নহিমিয় ৪:১-২৩

 সন্‌বল্লট যখন জানতে পারল যে, আমরা প্রাচীর পুনর্নির্মাণ করছি, তখন সে খুব রেগে গেল এবং অসন্তুষ্ট হল। সে যিহুদিদের নিয়ে ঠাট্টাতামাশাও করতে লাগল। ২  সে তার সঙ্গীসাথিদের সামনে এবং শমরিয়ার সৈন্যদের সামনে বলতে লাগল: “এই দুর্বল যিহুদিরা কী করছে? এরা কি নিজেদের ক্ষমতায় প্রাচীর নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারবে? এরা কি বলি উৎসর্গ করবে? এরা কি এক দিনেই প্রাচীর নির্মাণ করে ফেলবে? পাথর কোথা থেকে পাবে? এরা কি ধ্বংসস্তূপ থেকে পোড়া পাথরগুলো তুলে লাগাবে?” ৩  তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অম্মোনীয় টোবিয় বলল: “এরা যে-প্রাচীর নির্মাণ করছে, সেটার উপর এমনকী যদি একটা শেয়াল ওঠে, তা হলেও ওটা পড়ে যাবে।” ৪  তখন আমি প্রার্থনায় বললাম: “হে আমাদের ঈশ্বর, দেখো, এই লোকেরা কীভাবে আমাদের হেয় করছে। তারা যেভাবে আমাদের অপমান করছে, তাদেরও যেন সেভাবেই অপমান করা হয় আর লুট করা জিনিসের মতোই তাদের যেন বন্দি করে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫  তুমি তাদের অপরাধ উপেক্ষা কোরো না, তাদের পাপ মুছে দিয়ো না কারণ তারা প্রাচীর নির্মাণকারীদের অপমান করেছে।” ৬  আমরা প্রাচীর মেরামতের কাজ করতে থাকলাম। সেটার যে-জায়গাগুলো ভেঙে গিয়েছিল, সেগুলো আমরা পুনর্নির্মাণ করলাম। এভাবে আমরা অর্ধেক উচ্চতা পর্যন্ত নির্মাণ করে ফেললাম। লোকেরা মন দিয়ে কাজ করছিল। ৭  সন্‌বল্লট ও টোবিয় এবং আরবীয়েরা, অম্মোনীয়েরা ও অস্‌দোদীয়েরা যখন জানতে পারল যে, জেরুসালেমের প্রাচীরের কাজ উদ্যোগের সঙ্গে করা হচ্ছে এবং সেটার ভেঙে যাওয়া অংশগুলো পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে, তখন তারা প্রচণ্ড রেগে গেল। ৮  তারা একত্রে মিলে ষড়যন্ত্র করল, তারা জেরুসালেমের উপর আক্রমণ করবে এবং চারিদিকে গোলযোগের সৃষ্টি করবে। ৯  তখন আমরা আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম আর শত্রুদের হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য দিনে ও রাতে পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম। ১০  পরে যিহূদার লোকেরা বলতে লাগল: “মজুরেরা* ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে আর এখনও ধ্বংসাবশেষের অনেক অংশ সরানো বাকি রয়েছে। তাদের সাহায্য ছাড়া আমরা প্রাচীর পুনর্নির্মাণের কাজ কোনোভাবেই শেষ করতে পারব না।” ১১  আমাদের শত্রুরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিল: “তারা কোনো কিছু বোঝার অথবা দেখার আগেই আমরা তাদের মাঝে ঢুকে তাদের মেরে ফেলব আর তাদের কাজ বন্ধ করে দেব।” ১২  তাদের আশেপাশে যে-যিহুদিরা বাস করত, তারা যখনই মেরামত করার জন্য জেরুসালেমে আসত, তখনই তারা আমাদের বার