যিশাইয় ৪২:১-২৫

৪২  দেখো! আমার দাস, যাঁকে আমি ধরে রেখেছি! আমার বেছে নেওয়া ব্যক্তি, যাঁর উপর আমি খুব সন্তুষ্ট! আমি তাঁর উপর আমার পবিত্র শক্তি ঢেলে দিয়েছি,তিনি জাতিগুলোর প্রতি ন্যায়বিচার করবেন।*  ২  তিনি চিৎকার করবেন না কিংবা জোরে কথা বলবেন নাআর তিনি রাস্তায় নিজের গলার আওয়াজ শোনাবেন না।  ৩  তিনি থেঁতলে যাওয়া নলখাগড়া ভাঙবেন নাএবং মিটমিট করে জ্বলতে থাকা সলতে নিভিয়ে ফেলবেন না। তিনি বিশ্বস্তভাবে ন্যায়বিচার করবেন।  ৪  যতদিন না তিনি পৃথিবীতে ন্যায়বিচার স্থাপন করেন,ততদিন তিনি নিস্তেজ হবেন না কিংবা হাল ছেড়ে দেবেন না। দ্বীপগুলো তাঁর আইনের* জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে।  ৫  মহান ও সত্য ঈশ্বর যিহোবা,যিনি আকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং সেটাকে বিছিয়েছেন,পৃথিবী এবং সেটাতে উৎপাদিত সমস্ত কিছু বিস্তার করেছেন,সেটাতে বসবাসরত মানুষকে শ্বাস দিয়েছেনএবং যারা সেটাতে চলাফেরা করে, তাদের জীবনীশক্তি দিয়েছেন,তিনি এই কথা বলেন:  ৬  “আমি যিহোবা, আমি ন্যায়বিচার করার জন্য তোমাকে ডেকেছি,আমি তোমার হাত ধরেছি। আমি তোমাকে সুরক্ষিত রাখব, তুমি আমার ও জাতিগুলোর মাঝে চুক্তিস্বরূপ হবেএবং জাতিগুলোর জন্য আলো হয়ে উঠবে,  ৭  যাতে তুমি অন্ধদের চোখ খুলে দাও,অন্ধকার গর্ত থেকে বন্দিদের বের করে আনএবং যারা কারাগারে অন্ধকারে বসে রয়েছে, তাদের সেখান থেকে মুক্ত কর।  ৮  আমি যিহোবা। এটাই আমার নাম। আমি আমার গৌরব অন্য কাউকে দিই না*কিংবা আমার প্রশংসা কোনো খোদাই-করা প্রতিমাকে দিই না।  ৯  দেখো, আগেকার বিষয়গুলো শেষ হয়ে গিয়েছে,এখন আমি নতুন বিষয়গুলো সম্বন্ধে ঘোষণা করছি। সেগুলো ঘটার আগে আমি তোমাদের সেগুলোর বিষয়ে জানাচ্ছি।” ১০  তোমরা যারা সমুদ্রে নেমে যাও ও সেইসঙ্গে সমুদ্রে থাকা সমস্ত কিছু,দ্বীপগুলো এবং সেগুলোর বাসিন্দারা,যিহোবার উদ্দেশে একটা নতুন গান গাও,পৃথিবীর প্রান্তগুলো থেকে তাঁর প্রশংসায় গান গাও। ১১  প্রান্তর এবং সেটার নগরগুলো চিৎকার করুক,কেদরের গ্রামগুলোও তা করুক। শৈলের বাসিন্দারা আনন্দে চিৎকার করুক,তারা পর্বতের চূড়া থেকে চিৎকার করুক। ১২  তারা যিহোবার গৌরব করুকএবং দ্বীপগুলোতে তাঁর প্রশংসা করুক। ১৩  যিহোবা শক্তিশালী পুরুষের মতো বের হবেন। তিনি বীরযোদ্ধার মতো তাঁর উদ্যোগকে জাগিয়ে তুলবেন। তিনি চিৎকার করে যুদ্ধের ঘোষণা করবেন,তিনি নিজেকে তাঁর শত্রুদের চেয়েও বেশি শক্তিশালী বলে প্রমাণিত করবেন। ১৪  “আমি