প্রেরিতদের কার্যবিবরণ ১১:১-৩০
১১ আর প্রেরিতেরা এবং যিহূদিয়ার ভাইয়েরা শুনতে পেলেন, ন-যিহুদিরাও ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে।
২ তাই, পিতর যখন জেরুসালেমে এলেন, তখন যারা ত্বকচ্ছেদ আইনের পক্ষপাতী ছিলেন, তারা পিতরের সমালোচনা* করতে লাগলেন,
৩ বললেন: “তুমি অচ্ছিন্নত্বক* ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়েছ এবং তাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেছ।”
৪ তখন পিতর বিষয়টা তাদের কাছে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করতে লাগলেন:
৫ “আমি যাফো নগরে ছিলাম এবং প্রার্থনা করছিলাম আর এমন সময়ে একটা দর্শনে দেখলাম, আকাশ থেকে যেন বড়ো চাদরের মতো কিছু-একটার চার কোণা ধরে সেটা নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সেটা ঠিক আমার সামনে এল।
৬ আমি ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলাম, সেখানে পৃথিবীর যাবতীয় চতুষ্পদ প্রাণী, বন্যপ্রাণী, সরীসৃপ এবং আকাশের পাখি রয়েছে।
৭ আর আমি একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম: ‘পিতর, ওঠো, এগুলো মারো এবং খাও!’
৮ কিন্তু, আমি বললাম: ‘কোনোমতেই না প্রভু, কারণ আমি ব্যবস্থায় নিষিদ্ধ এবং ব্যবস্থা অনুযায়ী অশুচি এমন কিছু কখনো খাইনি।’
৯ পরে দ্বিতীয় বার আকাশ থেকে সেই কণ্ঠস্বর শোনা গেল: ‘ঈশ্বর যেগুলোকে শুচি করেছেন, তুমি সেগুলোকে অশুচি বোলো না।’
১০ পরে তৃতীয় বারও একই বিষয় ঘটল, এরপর সমস্ত কিছু আকাশে তুলে নেওয়া হল।
১১ আর ঠিক সেইসময়, আমরা যে-বাড়িতে ছিলাম, সেই বাড়ির সামনে তিন জন ব্যক্তি এসে দাঁড়াল। তাদের কৈসরিয়া থেকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল।
১২ তখন পবিত্র শক্তি আমাকে কোনোরকম সন্দেহ না করে তাদের সঙ্গে যেতে বলল। এই ছয় জন ভাইও আমার সঙ্গে গেলেন আর আমরা কর্ণীলিয়ের বাড়িতে প্রবেশ করলাম।
১৩ “তিনি একজন স্বর্গদূতকে কীভাবে তার বাড়িতে দেখেছিলেন, তা আমাদের বললেন। সেই স্বর্গদূত তাকে বলেছিলেন: ‘যাফোতে লোক পাঠিয়ে শিমোনকে ডেকে আনো, যাকে পিতর বলে ডাকা হয়।
১৪ আর তিনি তোমাদের বলবেন, কীভাবে তুমি এবং তোমার সমস্ত পরিবার ও পরিজন রক্ষা পেতে পার।’
১৫ কিন্তু, আমি যখন কথা বলতে শুরু করলাম, তখন পবিত্র শক্তি তাদের উপর বর্ষিত হল, যেমনটা প্রথম বার আমাদের উপরও হয়েছিল।
১৬ তখন আমার মনে পড়ল, প্রভু প্রায়ই এই কথা বলতেন: ‘যোহন জলে বাপ্তিস্ম দিতেন ঠিকই, কিন্তু তোমরা পবিত্র শক্তিতে বাপ্তাইজিত হবে।’
