যোহনের কাছে প্রকাশিত বাক্য ১৪:১-২০

  • মেষশাবক এবং ১,৪৪,০০০ জন (১-৫)

  • তিন জন স্বর্গদূতের কাছ থেকে বার্তা (৬-১২)

    • যে-স্বর্গদূত আকাশের মাঝপথে উড়ছেন, তার কাছে অনন্তকালীন সুসমাচার রয়েছে (৬, ৭)

  • সুখী সেই ব্যক্তিরা, যারা খ্রিস্টের সঙ্গে একতাবদ্ধ অবস্থায় মারা যায় (১৩)

  • শস্য কাটা হয় এবং আঙুর গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা হয় (১৪-২০)

১৪  পরে আমি তাকালাম আর দেখো! সেই মেষশাবক সিয়োন পর্বতের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন আর তাঁর সঙ্গে ১,৪৪,০০০ জন, যাদের কপালে তাঁর নাম এবং তাঁর পিতার নাম লেখা আছে। ২  পরে আমি স্বর্গ থেকে জোরে বয়ে চলা জলস্রোতের শব্দের মতো এবং প্রচণ্ড বজ্রধ্বনির মতো এক কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম; আর আমি যে-কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম, তা এমন ছিল, যেন একদল গায়ক তাদের বীণা বাজিয়ে গান গাইছে। ৩  আর তারা সিংহাসনের সামনে এবং চার জন জীবিত প্রাণীর ও প্রাচীনদের* সামনে যেন এক নতুন গান গাইছে। পৃথিবী থেকে যাদের কেনা হয়েছে, সেই ১,৪৪,০০০ জন ছাড়া আর কেউ সেই গান শিখতে পারল না। ৪  তারা হল সেই ব্যক্তি, যারা নারীদের সঙ্গে যৌন অনৈতি­কতা করে নিজেদের কলুষিত করেনি; তারা কুমার। মেষশাবক যেখানেই যান, তারা সেখানেই তাঁকে অনুসরণ করে। ঈশ্বর ও মেষশাবকের উদ্দেশে প্রথম ফল* হিসেবে মানবজাতির মধ্য থেকে তাদের কেনা হয়েছে ৫  এবং তারা কোনো প্রতারণামূলক কথা বলেনি; তারা নিষ্কলঙ্ক। ৬  পরে আমি আরেকজন স্বর্গদূতকে দেখলাম, যিনি আকাশের মাঝপথে উড়ছেন। তার কাছে অনন্তকালীন সুসমাচার রয়েছে, যেন তিনি পৃথিবীতে বসবাসকারী লোকদের কাছে অর্থাৎ প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও বর্ণের লোকদের কাছে তা ঘোষণা করেন। ৭  তিনি উচ্চস্বরে এই কথাগুলো বলছেন: “ঈশ্বরকে ভয় করো এবং তাঁকে গৌরব প্রদান করো, কারণ লোকদের বিচার করার সময় এসে গিয়েছে; যিনি আকাশ ও পৃথিবী ও সমুদ্র এবং জলের উৎস সৃষ্টি করেছেন, তাঁর উপাসনা করো।” ৮  পরে তার পিছন পিছন দ্বিতীয় আরেকজন স্বর্গদূত এসে বললেন: “তার পতন হল! মহতী বাবিলের পতন হল! সে সমস্ত জাতিকে তার সেই দ্রাক্ষারস* খাইয়েছে, যা যৌন অনৈতিক কাজ* করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তোলে।” ৯  পরে তাদের পিছন পিছন তৃতীয় আরেকজন স্বর্গদূত এসে উচ্চস্বরে বললেন: “যদি কেউ সেই হিংস্র পশুর এবং এর মূর্তির উপাসনা করে এবং নিজ কপালে কিংবা নিজ হাতে চিহ্ন গ্রহণ করে, ১০  তা হলে সে-ও ঈশ্বরের ক্রোধের দ্রাক্ষারস* খাবে, যা ঈশ্বরের ক্রোধের পাত্রে অমিশ্রিত অবস্থায় ঢেলে দেওয়া হয়েছে; আর তাকে পবিত্র স্বর্গদূতদের সামনে এবং মেষশাবকের সামনে আগুনে ও