বার* বলত: “শত্রুরা চারিদিক থেকে আমাদের উপর আক্রমণ করবে।” ১৩  তাই, আমি খোলা জায়গাগুলোতে এবং যেখানে যেখানে প্রাচীর নীচু ছিল, সেখানে সেখানে লোকদের নিযুক্ত করলাম। আমি তাদের পরিবার অনুযায়ী তাদের নিযুক্ত করলাম আর তাদের হাতে তলোয়ার, বর্শা ও তির-ধনুক দিলাম। ১৪  আমি যখন দেখলাম লোকেরা ভয় পাচ্ছে, তখন আমি সঙ্গেসঙ্গে সেখানকার উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের, অধ্যক্ষদের এবং বাকি লোকদের বললাম: “শত্রুদের ভয় পেয়ো না। তোমাদের মহান ও বিস্ময়কর ঈশ্বর যিহোবাকে স্মরণ করো। আর নিজেদের ভাইদের, ছেলে-মেয়েদের, স্ত্রীদের এবং ঘরবাড়ির জন্য লড়াই করো।” ১৫  ওদিকে শত্রুরা জানতে পারল যে, আমরা তাদের ষড়যন্ত্র সম্বন্ধে বুঝতে পেরেছি এবং সত্য ঈশ্বর তাদের চক্রান্ত নিষ্ফল করে দিয়েছেন আর এদিকে আমরা আবারও নগর পুনর্নির্মাণের কাজে লেগে পড়লাম। ১৬  কিন্তু, সেই দিন থেকে আমার অর্ধেক লোক মেরামত করতে লাগল আর অর্ধেক লোক বর্ম* পরে বর্শা, ঢাল ও তির-ধনুক নিয়ে পাহারা দিতে লাগল। আর অধ্যক্ষেরা সাহায্য করার জন্য যিহূদার সেই লোকদের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকলেন, ১৭  যারা প্রাচীর মেরামতের কাজ করছিল। ভার বহনকারীরা এক হাতে কাজ করছিল এবং অন্য হাতে অস্ত্র* ধরে ছিল। ১৮  প্রাচীর পুনর্নির্মাণকারীরা প্রত্যেকে নিজেদের কোমরে তলোয়ার বেঁধে কাজ করছিল। আর তূরীবাদক আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ১৯  তখন আমি উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের, অধ্যক্ষদের এবং বাকি লোকদের বললাম: “এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আমরা প্রাচীরের আলাদা আলাদা জায়গায় কাজ করছি আর এইজন্য একে অন্যের থেকে অনেক দূরে রয়েছি। ২০  তাই, তোমরা যখন তূরীর আওয়াজ শুনবে, তখন আমাদের কাছে এসে একত্রিত হবে। আমাদের ঈশ্বর আমাদের হয়ে লড়াই করবেন।” ২১  আমরা সূর্যোদয় থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্থাৎ আকাশে তারা বের হওয়ার সময় পর্যন্ত কাজ করতে থাকলাম। আমাদের মধ্যে অর্ধেক লোক প্রাচীর পুনর্নির্মাণ করছিল আর অর্ধেক লোক বর্শা নিয়ে পাহারা দিচ্ছিল। ২২  তখন আমি লোকদের বললাম: “প্রত্যেক ব্যক্তি যেন তার দাসের সঙ্গে রাতের বেলায় জেরুসালেমের ভিতরেই থাকে। তারা রাতের বেলায় পাহারা দেবে আর দিনের বেলায় কাজ করবে।” ২৩  তাই আমি, আমার ভাইয়েরা, আমার পরিচারকেরা এবং আমার সঙ্গে যে-প্রহরীরা থাকত, আমরা সবাই দিনরাত একই পোশাক পরে রইলাম। আমরা সবাই ডান হাতে অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকতাম।

পাদটীকাগুলো

বা “ভার বহনকারীরা।”
আক্ষ., “দশ বার।”
অর্থাৎ ছোটো ছোটো ধাতব পাত দিয়ে তৈরি যোদ্ধার বস্ত্র।
বা “বর্শা।”