রাজাবলির প্রথম খণ্ড ১৫:১-৩৪
১৫ নবাটের ছেলে যারবিয়ামের রাজত্বের ১৮তম বছরে অবিয়াম যিহূদার রাজা হলেন।
২ অবিয়াম জেরুসালেমে তিন বছর রাজত্ব করলেন। তার মায়ের নাম ছিল মাখা, যিনি অবীশালোমের নাতনি ছিলেন।
৩ অবিয়ামের আগে তার বাবা যে-পাপগুলো করেছিলেন, তিনিও সেই পাপগুলোই করলেন। তার পূর্বপুরুষ দায়ূদ যেভাবে সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের সেবা করেছিলেন, অবিয়াম সেভাবে তার ঈশ্বর যিহোবার সেবা করলেন না।
৪ তবুও, দায়ূদের ঈশ্বর যিহোবা দায়ূদের জন্য জেরুসালেমে তার প্রদীপ জ্বলতে দিলেন। ঈশ্বর তার ছেলেকে রাজা হিসেবে নিযুক্ত করলেন আর জেরুসালেমকে থাকতে দিলেন।
৫ যিহোবা এমনটা করলেন কারণ দায়ূদ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করেছিলেন। তিনি সারাজীবন ধরে ঈশ্বরের সমস্ত আজ্ঞা পালন করেছিলেন, কখনো কোনো আজ্ঞা লঙ্ঘন করেননি। কেবলমাত্র হিত্তীয় ঊরিয়ের ক্ষেত্রেই তিনি এমনটা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
৬ রহবিয়াম যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন তার ও যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ হল।
৭ অবিয়ামের জীবনের বাকি কাহিনি এবং তার সমস্ত কাজের বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে। অবিয়াম ও যারবিয়ামের মধ্যেও যুদ্ধ হত।
৮ তারপর, অবিয়াম মারা গেলেন* আর তাকে দায়ূদ-নগরে কবর দেওয়া হল। অবিয়ামের জায়গায় তার ছেলে আসা রাজা হলেন।
৯ ইজরায়েলে রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের ২০তম বছরে আসা যিহূদার উপর রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
১০ আসা জেরুসালেমে ৪১ বছর রাজত্ব করলেন। তার ঠাকুরমার নাম ছিল মাখা, যিনি অবীশালোমের নাতনি ছিলেন।
১১ আসা তার পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতো যিহোবার দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করলেন।
১২ তিনি দেশ থেকে মন্দিরের পুরুষ-বেশ্যাদের তাড়িয়ে দিলেন। তার পূর্বপুরুষেরা যে-জঘন্য মূর্তিগুলো* তৈরি করেছিলেন, তিনি সেই সমস্ত মূর্তি দূর করে দিলেন।
১৩ তিনি এমনকী তার ঠাকুরমা মাখাকে রাজমাতার পদ থেকে সরিয়ে দিলেন কারণ মাখা উপাসনার খুঁটিটার* উপাসনা করার জন্য একটা অশ্লীল মূর্তি তৈরি করেছিলেন। আসা তার অশ্লীল মূর্তিটা কেটে ফেললেন আর সেটাকে কিদ্রোণ উপত্যকায় পুড়িয়ে দিলেন।
১৪ কিন্তু, উঁচু জায়গাগুলো দূর করা হল না। তবুও, আসা সারাজীবন সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে যিহোবার সেবা করলেন।
১৫ তিনি যিহোবার গৃহে সেই সমস্ত সোনা, রুপো এবং অন্যান্য বাসনপত্র নিয়ে এলেন, যেগুলো তিনি এবং তার বাবা পবিত্র করেছিলেন।
১৬ আসা এবং ইজরায়েলের রাজা বাশার মধ্যে সবসময় যুদ্ধ হত।
১৭ ইজরায়েলের রাজা বাশা যিহূদার উপর আক্রমণ করলেন। তিনি রামা নগর নির্মাণ* করতে শুরু করলেন, যাতে যিহূদার রাজা আসার এলাকা থেকে কেউ যেতে কিংবা আসার এলাকায় কেউ আসতে না পারে।
১৮ তখন আসা যিহোবার গৃহের ধনসম্পদের এবং রাজপ্রাসাদের ধনসম্পদের অবশিষ্ট সমস্ত সোনা-রুপো নিয়ে সেগুলো তার দাসদের হাতে সিরিয়ার রাজা বিন্হদদের কাছে পাঠালেন। বিন্হদদ টব্রিম্মোণের ছেলে এবং হিষিয়োণের নাতি ছিলেন আর তিনি দামেস্কে থাকতেন। আসা বিন্হদদের কাছে এই বার্তা পাঠালেন:
১৯ “আপনার বাবা এবং আমার বাবা যেমন নিজেদের মধ্যে চুক্তি করেছিলেন, তেমনই আমরাও নিজেদের মধ্যে চুক্তি করেছি। দেখুন! আমি আপনার জন্য উপহার হিসেবে সোনা ও রুপো পাঠাচ্ছি। আপনি এসে ইজরায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার চুক্তি ভেঙে দিন, তা হলে সে আমার এলাকা ছেড়ে চলে যাবে।”
