পিতরের প্রথম চিঠি ৩:১-২২

  • স্ত্রীরা ও স্বামীরা (১-৭)

  • সহানুভূতি দেখাও; শান্তি লাভ করার প্রচেষ্টা করো (৮-১২)

  • ধার্মিক হওয়ার কারণে কষ্ট ভোগ করা (১৩-২২)

    • তোমাদের যে-প্রত্যাশা রয়েছে, সেই বিষয়ে উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থেকো (১৫)

    • বাপ্তিস্ম এবং এক উত্তম বিবেক (২১)

 একইভাবে স্ত্রীরা, তোমরা নিজ নিজ স্বামীর বশীভূত থাকো, যেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈশ্বরের বাক্যের বাধ্য না হলেও তোমাদের আচরণের মাধ্যমে বিনা বাক্যে বাধ্য হয়। ২  কারণ তারা নিজেরাই তোমাদের ভালো* আচরণ ও সেইসঙ্গে গভীর সম্মান দেখতে পাবে। ৩  তোমরা বাহ্যিক সাজসজ্জা অর্থাৎ বিভিন্ন কায়দায় চুল বাঁধাকে এবং সোনার গয়না কিংবা দামি পোশাক দিয়ে নিজেদের সজ্জিত করাকে প্রাধান্য দিয়ো না, ৪  বরং অবিনশ্বর সাজসজ্জা অর্থাৎ শান্তভাব ও মৃদুতার মাধ্যমে তোমাদের হৃদয়কে, তোমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে সজ্জিত করো। কারণ এই ধরনের সাজসজ্জাই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বহুমূল্য। ৫  কারণ অতীতের যে-বিশ্বস্ত* নারীরা ঈশ্বরের উপর প্রত্যাশা রাখতেন, তারা এভাবেই নিজেদের সজ্জিত করতেন এবং নিজ নিজ স্বামীর বশীভূত থাকতেন, ৬  ঠিক যেমন সারা অব্রাহামের বাধ্য ছিলেন এবং তাকে প্রভু বলে ডাকতেন। আর তোমরা যদি ভালো কাজ করে চল এবং ভয়ের কাছে নতিস্বীকার না কর, তা হলে তোমরা সারার সন্তান হয়ে উঠতে পারবে। ৭  একইভাবে স্বামীরা, তোমরা নিজ নিজ স্ত্রীর সঙ্গে সবসময় বিবেচনা দেখিয়ে* বাস করো। যেহেতু নারীরা তুলনামূলকভাবে দুর্বল, ঠিক ভঙ্গুর পাত্রের মতো এবং তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে তারাও ঈশ্বরের মহাদয়ার ফলে প্রাপ্ত জীবনের উত্তরাধিকারী, তাই তাদের সমাদর করো। নতুবা ঈশ্বর তোমাদের প্রার্থনা শুনবেন না। ৮  অবশেষে বলি, তোমরা সকলে একমনা* হও এবং সহানুভূতি, ভ্রাতৃপ্রেম, কোমল সমবেদনা ও নম্রতা দেখাও। ৯  আঘাতের পরিশোধে কাউকে আঘাত কোরো না অথবা অপমানের পরিশোধে কাউকে অপমান কোরো না। বরং, তাদের প্রতি ভালো কাজ* কোরো, কারণ ঈশ্বর তোমাদের এইজন্যই আহ্বান করেছেন, যেন তোমরা আশীর্বাদ লাভ কর।* ১০  কারণ লেখা আছে: “যে-কেউ জীবন উপভোগ করতে চায় এবং ভালো দিন দেখতে চায়, সে যেন মন্দ কথা বলা থেকে তার জিভকে এবং প্রতারণামূলক কথা বলা থেকে তার ঠোঁটকে রক্ষা করে। ১১  সে মন্দতা থেকে দূরে থাকুক এবং ভালো কাজ করুক; সে শান্তি লাভ করার এবং তা বজায় রাখার প্রচেষ্টা করুক। ১২  কারণ ধার্মিকদের প্রতি যিহোবার* দৃষ্টি রয়েছে এবং তাদের বিনতির প্রতি