যিশাইয় ৪০:১-৩১

৪০  তোমাদের ঈশ্বর বলেন: “আমার লোকদের সান্ত্বনা দাও, তাদের সান্ত্বনা দাও।  ২  জেরুসালেমকে সান্ত্বনাদায়ক কথা বলোআর তার কাছে ঘোষণা করো যে, তার কষ্টের* দিন শেষ হয়ে গিয়েছে,তার অপরাধের মূল্য চুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে যিহোবার হাত থেকে তার সমস্ত পাপের জন্য সম্পূর্ণ* শাস্তি পেয়েছে।”  ৩  প্রান্তরে একজন উচ্চস্বরে ঘোষণা করছে: “যিহোবার পথ প্রস্তুত* করো! আমাদের ঈশ্বরের জন্য মরুভূমির মধ্য দিয়ে একটা সোজা রাজপথ তৈরি করো।  ৪  প্রতিটা উপত্যকাকে উঁচু করা হোক,প্রতিটা পাহাড় ও পর্বতকে নীচু করা হোক। অসমান জমি সমান হয়ে যাবেআর এবড়োখেবড়ো জমি উপত্যকার সমভূমি হয়ে যাবে।  ৫  যিহোবার মহিমা প্রকাশিত হবেআর সমস্ত মানুষ একসঙ্গে তা দেখবেকারণ যিহোবার মুখ এই কথা বলেছে।”  ৬  শোনো! কেউ বলছে: “ঘোষণা করো!” অন্যজন জিজ্ঞেস করল: “কী ঘোষণা করব?” “সমস্ত মানুষ ঘাসের মতো,তাদের অটল প্রেম মাঠের ফুলের মতো।  ৭  সবুজ ঘাস শুকিয়ে যায়এবং ফুল নেতিয়ে পড়েকারণ যিহোবার নিঃশ্বাস তাদের উপর দিয়ে বয়ে যায়। সত্যিই, মানুষ সবুজ ঘাস মাত্র।  ৮  সবুজ ঘাস শুকিয়ে যায়আর ফুল নেতিয়ে পড়ে,কিন্তু আমাদের ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকে।”  ৯  হে মহিলা, তুমি, যে সিয়োনের জন্য ভালো খবর নিয়ে আসছ,তুমি উঁচু পর্বতে ওঠো। হে মহিলা, তুমি, যে জেরুসালেমের জন্য ভালো খবর নিয়ে আসছ,তুমি উচ্চস্বরে বলো। হ্যাঁ, উচ্চস্বরে বলো, ভয় পেয়ো না। যিহূদার নগরগুলোতে ঘোষণা করো: “এই যে তোমাদের ঈশ্বর।” ১০  দেখো! নিখিলবিশ্বের প্রভু যিহোবা ক্ষমতা সহকারে আসবেনআর তাঁর হাত তাঁর হয়ে শাসন করবে। দেখো! তাঁর কাছে পুরস্কার রয়েছেআর তিনি যে-মজুরি দেবেন, সেটা তাঁর কাছেই রয়েছে। ১১  তিনি মেষপালকের মতোই তাঁর মেষপালের যত্ন নেবেন। তিনি নিজের হাতে করে মেষশাবকদের একত্রিত করবেনএবং তিনি নিজের কোলে করে তাদের বইবেন। যে-মেষীরা তাদের বাচ্চাদের দুধ খাওয়ায়,তিনি কোমলভাবে তাদের নিয়ে যাবেন। ১২  কে নিজের হাতের তালুতে জল মেপেছেআর কে নিজের বিঘত* দিয়ে আকাশকে মেপেছে? কে পরিমাপ করার পাত্রে পৃথিবীর ধুলো ভরেছেকিংবা কে দাঁড়িপাল্লায় পাহাড়পর্বত ওজন করেছে? ১৩  কে যিহোবার সক্রিয় শক্তিকে মেপেছে*আর কে তাঁর পরামর্শদাতা হিসেবে তাঁকে নির্দেশনা দিতে পারে? ১৪  বোঝার ক্ষমতা লাভ করার জন্য তিনি কার সঙ্গে পরামর্শ করেছেনকিংবা কে তাঁকে ন্যায়বিচারের পথ সম্বন্ধে শিখিয়েছেকিংবা কে তাঁকে জ্ঞান সম্বন্ধে শিখিয়েছেকিংবা কে তাঁকে প্রকৃত বোঝার ক্ষমতার পথ দেখিয়েছে? ১৫  দেখো! জাতিগুলো এমন, যেন বালতি থেকে পড়া এক ফোঁটা জল,যেন দাঁড়িপাল্লার উপর ধুলোর আস্তরণ। দেখো! তিনি দ্বীপগুলোকে ধুলোর মতোই তুলে নেন। ১৬  এমনকী লেবাননও আগুন জ্বালিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়*আর সেখানকার বন্যপশুগুলোও হোমবলির জন্য যথেষ্ট নয়। ১৭  তাঁর সামনে সমস্ত জাতি এমন, যেন তাদের কোনো অস্তিত্বই নেই,তাঁর চোখে তারা কিছুই নয়, তাদের কোনো মূল্য নেই। ১৮  তোমরা কার সঙ্গে ঈশ্বরের