করিন্থীয়দের প্রতি প্রথম চিঠি ৯:১-২৭
৯ আমি কি স্বাধীন নই? আমি কি একজন প্রেরিত নই? আমি কি আমাদের প্রভু যিশুকে দেখিনি? প্রভুর সেবায় তোমরাই কি আমার কাজের ফল নও?
২ আমি অন্যদের জন্য একজন প্রেরিত না হলেও তোমাদের জন্য অবশ্যই একজন প্রেরিত! তোমরাই হলে সেই প্রমাণ, যা দেখায়, আমি প্রভুর একজন প্রেরিত।
৩ যারা আমার সমালোচনা করে, তাদের আমি এই উত্তর দিচ্ছি:
৪ আমাদের কি খাওয়া-দাওয়া করার অধিকার নেই?
৫ অন্যান্য প্রেরিতের, প্রভু যিশুর ভাইদের এবং কৈফার* মতো আমাদেরও কি একজন খ্রিস্টান বোনকে স্ত্রী হিসেবে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার অধিকার নেই?
৬ কিংবা শুধুমাত্র বার্ণবা ও আমাকেই কি জীবিকানির্বাহের জন্য কাজ করতে হবে?
৭ কোনো সৈন্য কি নিজের খরচে সেনাবাহিনীতে কাজ করে? যে আঙুর খেত করে, সে কি সেটার ফল খায় না? যে মেষপাল চরায়, সে কি পাল থেকে কিছুটা দুধ সংগ্রহ করে না?
৮ আমি কি কেবল মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এইসমস্ত বিষয় বলছি? ব্যবস্থাও* কি এইসমস্ত বিষয়ে বলে না?
৯ কারণ মোশির ব্যবস্থায় লেখা আছে: “কোনো ষাঁড় যখন শস্য মাড়াই করে, তখন তুমি সেই ষাঁড়ের মুখে জালতি বাঁধবে না।” ঈশ্বর কি ষাঁড়ের বিষয়ে চিন্তা করে এই আদেশ দিয়েছেন?
১০ নাকি তিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন বলে এই কথা বলেছেন? আসলে এটা আমাদের জন্যই লেখা হয়েছিল, কারণ যে-ব্যক্তি চাষ করে এবং যে-ব্যক্তি শস্য মাড়াই করে, উভয়েরই শস্য পাওয়ার আশাতেই তা করা উচিত।
১১ আমরা যেহেতু তোমাদের মধ্যে ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া বিষয়গুলো বপন করেছি, তাই আমাদের বস্তুগত চাহিদা পূরণ করার জন্য এখন তোমাদের কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করা কি ভুল হবে?
১২ অন্য লোকদের যদি তোমাদের কাছ থেকে এইরকম সাহায্য লাভ করার অধিকার থাকে, তা হলে আমাদের কি আরও বেশি অধিকার নেই? তবে, আমরা কখনো এই অধিকার ব্যবহার করিনি, বরং আমরা সমস্ত বিষয় সহ্য করছি, যাতে আমরা খ্রিস্টের বিষয়ে সুসমাচারের ক্ষেত্রে কোনোভাবে বাধা হয়ে না দাঁড়াই।
১৩ তোমরা কি জান না, যে-লোকেরা মন্দিরে দায়িত্ব পালন করে, তারা মন্দিরের খাবার খায় আর যারা নিয়মিতভাবে বেদিতে সেবা করে, তারা বেদিতে উৎসর্গীকৃত দ্রব্যের একটা অংশ পায়?
১৪ একইভাবে, প্রভু আদেশ দিয়েছেন যে, যারা সুসমাচার ঘোষণা করে, তারা যেন সুসমাচারের মাধ্যমেই নিজেদের ভরণ-পোষণ জোগায়।
১৫ কিন্তু, আমি এই ব্যবস্থা থেকে কোনো সুযোগই গ্রহণ করিনি। আমার প্রতি এইরকম করা হোক বলে আমি এই কথাগুলো লিখছি না, কারণ গর্ব করার যে-অধিকার আমার রয়েছে, তা কেউ কেড়ে নেওয়ার চেয়ে বরং আমার মৃত্যুবরণ করা আরও উত্তম!