২০ বিন্হদদ রাজা আসার কথা মেনে নিলেন আর ইজরায়েলের নগরগুলোর উপর আক্রমণ করার জন্য তার সেনাপতিদের পাঠালেন। তারা গিয়ে ইয়োন, দান, আবেল-বৈৎমাখা, পুরো কিন্নেরৎ ও সেইসঙ্গে নপ্তালির পুরো এলাকা ধ্বংস করে দিল।
২১ বাশা যখন এই বিষয়ে জানতে পারলেন, তখন তিনি সঙ্গেসঙ্গে রামা নির্মাণ* করা ছেড়ে দিয়ে তির্সায় থাকতে লাগলেন।
২২ তারপর, রাজা আসা যিহূদার সমস্ত লোককে ডেকে পাঠালেন, কাউকেই বাদ দিলেন না। আর তারা রামা থেকে সেই সমস্ত পাথর ও কড়িকাঠ নিয়ে চলে গেল, যেগুলো দিয়ে বাশা রামা নগরটা নির্মাণ করছিলেন। সেই জিনিসগুলো দিয়ে রাজা আসা মিস্পা নগর এবং বিন্যামীনের এলাকার গেবা নগর নির্মাণ* করলেন।
২৩ আসার জীবনের বাকি কাহিনি, তার সমস্ত বড়ো বড়ো কাজের বিবরণ এবং তিনি যে-নগরগুলো নির্মাণ* করেছিলেন, সেই সমস্ত কিছুর বিষয়ে যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে। কিন্তু, বৃদ্ধবয়সে আসা পায়ের রোগে ভুগলেন।
২৪ তারপর, আসা মারা গেলেন* আর তাকে তার পূর্বপুরুষের নগর দায়ূদ-নগরে তার পূর্বপুরুষদের কবরে কবর দেওয়া হল। তার জায়গায় তার ছেলে যিহোশাফট রাজা হলেন।
২৫ যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যারবিয়ামের ছেলে নাদব ইজরায়েলের রাজা হলেন। তিনি ইজরায়েলের উপর দু-বছর রাজত্ব করলেন।
২৬ নাদব যিহোবার দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতে থাকলেন। তিনি তার বাবার পথেই চললেন এবং তার বাবা যে-সমস্ত পাপ করেছিলেন এবং ইজরায়েলকে দিয়ে যে-পাপগুলো করিয়েছিলেন, তিনিও সেই পাপগুলোই করলেন।
২৭ ইষাখর বংশের অহিয়ের ছেলে বাশা নাদবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। নাদব এবং পুরো ইজরায়েল যখন পলেষ্টীয়দের নগর গিব্বথোন অবরোধ করে ছিলেন, তখন বাশা নাদবকে গিব্বথোনে মেরে ফেললেন।
২৮ এভাবে বাশা নাদবকে মেরে নিজে রাজা হলেন। এই ঘটনাটা যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে ঘটেছিল।
২৯ বাশা রাজা হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে যারবিয়ামের পুরো পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন, এক জনকেও জীবিত রাখলেন না। এভাবে যিহোবার সেই কথা পূর্ণ হল, যেটা তিনি তাঁর দাস, শীলোর বাসিন্দা অহিয়ের মাধ্যমে বলেছিলেন।
৩০ এমনটা ঘটল কারণ যারবিয়াম পাপ করেছিলেন এবং ইজরায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন আর ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবাকে প্রচণ্ড রাগিয়ে তুলেছিলেন।
৩১ নাদবের জীবনের বাকি কাহিনি এবং তার সমস্ত কাজের বিবরণ ইজরায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে।
৩২ আসা এবং ইজরায়েলের রাজা বাশার মধ্যে সবসময় যুদ্ধ হত।
৩৩ যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে অহিয়ের ছেলে বাশা পুরো ইজরায়েলের উপর রাজা হলেন। বাশা ইজরায়েলের তির্সা থেকে ২৪ বছর রাজত্ব করলেন।
৩৪ কিন্তু, তিনি যিহোবার দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতে থাকলেন। তিনি যারবিয়ামের পথেই চললেন আর যারবিয়াম যে-সমস্ত পাপ করেছিলেন এবং ইজরায়েলকে দিয়ে যে-পাপগুলো করিয়েছিলেন, তিনিও সেই পাপগুলোই করলেন।
পাদটীকাগুলো
^ আক্ষ., “অবিয়াম তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শুয়ে পড়লেন।”
^ এরজন্য ব্যবহৃত ইব্রীয় শব্দ সম্ভবত “মলের” জন্য ব্যবহৃত শব্দের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আর এটা এই বিষয়টা বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে যে, বস্তুটা কতটা ঘৃণ্য।
^ শব্দকোষ দেখুন।
^ বা “দৃঢ়; পুনর্নির্মাণ।”
^ বা “দৃঢ়; পুনর্নির্মাণ।”
^ বা “দৃঢ়; পুনর্নির্মাণ।”
^ বা “দৃঢ়; পুনর্নির্মাণ।”
^ আক্ষ., “আসা তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শুয়ে পড়লেন।”