তুলনা করতে পারবে? এমন কী রয়েছে, যা দেখতে তাঁর মতো? ১৯  কারিগর ছাঁচে ঢেলে প্রতিমা* তৈরি করেআর স্বর্ণকার সোনা দিয়ে সেটাকে মুড়ে দেয়এবং সেটার জন্য রুপোর শিকল তৈরি করে। ২০  সে নিজের উৎসর্গের জন্য একটা গাছ বেছে নেয়,এমন একটা গাছ, যেটা পচে যাবে না। সে দক্ষ কারিগরের খোঁজ করে,যাতে সে এমন একটা খোদাই-করা মূর্তি তৈরি করতে পারে, যেটা পড়ে যাবে না। ২১  তোমরা কি জান না? তোমরা কি শোননি? শুরু থেকেই তোমাদের কি বলা হয়নি? পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপন করার সময় থেকে তোমরা কি বোঝনি? ২২  ঈশ্বর গোলাকার পৃথিবীর উপরে বাস করেনআর সেটার বাসিন্দারা তাঁর কাছে ফড়িঙের মতো। তিনি আকাশকে পাতলা চাদরের মতো বিছিয়েছেন,তিনি সেটাকে বাস করার তাঁবুর মতো বিস্তৃত করেছেন। ২৩  তিনি উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের* নীচে নামিয়ে আনেনআর পৃথিবীর বিচারকদের* মূল্যহীন করে তোলেন। ২৪  সবেমাত্র তাদের রোপণ করা হয়েছিল,সবেমাত্র তাদের বপন করা হয়েছিল,তাদের কাণ্ড এমনকী মাটিতে শিকড় বিস্তারও করেনি,এমন সময় তাদের উপর ফুঁ দিয়ে তাদের শুকিয়ে ফেলা হয়েছেআর বাতাস খড়কুটোর মতোই তাদের উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে। ২৫  পবিত্র ঈশ্বর এই কথা বলেন: “তোমরা কার সঙ্গে আমার মিল খুঁজে বের করতে পার? তোমরা আমাকে কার সমান করতে পার? ২৬  আকাশের দিকে চোখ তুলে দেখো। কে এগুলো সৃষ্টি করেছে? তিনিই করেছেন, যিনি তাদের এক সেনাবাহিনীর মতো গুনে গুনে বের করে আনেন,তিনি তাদের সবাইকে নাম ধরে ডাকেন। তাঁর অসীম শক্তি এবং বিস্ময়কর ক্ষমতার কারণেতাদের মধ্যে একটাও অনুপস্থিত থাকে না। ২৭  হে যাকোব, কেন তুমি বল আর হে ইজরায়েল, কেন তুমি ঘোষণা কর,‘আমার পথ যিহোবার কাছ থেকে লুকোনো রয়েছেআর আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে কোনো ন্যায়বিচার পাই না’? ২৮  তুমি কি জান না? তুমি কি শোননি? পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তের সৃষ্টিকর্তা যিহোবা অনন্তকালীন ঈশ্বর। তিনি কখনো ক্লান্ত হন না কিংবা তাঁর শক্তি কখনো শেষ হয়ে যায় না। তাঁর বোঝার ক্ষমতা এমন যে, কেউ তা বুঝে উঠতে পারে না। ২৯  তিনি ক্লান্ত ব্যক্তিকে শক্তি দেনএবং যাদের শক্তি নেই, তাদের প্রচুর* শক্তি দেন। ৩০  তরুণেরা ক্লান্ত হয়ে পড়বে এবং তাদের শক্তি শেষ হয়ে যাবেআর যুবকেরা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে, ৩১  কিন্তু যারা যিহোবার উপর আশা রাখে, তারা শক্তি ফিরে পাবে। তারা ঈগল পাখির মতো ডানা মেলে উপরের দিকে উড়ে যাবে। তারা দৌড়োবে, কিন্তু তাদের শক্তি শেষ হবে না,তারা হাঁটবে, কিন্তু তারা ক্লান্ত হবে না।”

পাদটীকাগুলো

বা “বাধ্যতামূলক সেবার।”
বা “দ্বিগুণ।”
বা “পরিষ্কার।”
হাতের তালু ছড়ানো অবস্থায় বুড়ো আঙুলের মাথা থেকে কড়ে আঙুলের মাথা পর্যন্ত দূরত্ব। পরিশিষ্টের খ১৪ দেখুন।
বা সম্ভবত, “বুঝেছে।”
বা “লেবাননও যথেষ্ট জ্বালানি কাঠ জোগাতে পারে না।”
বা “কারিগর ধাতব মূর্তি।”
বা “কর্মকর্তাদের।”
বা “শাসকদের।”
বা “অসীম।”