৩০ কিন্তু, শাস্ত্র কী বলে? “ওই দাসীকে এবং তার ছেলেকে তাড়িয়ে দাও, কারণ দাসীর ছেলে কোনোভাবেই সেই স্বাধীন স্ত্রীর ছেলের সঙ্গে উত্তরাধিকার লাভ করবে না।”
৩১ তাই, হে ভাইয়েরা, আমরা দাসীর সন্তান নই, বরং স্বাধীন স্ত্রীর সন্তান।