রোমীয়দের প্রতি চিঠি ১২:১-২১
১২ অতএব, হে ভাইয়েরা, ঈশ্বরের সমবেদনা অনুসারে আমি তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা তোমাদের দেহকে জীবিত, পবিত্র এবং ঈশ্বরের প্রীতিজনক বলি হিসেবে উৎসর্গ করো। এভাবে তোমরা তোমাদের যুক্তি করার ক্ষমতা সহকারে পবিত্র সেবা প্রদান করবে।
২ আর এই জগতের লোকদের অনুকরণ কোরো না, কিন্তু তোমাদের চিন্তাভাবনাকে পরিবর্তন করার মাধ্যমে রূপান্তরিত হও, যেন তোমরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কী: তাঁর ইচ্ছা উত্তম, প্রীতিজনক ও নিখুঁত।
৩ আমাকে যে-মহাদয়া দেখানো হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে আমি তোমাদের সবাইকে বলছি, নিজের বিষয়ে যেমন মনে করা উপযুক্ত, সেটার চেয়ে বড়ো বলে মনে কোরো না, কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের প্রত্যেককে যে-পরিমাণ বিশ্বাস দিয়েছেন,* সেই অনুসারে উত্তম বিচারবুদ্ধি দিয়ে নিজের বিষয়ে চিন্তা করো।
৪ ঠিক যেমন আমাদের এক দেহে অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে এবং সমস্ত অঙ্গের কাজ একইরকম নয়,
৫ তেমনই আমরা অনেক হলেও খ্রিস্টের সঙ্গে একতাবদ্ধ হয়ে এক দেহ এবং আমরা প্রত্যেকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত।
৬ আমাদের প্রতি যে-মহাদয়া দেখানো হয়েছে, সেই মহাদয়া অনুসারে আমরা ভিন্ন ভিন্ন দান পেয়েছি। সেই দান যদি ভবিষ্যদ্বাণী হয়, তা হলে এসো আমরা আমাদের বিশ্বাসের পরিমাণ অনুসারে ভবিষ্যদ্বাণী করি;
৭ কিংবা সেই দান যদি অন্যদের সেবা করার ক্ষমতা হয়, তা হলে এসো আমরা সেই সেবা চালিয়ে যাই; অথবা যে শিক্ষা দেয়, সে শিক্ষা দিয়ে চলুক;
৮ কিংবা যে উৎসাহ* দেয়, সে উৎসাহ* দিক; যে অন্যদের দান* করে, সে উদারভাবে তা করুক; যে মণ্ডলীর দেখাশোনা করে, সে অধ্যবসায়ের সঙ্গে তা করুক;* যে করুণা দেখায়, সে আনন্দের সঙ্গে তা দেখাক।
৯ তোমাদের প্রেম নিষ্কপট হোক। যা মন্দ, তা ঘৃণা করো; যা ভালো, তাতে আসক্ত থাকো।
১০ ভ্রাতৃপ্রেমে পরস্পরের প্রতি কোমল স্নেহ দেখাও। সমাদর দেখানোর ক্ষেত্রে নিজে থেকে এগিয়ে যাও।
১১ পরিশ্রমী* হও, অলস হোয়ো* না। পবিত্র শক্তির দ্বারা উদ্যোগে পরিপূর্ণ হও। যিহোবার* দাসত্ব করো।
১২ প্রত্যাশায় আনন্দ করো। ক্লেশের সময় ধৈর্য ধরো। অবিরত প্রার্থনা করো।
১৩ সহবিশ্বাসীদের* প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের সাহায্য করো। আতিথেয়তা দেখানোর অভ্যাস গড়ে তোলো।
১৪ যারা তাড়না করে, তাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে আশীর্বাদ চাও, তাদের অভিশাপ দিয়ো না।
১৫ যারা আনন্দ করে, তাদের সঙ্গে আনন্দ করো; যারা কাঁদে, তাদের সঙ্গে কাঁদো।
১৬ নিজের বিষয়ে তোমাদের যে-মনোভাব রয়েছে, অন্যদের প্রতিও সেই একই মনোভাব দেখাও; উদ্ধত হোয়ো না, বরং নম্র হও। নিজেদের দৃষ্টিতে বুদ্ধিমান* হোয়ো না।
১৭ মন্দের পরিশোধে কারো মন্দ কোরো না। সকল মানুষের দৃষ্টিতে যা উত্তম, তা করার প্রচেষ্টা করো।
১৮ যতটা সম্ভব, সমস্ত মানুষের সঙ্গে শান্তিতে বাস করার জন্য তোমাদের সর্বোত্তমটা করো।
১৯ হে প্রিয়েরা, তোমরা নিজেরা প্রতিশোধ নিয়ো না, কিন্তু মন্দ বিষয়গুলোর জন্য ঈশ্বরকেই ক্রোধ প্রকাশ করতে দাও; কারণ লেখা আছে: “যিহোবা* বলেন, ‘প্রতিশোধ নেওয়া আমারই কাজ; আমিই প্রতিফল দেব।’”
২০ কিন্তু, “তোমার শত্রু যদি ক্ষুধার্ত হয়, তা হলে তাকে খাবার দাও; সে যদি তৃষ্ণার্ত হয়, তা হলে তাকে পান করার জন্য কিছু দাও; কারণ তা করার মাধ্যমে তুমি তার মাথার উপর জ্বলন্ত কয়লা স্তূপ করে রাখবে।”*
২১ তুমি মন্দের কাছে পরাজিত হোয়ো না, বরং সবসময় উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাজিত করো।
পাদটীকাগুলো
^ বা “বিশ্বাস ভাগ করে দিয়েছেন।”
^ বা “উপদেশ।”
^ বা “উপদেশ।”
^ বা “যে বণ্টন।”
^ বা “যে মণ্ডলীতে নেতৃত্ব নেয়, সে আন্তরিকভাবে তা নিক।”
^ বা “অধ্যবসায়ী; উদ্যোগী।”
^ বা “তোমার কাজের ব্যাপারে গড়িমসি কোরো।”
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ আক্ষ., “পবিত্র ব্যক্তিদের।”
^ বা “বিচক্ষণ।”
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ অর্থাৎ সেই ব্যক্তির মন গলানো এবং রাগ কমানো।