অনেক দিন ধরে চুপ করে রয়েছি। আমি নীরব থেকেছি আর নিজেকে আটকে রেখেছি। এখন আমি জন্ম দিচ্ছে এমন মহিলার মতো আর্তনাদ করব, হাঁপাব এবং জোরে জোরে শ্বাস নেব। ১৫  আমি পাহাড়পর্বতগুলোকে ধ্বংস করে দেব,সেগুলোর সমস্ত গাছপালা শুকিয়ে দেব,নদীগুলোকে দ্বীপে* পরিণত করবআর নলখাগড়ায় ভরা পুকুরগুলোকে শুকিয়ে দেব। ১৬  আমি অন্ধদের এমন পথে নিয়ে যাব, যেটা তারা চেনে না,আমি তাদের অজানা পথে নিয়ে যাব। আমি তাদের সামনে অন্ধকারকে আলোতে পরিণত করব,এবড়োখেবড়ো জমিকে সমতল জমিতে পরিণত করব। এই সমস্ত কিছু আমি তাদের জন্য করব আর আমি তাদের পরিত্যাগ করব না।” ১৭  যারা খোদাই-করা মূর্তিগুলোর উপর আস্থা রাখে,যারা ধাতব* মূর্তিগুলোকে বলে: “তোমরা আমাদের ঈশ্বর,”তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং খুবই লজ্জিত করা হবে। ১৮  হে বধির ব্যক্তিরা, শোনো! হে অন্ধ ব্যক্তিরা, চোখ খুলে দেখো! ১৯  আমার দাস ছাড়া অন্ধ আর কে? আমার পাঠানো বার্তাবাহকের মতো বধির আর কে? আমি যাকে পুরস্কার দিয়েছি, তার মতো অন্ধ আর কে? যিহোবার দাসের মতো অন্ধ আর কে? ২০  তোমরা অনেক কিছু দেখ ঠিকই, কিন্তু মনোযোগ দাও না। তোমাদের কান খোলা আছে ঠিকই, কিন্তু তোমরা শোন না। ২১  যিহোবা যা সঠিক, তা-ই করেন,তাই তিনি আনন্দের সঙ্গে দেখিয়েছেন যে, তাঁর আইন* কত মহৎ ও গৌরবময়। ২২  কিন্তু, তারা সেই জাতি, যাদের লুট করে নেওয়া হয়েছেআর তারা সবাই গর্তে ফেঁসে রয়েছে এবং কারাগারে আটকে রয়েছে। তাদের লুট করে নেওয়া হয়েছে, তাদের উদ্ধার করার মতো কেউ নেইআর এমন কেউ নেই, যে তাদের হয়ে বলবে: “তাদের ফিরিয়ে আনো!” ২৩  তোমাদের মধ্যে কে এটা শুনবে? কে ভবিষ্যতের বিষয়ে ভেবে এটা শুনবে এবং এটার প্রতি মনোযোগ দেবে? ২৪  কে যাকোবকে লুট হতে দিয়েছেন? কে ইজরায়েলকে লুটকারীদের হাতে তুলে দিয়েছেন? যিহোবাই কি নন, যাঁর বিরুদ্ধে তারা পাপ করেছে,যাঁর পথে তারা চলতে প্রত্যাখ্যান করেছেএবং যাঁর আইন* তারা পালন করেনি? ২৫  তাই, তিনি তাদের উপর তাঁর রাগ,তাঁর ক্রোধের আগুন এবং যুদ্ধের ভয়াবহতা ঢেলে দিতে থাকলেন। তাদের চারপাশে থাকা সমস্ত কিছু ধ্বংস হয়ে গেল, কিন্তু তারপরও তারা একটুও মনোযোগ দিল না। তারা নিজেরাও পুড়ে গেল, কিন্তু তারপরও তারা সেটাকে কোনো গুরুত্ব দিল না।

পাদটীকাগুলো

বা “জাতিগুলোকে ন্যায়বিচার সম্বন্ধে শেখাবেন।”
বা “নির্দেশনার।”
বা “অন্য কারো সঙ্গে ভাগ করে নিই না।”
বা “উপকূলবর্তী এলাকায়।”
বা “ছাঁচে ঢালা।”
বা “নির্দেশনা।”
বা “নির্দেশনা।”