গন্ধকে যন্ত্রণা দেওয়া হবে। ১১  ­যে-আগুনে তাদের যন্ত্রণা দেওয়া হবে, সেই আগুনের ধোঁয়া যুগে যুগে চিরকাল ধরে উপরে উঠতে থাকবে; আর যারা সেই হিংস্র পশু এবং এর মূর্তির উপাসনা করে আর যে-কেউ এর নামের চিহ্ন গ্রহণ করে, তারা দিন-রাত অবিরাম যন্ত্রণা পাবে। ১২  এই কারণে সেই পবিত্র ব্যক্তিদের ধৈর্য বজায় রাখা প্রয়োজন, যারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করে এবং যিশুর বিশ্বাস অনুসারে চলে।” ১৩  পরে আমি স্বর্গ থেকে এই কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম, “এই কথাগুলো লেখো: সুখী সেই ব্যক্তিরা, যারা এখন থেকে প্রভুর সঙ্গে একতাবদ্ধ অবস্থায় মারা যায়। হ্যাঁ, পবিত্র শক্তি এই কথা বলছে, তারা তাদের পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম নিক, কারণ তাদের কাজ ভুলে যাওয়া হবে না।”* ১৪  পরে আমি তাকালাম আর দেখো! একটা সাদা মেঘ এবং সেই মেঘের উপর মনুষ্যপুত্রের মতো একজন ব্যক্তি বসে রয়েছেন; তাঁর মাথায় সোনার মুকুট এবং তাঁর হাতে একটা ধারালো কাস্তে। ১৫  পরে মন্দিরের পবিত্র স্থান থেকে আরেকজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন এবং যিনি মেঘের উপর বসে রয়েছেন, তাঁকে চিৎকার করে এই কথাগুলো বললেন: “আপনার কাস্তে নিন এবং শস্য কাটুন, কারণ শস্য কাটার সময় এসে গিয়েছে; পৃথিবীর শস্য পুরোপুরিভাবে পেকে গিয়েছে।” ১৬  তখন যিনি মেঘের উপর বসে রয়েছেন, তিনি পৃথিবীতে তাঁর কাস্তে চালালেন; আর পৃথিবীর শস্য কাটা হল। ১৭  পরে স্বর্গীয় মন্দিরের পবিত্র স্থান থেকে আরেকজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন; তার হাতেও একটা ধারালো কাস্তে রয়েছে। ১৮  আর বেদির মধ্য থেকে আরেকজন স্বর্গদূত বের হয়ে এলেন; আগুনের উপর তার কর্তৃত্ব রয়েছে। যার হাতে ধারালো কাস্তে রয়েছে, তাকে তিনি চিৎকার করে এই কথাগুলো বললেন: “তোমার ধারালো কাস্তে নাও এবং পৃথিবীর আঙুর গাছের আঙুর সংগ্রহ করো, কারণ ফল পেকে গিয়েছে।” ১৯  তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীতে তার কাস্তে চালালেন এবং পৃথিবীর আঙুর গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করলেন আর তিনি আঙুর গাছ এবং ফল আঙুর পেষার বিশাল গর্তে নিক্ষেপ করলেন, যা ঈশ্বরের ক্রোধকে চিত্রিত করে। ২০  শহরের বাইরে আঙুর পেষার সেই গর্তে আঙুর পেষা হল আর এতে গর্ত থেকে রক্ত বের হয়ে এল এবং ঘোড়ার লাগাম পর্যন্ত উঁচু হয়ে প্রায় ২৯৬ কিলোমিটার* পর্যন্ত গেল।

পাদটীকাগুলো

বা “বয়স্ক ব্যক্তিদের।”
শব্দকোষ দেখুন।
বা “ওয়াইন।”
গ্রিক, পরনিয়া। শব্দকোষ দেখুন, “যৌন অনৈতিকতা।”
বা “ওয়াইন।”
আক্ষ., “কাজ তাদের সঙ্গে সঙ্গে যাবে।”
প্রায় ১৮৪ মাইল। আক্ষ., “১,৬০০ স্টেডিয়াম।” এক স্টেডিয়াম সমান ১৮৫ মিটার (৬০৬.৯৫ ফুট)।