১৭ তাই, প্রভু যিশু খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস করায় আমাদের মতো তাদেরও যদি ঈশ্বর দান হিসেবে পবিত্র শক্তি দিয়ে থাকেন, তা হলে আমি কে যে, ঈশ্বরকে বাধা দেব?”*
১৮ তারা যখন এইসমস্ত বিষয় শুনলেন, তখন তারা আর আপত্তি করলেন না।* তারা ঈশ্বরের গৌরব করে বললেন: “ঈশ্বর ন-যিহুদি লোকদেরও অনুতাপ করার সুযোগ দিয়েছেন, যাতে তারা জীবন লাভ করতে পারে।”
১৯ আর স্তিফানকে কেন্দ্র করে যে-প্রচণ্ড তাড়না শুরু হয়েছিল, সেটার কারণে যারা ছিন্নভিন্ন হয়ে ফৈনীকিয়া, সাইপ্রাস ও আন্তিয়খিয়া পর্যন্ত চলে গিয়েছিল, তারা কেবল যিহুদিদের কাছেই সুসমাচার ঘোষণা করতে লাগল।
২০ কিন্তু, তাদের মধ্যে কেউ কেউ সাইপ্রাস ও কুরীণীর লোক ছিল। তারা আন্তিয়খিয়ায় এসে গ্রিকভাষী লোকদের কাছে প্রভু যিশুর বিষয়ে সুসমাচার ঘোষণা করতে লাগল।
২১ আর যিহোবার* সমর্থন তাদের উপর ছিল, তাই বহুসংখ্যক লোক প্রভুর উপর বিশ্বাস করল এবং তাঁর শিষ্য হয়ে উঠল।
২২ এই খবর জেরুসালেমের মণ্ডলীতে পৌঁছালে পর, তারা বার্ণবাকে আন্তিয়খিয়ায় পাঠালেন।
২৩ সেখানে পৌঁছে তিনি যখন ঈশ্বরের মহাদয়া দেখতে পেলেন, তখন তিনি আনন্দ করলেন এবং তাদের সকলকে প্রভুর প্রতি অনুগত থাকার জন্য উৎসাহিত করতে লাগলেন;
২৪ তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন আর তিনি পবিত্র শক্তিতে ও বিশ্বাসে পূর্ণ ছিলেন। আর অনেকেই প্রভুর উপর বিশ্বাস করতে লাগল।
২৫ তাই, তিনি তার্ষ নগরে গিয়ে সমস্ত জায়গায় শৌলের খোঁজ করলেন।
২৬ তাকে খুঁজে পাওয়ার পর, তিনি তাকে আন্তিয়খিয়ায় নিয়ে এলেন। আর তারা এক বছর ধরে মণ্ডলীর সঙ্গে মেলামেশা করলেন এবং অনেক লোককে শিক্ষা দিলেন। আর এই আন্তিয়খিয়াতেই প্রথমে ঈশ্বরের নির্দেশনায় শিষ্যদের খ্রিস্টান বলে ডাকা হয়।
২৭ সেই সময় কয়েক জন ভাববাদী জেরুসালেম থেকে আন্তিয়খিয়ায় এলেন।
২৮ তাদের মধ্যে আগাব নামে একজন ভাববাদী দাঁড়িয়ে পবিত্র শক্তির সাহায্যে এই ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, পুরো দেশে এক ভয়ানক দুর্ভিক্ষ হবে। আর সেটা ক্লৌদিয়ের সময়ে হয়েছিল।
২৯ তাই, শিষ্যেরা স্থির করলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ সংগতি অনুযায়ী যিহূদিয়ায় বসবাসরত ভাইদের জন্য ত্রাণসামগ্রী পাঠাবেন;
৩০ আর তারা তা-ই করলেন, বার্ণবা ও শৌলের মাধ্যমে সেই ত্রাণসামগ্রী প্রাচীনদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
পাদটীকাগুলো
^ বা “সঙ্গে তর্কবিতর্ক।”
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ বা “ঈশ্বরের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াব?”
^ আক্ষ., “তারা চুপ করে রইলেন।”
^ শব্দকোষ দেখুন।