তাঁর কর্ণ রয়েছে কিন্তু যারা মন্দ কাজ করে, যিহোবা* তাদের দিক থেকে তাঁর মুখ ফিরিয়ে নেন।” ১৩  তোমরা যদি ভালো কাজ করার জন্য উদ্যোগী হয়ে থাক, তা হলে কেই-বা তোমাদের ক্ষতি করবে? ১৪  কিন্তু, ধার্মিক হওয়ার কারণে তোমাদের যদি কষ্ট ভোগ করতেও হয়, তবুও তোমরা সুখী। তবে, লোকেরা যেটাতে ভয় পায়, তোমরা সেটাতে ভয় পেয়ো না* কিংবা তোমরা দুশ্চিন্তা কোরো না। ১৫  বরং তোমরা তোমাদের হৃদয়ে স্বীকার করো, খ্রিস্টই হলেন প্রভু এবং তিনি পবিত্র। আর তোমাদের যে-প্রত্যাশা রয়েছে, সেটার কারণ সম্বন্ধে যে-কেউ তোমাদের প্রশ্ন করে, তাকে উত্তর দেওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত থেকো, তবে মৃদুতা এবং গভীর সম্মানের সঙ্গে উত্তর দিয়ো। ১৬  এক উত্তম বিবেক বজায় রাখো, যাতে লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে যা-ই বলুক না কেন, খ্রিস্টের অনুসারী হিসেবে তোমাদের ভালো আচরণ দেখে তারা লজ্জিত হয়। ১৭  কারণ মন্দ কাজ করে দুঃখ ভোগ করার চেয়ে বরং যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা হয়, তা হলে ভালো কাজ করে দুঃখ ভোগ করা আরও ভালো। ১৮  কারণ একজন ধার্মিক ব্যক্তি খ্রিস্টও অধার্মিক লোকদের পাপের কারণে এক বারই মৃত্যুবরণ করেছিলেন, যাতে তিনি তোমাদের ঈশ্বরের দিকে পরিচালিত করতে পারেন। তাঁকে মাংসিক দেহে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু স্বর্গীয় দেহে জীবিত করা হয়েছিল। ১৯  আর স্বর্গীয় দেহ লাভ করায় তিনি সেই কারাবদ্ধ স্বর্গদূতদের কাছে গিয়ে বিচারবার্তা ঘোষণা করেছিলেন, ২০  যারা অতীতে নোহের দিনে অবাধ্য হয়েছিল। সেই সময়কালে যখন জাহাজ নির্মাণ করা হচ্ছিল, তখন ঈশ্বর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিলেন। জলের মধ্য দিয়ে সেই জাহাজে করে অল্প কয়েক জন ব্যক্তি অর্থাৎ আট জন ব্যক্তি রক্ষা পেয়েছিল। ২১  আর এই ঘটনার প্রতিরূপ হল বাপ্তিস্ম, যা এখন যিশু খ্রিস্টের পুন­রুত্থানের* মাধ্যমে তোমাদের রক্ষা করছে (দেহের ময়লা দূর করার মাধ্যমে নয়, বরং এক উত্তম বিবেকের জন্য ঈশ্বরের কাছে অনুরোধ করার মাধ্যমে)। ২২  খ্রিস্ট স্বর্গে গিয়েছেন এবং ঈশ্বরের ডান দিকে রয়েছেন। আর স্বর্গদূতদের এবং যাদের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তাদের তাঁর বশীভূত করা হয়েছে।

পাদটীকাগুলো

আক্ষ., “বিশুদ্ধ।”
আক্ষ., “যে-পবিত্র।”
আক্ষ., “সবসময় জ্ঞান সহকারে।”
বা “সকলে চিন্তাভাবনায় এক।”
আক্ষ., “তাদের আশীর্বাদ।”
আক্ষ., “তোমরা আশীর্বাদের উত্তরাধিকারী হও।”
শব্দকোষ দেখুন।
শব্দকোষ দেখুন।
বা সম্ভবত, “তবে, তোমরা লোকদের হুমকিতে ভয় পেয়ো না।”
শব্দকোষ দেখুন।