প্রেরিতদের কার্যবিবরণ ১:১-২৬
১ হে থিয়ফিল, প্রথম বিবরণে আমি সেইসমস্ত বিষয় লিখেছি, যেগুলো যিশু সেই দিন পর্যন্ত করেছিলেন এবং শিক্ষা দিয়েছিলেন,
২ যে-দিন তিনি পবিত্র শক্তির মাধ্যমে তাঁর মনোনীত প্রেরিতদের নির্দেশনা দেওয়ার পর তাঁকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
৩ তিনি কষ্ট ভোগ করার পর বিভিন্ন স্পষ্ট প্রমাণের দ্বারা তাদের দেখিয়েছিলেন যে, তিনি জীবিত। তিনি ৪০ দিন ধরে তাদের দেখা দিয়েছিলেন এবং তাদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে কথা বলেছিলেন।
৪ তাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তিনি তাদের এই আদেশ দিয়েছিলেন: “তোমরা জেরুসালেম থেকে চলে যেয়ো না, বরং পিতার সেই প্রতিজ্ঞাত দানের জন্য অপেক্ষা করো, যে-দানের বিষয়ে তোমরা আমার কাছ থেকে শুনেছ;
৫ কারণ যোহন জলে বাপ্তিস্ম দিতেন ঠিকই, কিন্তু শীঘ্রই তোমরা পবিত্র শক্তিতে বাপ্তাইজিত হবে।”
৬ পরে তারা যখন আবার একত্রে মিলিত হলেন, তখন তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন: “প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইজরায়েলের হাতে রাজ্য ফিরিয়ে আনবেন?”
৭ তিনি তাদের বললেন: “পিতা যে-সময় ও কাল নিজের অধীনে* রেখেছেন, তা তোমাদের জানার বিষয় নয়।
৮ কিন্তু, তোমাদের উপর পবিত্র শক্তি আসার পর তোমরা শক্তি লাভ করবে আর তোমরা জেরুসালেমে, সমস্ত যিহূদিয়া ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে।”
৯ এইসমস্ত কথা বলার পর, তারা তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই তাঁকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল এবং একটা মেঘ এসে তাঁকে ঢেকে দিল, পরে তারা তাঁকে আর দেখতে পেলেন না।
১০ তিনি স্বর্গে উঠে যাওয়ার সময় তারা যখন আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন, তখন হঠাৎ সাদা কাপড়পরা দু-জন পুরুষ এসে তাদের পাশে দাঁড়ালেন
১১ এবং বললেন: “হে গালীলের লোকেরা, তোমরা দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছ কেন? এই যে যিশু, যাঁকে তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, তাঁকে তোমরা যেভাবে স্বর্গে যেতে দেখলে, সেভাবেই তিনি আসবেন।”
১২ পরে তারা জৈতুন পর্বত থেকে জেরুসালেমে ফিরে এলেন। এই পর্বত, জেরুসালেমের কাছেই অবস্থিত। দূরত্ব মাত্র এক বিশ্রামবারের* পথ।*
১৩ জেরুসালেমে পৌঁছে তারা সেই সময় যেখানে থাকছিলেন, সেই উপরের ঘরে গেলেন। এরা হলেন, পিতর, যোহন, যাকোব, আন্দ্রিয়, ফিলিপ, থোমা, বর্থলময়, মথি, আল্ফেয়ের ছেলে যাকোব, উদ্যোগী শিমোন এবং যাকোবের ছেলে যিহূদা।
১৪ তারা এবং তাদের সঙ্গে কয়েক জন মহিলা, যিশুর ভাইয়েরা এবং তাঁর মা মরিয়ম, সকলে একত্রে মিলিত হয়ে ক্রমাগত একমনা হয়ে প্রার্থনা করতেন।
১৫ এভাবে মিলিত হয়ে প্রার্থনা করার সময় একদিন পিতর ভাইদের মাঝে উঠে দাঁড়ালেন (সব মিলিয়ে লোকদের সংখ্যা ছিল প্রায় ১২০ জন) এবং বললেন:
১৬ “ভাইয়েরা, পবিত্র শক্তি দায়ূদের মাধ্যমে যিহূদার বিষয়ে যে-ভাববাণী বলেছিল, শাস্ত্রের সেই কথাগুলো পরিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন ছিল। এই যিহূদাই সেই লোকদের পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছিল, যারা যিশুকে গ্রেপ্তার করেছিল।
১৭ কারণ সে আমাদেরই একজন ছিল আর তাকেও এই পরিচর্যায় অংশ নেওয়ার জন্য মনোনীত করা হয়েছিল।
১৮ (পরে এই ব্যক্তিই তার মন্দ কাজের বেতন দিয়ে একটা জমি কিনেছিল। আর সে পড়ে গিয়ে তার পেট ফেটে গিয়েছিল এবং নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে পড়েছিল।
১৯ জেরুসালেমের সমস্ত লোক এই বিষয়টা জানতে পারে আর তাই এই জমিকে তাদের ভাষায় হকলদামা অর্থাৎ “রক্তক্ষেত্র” বলা হয়।)
২০ কারণ গীতসংহিতা বইয়ে লেখা আছে, ‘তার বাসস্থান জনশূন্য হয়ে পড়ুক আর সেখানে কেউ বাস না করুক’ এবং ‘তার অধ্যক্ষপদ অন্য কেউ গ্রহণ করুক।’
২১ তাই, আমাদের সেই ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একজনকে মনোনীত করতে হবে, যারা আমাদের মাঝে প্রভু যিশু পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়ার সময় সবসময় আমাদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন,
২২ যে-পরিচর্যা তিনি যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম নেওয়ার দিন থেকে শুরু করে তাঁকে স্বর্গে তুলে নেওয়ার আগে পর্যন্ত চালিয়ে গিয়েছিলেন। আর আমাদের মতো তাকেও যিশুর পুনরুত্থানের* সাক্ষি হতে হবে।”
২৩ তখন তারা দু-জন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করলেন, বার্শব্বা নামে পরিচিত যোষেফ, যাকে যুষ্ট বলেও ডাকা হয় এবং মত্তথিয়।
২৪ তখন তারা এই বলে প্রার্থনা করলেন: “হে যিহোবা,* তুমি সকলের হৃদয় জান, তুমি আমাদের জানাও, এই দু-জন ব্যক্তির মধ্য থেকে তুমি কাকে মনোনীত করেছ,
২৫ যেন তিনি এই পরিচর্যা করার দায়িত্ব ও প্রেরিতপদ লাভ করেন, যেগুলো প্রত্যাখ্যান করে যিহূদা নিজের পথ বেছে নিয়েছিল।”
২৬ পরে তারা সেই দু-জনের নামে ঘুঁটি* চাললেন এবং তাতে মত্তথিয়ের নাম উঠল আর তিনি সেই ১১ জন প্রেরিতের সঙ্গে যুক্ত হলেন।
পাদটীকাগুলো
^ বা “কর্তৃত্বে।”
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ বা “দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার।”
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ শব্দকোষ দেখুন।