১৬ আমি যদি সুসমাচার ঘোষণা করে থাকি, তা হলে আমার গর্ব করার কিছু নেই, কারণ সুসমাচার ঘোষণা করা আমার দায়িত্ব। ধিক আমাকে, যদি আমি সুসমাচার ঘোষণা না করি!
১৭ আমি যদি ইচ্ছুক মন নিয়ে এই কাজ করি, তা হলে আমি পুরস্কার লাভ করব; কিন্তু আমি যদি আমার ইচ্ছার বিপরীতেও তা করি, তবুও আমাকে আস্থা সহকারে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আমি তা করি।
১৮ তাহলে আমার পুরস্কার কী? আমার পুরস্কার এটাই যে, আমি বিনা মূল্যে সুসমাচার ঘোষণা করি, যেন সুসমাচারের বিষয়ে আমার যে-অধিকার রয়েছে, সেটার অপব্যবহার করা এড়াতে পারি।
১৯ যদিও আমি স্বাধীন, তবুও আমি নিজেকে সকলের দাস করেছি, যাতে আমি যত বেশি লোককে সম্ভব লাভ করতে পারি।
২০ যিহুদিদের কাছে আমি যিহুদির মতো হয়েছি, যেন তাদের লাভ করতে পারি; আমি নিজে আইনের অধীনে না থাকা সত্ত্বেও, আইনের অধীনে থাকা লোকদের কাছে, আইনের অধীনে থাকা লোকের মতো হয়েছি, যেন তাদের লাভ করতে পারি।
২১ আমি যে ঈশ্বরের আইন অনুসরণ করি না, এমন নয়, কিন্তু আমি খ্রিস্টের আইনের অধীন। তা সত্ত্বেও, আইনকানুনবিহীন লোকদের কাছে আমি আইনকানুনবিহীন লোকের মতো হয়েছি, যেন তাদের লাভ করতে পারি।
২২ দুর্বলদের কাছে আমি দুর্বল হয়েছি, যেন তাদের লাভ করতে পারি। সমস্ত ধরনের লোককে সাহায্য করার জন্য আমি সমস্ত কিছুই করার চেষ্টা করেছি, যেন আমি যেকোনো উপায়েই হোক, কয়েক জনকে রক্ষা করতে পারি।
২৩ আমি সমস্ত কিছু সুসমাচারের জন্যই করি, যেন তা অন্যদের কাছে প্রচার করতে পারি।
২৪ তোমরা কি জান না, যারা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, তারা সকলে দৌড়ায়, কিন্তু কেবল এক জনই পুরস্কার পায়? তোমরা এমনভাবে দৌড়াও, যেন পুরস্কার পাও।
২৫ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় এমন প্রত্যেকে* সমস্ত বিষয়ে আত্মসংযম দেখিয়ে থাকে। তবে, তারা নশ্বর মুকুট পাওয়ার জন্য আত্মসংযম দেখায়, কিন্তু আমরা অবিনশ্বর মুকুট পাওয়ার জন্য আত্মসংযম দেখাই।
২৬ অতএব, আমি লক্ষ্যহীনভাবে দৌড়াচ্ছি না; আমি এমনভাবে লড়াই করছি না, যেন শূন্যে আঘাত করছি;
২৭ বরং আমি আমার দেহকে প্রহার করি* এবং সেটাকে দাস করে রাখি, যাতে অন্যদের কাছে প্রচার করার পর আবার আমি নিজে কোনোভাবে অযোগ্য হয়ে না পড়ি।
পাদটীকাগুলো
^ যাকে পিতর বলেও ডাকা হয়।
^ বা “প্রত্যেক প্রতিযোগী।”
^ বা “দেহকে শাস্তি দিই; দেহকে কঠোরভাবে শাসন করি।”