বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড ১৩:১-২২

১৩  যারবিয়ামের রাজত্বের ১৮তম বছরে অবিয় যিহূদার রাজা হলেন। ২  অবিয় জেরুসালেমে তিন বছর রাজত্ব করলেন। তার মায়ের নাম ছিল মীখায়া, যিনি গিবিয়ার বাসিন্দা ঊরীয়েলের মেয়ে ছিলেন। অবিয় ও যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ হত। ৩  অবিয় ৪,০০,০০০ প্রশিক্ষিত* বীরযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধে গেলেন আর যারবিয়াম তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ৮,০০,০০০ প্রশিক্ষিত* বীরযোদ্ধাকে নিয়ে দাঁড়ালেন। ৪  অবিয় ইফ্রয়িমের পার্বত্য এলাকায় সমারয়িম পর্বতের উপরে দাঁড়ালেন আর বললেন: “যারবিয়াম এবং পুরো ইজরায়েল, আমার কথা শোনো। ৫  তোমরা কি জান না যে, ইজরায়েলের ঈশ্বর যিহোবা দায়ূদ এবং তার ছেলেদের সঙ্গে লবণ চুক্তি* করে ইজরায়েলের রাজত্ব চিরকালের জন্য তাদের দিয়ে দিয়েছেন? ৬  কিন্তু, নবাটের ছেলে যারবিয়াম, যে দায়ূদের ছেলে শলোমনের দাস ছিল, সে নিজের প্রভুর বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াল এবং বিদ্রোহ করল। ৭  আর বেকার ও অপদার্থ লোকেরা এসে তার কাছে জড়ো হতে থাকল। তারা শলোমনের ছেলে রহবিয়ামের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী বলে প্রমাণিত হল কারণ রহবিয়াম যুবক ও দুর্বল মনের ছিলেন আর তিনি তাদের সামনে দাঁড়াতে পারলেন না। ৮  “আর এখন তোমরা ভাবছ যে, তোমরা যিহোবার রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে, যেটা দায়ূদের ছেলেদের হাতে রয়েছে কারণ তোমরা সংখ্যায় অনেক আর তোমাদের কাছে সেই সোনার বাছুরগুলো রয়েছে, যেগুলো যারবিয়াম তোমাদের দেবতা হিসেবে তৈরি করেছে। ৯  তোমরা যিহোবার যাজকদের অর্থাৎ হারোণের বংশধরদের এবং লেবীয়দের তাড়িয়ে দিয়েছ আর তাদের জায়গায় নিজেরাই অন্য লোকদের যাজক হিসেবে নিযুক্ত করেছ, ঠিক যেমনটা অন্য দেশের লোকেরা করে থাকে। যে-ব্যক্তিই একটা ষাঁড় এবং সাতটা পুংমেষ নিয়ে আসে, সেই ব্যক্তিই সেই মূর্তিগুলোর যাজক হয়ে যায়, যেগুলো ঈশ্বর নয়। ১০  কিন্তু, আমাদের ঈশ্বর হলেন যিহোবা আর আমরা তাঁকে ছেড়ে দিইনি। আমাদের যাজকেরা হল হারোণের বংশধরেরা, যারা যিহোবার সেবা করে আর লেবীয়েরা তাদের সাহায্য করে। ১১  তারা প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় যিহোবার উদ্দেশে হোমবলি উৎসর্গ করে, যাতে বলি থেকে ধোঁয়া বের হয়, সুগন্ধি ধূপ জ্বালায়, খাঁটি সোনার টেবিলের উপর রুটির সারি* রাখে আর প্রত্যেক সন্ধ্যায় সোনার প্রদীপদানিতে থাকা প্রদীপগুলো জ্বালায় কারণ আমাদের ঈশ্বর যিহোবার প্রতি আমাদের যে-কর্তব্য রয়েছে, আমরা সেটা পালন করি। কিন্তু, তোমরা তাঁকে ছেড়ে দিয়েছ। ১২  এখন দেখো! সত্য ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে রয়েছেন আর তিনি আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর যাজকেরাও আমাদের সঙ্গে রয়েছে, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার জন্য হাতে তূরী নিয়ে রয়েছে। হে ইজরায়েলের লোকেরা, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যিহোবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ কোরো না কারণ তোমরা সফল হবে না।” ১৩  কিন্তু, যারবিয়াম একদল সৈন্যকে পাঠালেন, যাতে তারা তাদের পিছনের দিকে ওত পেতে বসে থাকে। এভাবে তার একটা সৈন্যদল যিহূদার সামনে ছিল আর পিছনের দিকে একদল সৈন্য ওত পেতে বসে ছিল। ১৪  যিহূদার লোকেরা যখন পিছনে ঘুরল, তখন তারা দেখল যে, সামনে ও পিছনে, দু-দিক থেকেই তাদের উপর আক্রমণ হতে যাচ্ছে। তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করে যিহোবাকে ডাকতে লাগল আর যাজকেরা জোরে জোরে তূরী বাজাল। ১৫  তারপর, যিহূদার লোকেরা জোরে চিৎকার করে যুদ্ধের ঘোষণা করল। তারা যখন এমনটা করল, তখন সত্য ঈশ্বর অবিয় ও যিহূদার সামনে যারবিয়াম এবং পুরো ইজরায়েলকে পরাজিত করলেন। ১৬  ইজরায়েলীয়েরা যিহূদার সামনে থেকে পালিয়ে গেল আর ঈশ্বর যিহূদার লোকদের হাতে তাদের তুলে দিলেন। ১৭  অবিয় এবং তার লোকেরা এত লোককে হত্যা করল যে, ইজরায়েলের ৫,০০,০০০ প্রশিক্ষিত* সৈন্য মারা গেল। ১৮  এভাবে ইজরায়েলের লোকদের নত করা হল, কিন্তু যিহূদার লোকেরা শক্তিশালী বলে প্রমাণিত হল কারণ তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যিহোবার উপর নির্ভর করেছিল। ১৯  অবিয় যারবিয়ামের পিছু ধাওয়া করতে থাকলেন আর তিনি যারবিয়ামের কয়েকটা নগর দখল করে নিলেন। তিনি বৈথেল এবং সেটার আশেপাশের নগর, যিশানা এবং সেটার আশেপাশের নগর আর ইফ্রোণ এবং সেটার আশেপাশের নগর দখল করে নিলেন। ২০  যতদিন অবিয় রাজত্ব করলেন, ততদিন যারবিয়াম আর আগের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারলেন না। এরপর, যিহোবা তাকে আঘাত করলেন আর তিনি মারা গেলেন। ২১  কিন্তু, অবিয় শক্তিশালী হতে থাকলেন। কিছুসময় পর, তিনি ১৪ জন মহিলাকে বিয়ে করলেন আর তার ২২টি ছেলে এবং ১৬টি মেয়ে হল। ২২  অবিয়ের জীবনের বাকি কাহিনি আর তিনি যে-সমস্ত কাজ করেছিলেন এবং কথা বলেছিলেন, সেই সমস্ত কিছুর বিবরণ ভাববাদী ইদ্দোর বইয়ে* লেখা আছে।

পাদটীকাগুলো

আক্ষ., “বেছে নেওয়া।”
আক্ষ., “বেছে নেওয়া।”
অর্থাৎ এই চুক্তি চিরকালের জন্য আর এটা কখনো পরিবর্তিত হবে না।
অর্থাৎ দর্শন-রুটি।
আক্ষ., “বেছে নেওয়া।”
বা “বর্ণনায়; মন্তব্যে।”