রাজাবলির দ্বিতীয় খণ্ড ১৬:১-২০

১৬  ইজরায়েলে রমলিয়ের ছেলে পেকহের রাজত্বের ১৭তম বছরে যিহূদায় রাজা যোথমের ছেলে আহস রাজা হলেন। ২  সেই সময়ে আহসের বয়স ছিল ২০ বছর আর তিনি জেরুসালেম থেকে যিহূদার উপর ১৬ বছর ধরে রাজত্ব করলেন। তার পূর্বপুরুষ দায়ূদ যিহোবার দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করেছিলেন, কিন্তু তিনি তা করলেন না। ৩  এর পরিবর্তে, তিনি ইজরায়েলের রাজাদের পথে চললেন এবং সেই জাতিগুলোর মতো জঘন্য কাজ করলেন, যাদের যিহোবা ইজরায়েলীয়দের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এমনকী নিজের ছেলেকে আগুনে পুড়িয়ে উৎসর্গ করলেন।* ৪  শুধু তা-ই নয়, তিনি উঁচু জায়গাগুলোতে, পাহাড়ে এবং প্রতিটা বড়ো গাছের নীচে বলি উৎসর্গ করতে থাকলেন, যাতে বলি থেকে ধোঁয়া বের হয়। ৫  সেই সময়ে সিরিয়ার রাজা রৎসীন এবং ইজরায়েলের রাজা পেকহ, যিনি রমলিয়ের ছেলে ছিলেন, আহসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য জেরুসালেমে এলেন। তারা নগরটা ঘিরে ফেললেন, কিন্তু সেটাকে দখল করতে পারলেন না। ৬  সেই সময় সিরিয়ার রাজা রৎসীন ইদোমকে এলৎ নগরটা ফিরিয়ে দিলেন আর তারপর এলৎ থেকে যিহুদিদের* তাড়িয়ে দিলেন। আর ইদোমীয়েরা এসে এলতে থাকতে লাগল এবং আজ পর্যন্ত তারা সেখানেই রয়েছে। ৭  তাই, আহস তার বার্তাবাহকদের মাধ্যমে অশূরের রাজা তিগ্লৎপিলেষরের কাছে এই বার্তা পাঠালেন: “হে আমার প্রভু, আমাকে সাহায্য করুন। আমি আপনার দাস, আপনার ছেলে। সিরিয়ার রাজা এবং ইজরায়েলের রাজা আমার উপর আক্রমণ করতে এসেছে। দয়া করে আমাকে বাঁচান।” ৮  তখন আহস যিহোবার গৃহ এবং রাজপ্রাসাদের কোষাগার থেকে সমস্ত সোনা-রুপো নিলেন এবং সেগুলো ঘুস হিসেবে অশূরের রাজার কাছে পাঠালেন। ৯  অশূরের রাজা তার অনুরোধ রাখলেন। তিনি দামেস্কে গিয়ে সেটার উপর আক্রমণ করলেন আর সেটাকে দখল করে নিলেন। তিনি সেখানকার লোকদের বন্দি করে কীরে নিয়ে গেলেন আর রৎসীনকে মেরে ফেললেন। ১০  পরে, রাজা আহস অশূরের রাজা তিগ্লৎপিলেষরের সঙ্গে দেখা করার জন্য দামেস্কে গেলেন। আহস যখন সেখানকার বেদি দেখলেন, তখন তিনি সেটার একটা নকশা যাজক ঊরিয়ের কাছে পাঠালেন, যেটার মধ্যে বেদির আকৃতি এবং সেটা কীভাবে তৈরি করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা ছিল। ১১  রাজা আহস দামেস্ক থেকে যে-সমস্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছিলেন, সেই অনুযায়ী যাজক ঊরিয় একটা বেদি তৈরি করলেন। রাজা দামেস্ক থেকে ফিরে আসার আগেই তিনি সেই বেদিটা তৈরি করে ফেললেন। ১২  রাজা যখন দামেস্ক থেকে ফিরে এলেন এবং সেই বেদিটা দেখলেন, তখন তিনি সেটার কাছে গিয়ে সেটার উপর বলি উৎসর্গ করলেন। ১৩  তিনি একটার পর একটা হোমবলি এবং শস্য নৈবেদ্য* উৎসর্গ করলেন, যাতে সেগুলো থেকে ধোঁয়া বের হয়। এ ছাড়া, তিনি নিজের পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন এবং নিজের মঙ্গলার্থক বলির রক্ত বেদির উপর ছিটিয়ে দিলেন। ১৪  তারপর, তিনি তামার সেই বেদিটা সরিয়ে দিলেন, যেটা গৃহের সামনে, যিহোবার সামনে রাখা ছিল। তিনি সেই বেদিটা যিহোবার গৃহ এবং নিজের তৈরি করা বেদির মাঝখান থেকে সরিয়ে দিলেন এবং নিজের বেদির উত্তর দিকে রাখলেন। ১৫  রাজা আহস যাজক ঊরিয়কে এই আদেশ দিলেন: “এখন থেকে তুমি এই বড়ো বেদির উপর সকালের হোমবলি এবং বিকেলের শস্য নৈবেদ্য, রাজার দেওয়া হোমবলি এবং শস্য নৈবেদ্য আর সেইসঙ্গে লোকদের দেওয়া হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে। তুমি হোমবলি এবং অন্যান্য বলির সমস্ত রক্ত এই বেদির উপর ছিটিয়ে দেবে। আর আমি ভেবে বলব, ওই তামার বেদিটা নিয়ে কী করা যায়।” ১৬  রাজা আহস যে-সমস্ত আদেশ দিলেন, যাজক ঊরিয় সেই সমস্ত কিছু পালন করলেন। ১৭  এ ছাড়া, রাজা আহস গৃহের ঠেলাগাড়িগুলোর মধ্য থেকে জলের পাত্রগুলো বের করে দিলেন এবং ঠেলাগাড়িগুলোর পাতগুলো কেটে টুকরো টুকরো করে দিলেন। তামার ষাঁড়গুলোর উপর যে-বিশাল পাত্রটা ছিল, তিনি সেটাকে নামিয়ে পাথরের মেঝের উপর রাখলেন। ১৮  বিশ্রামবারের জন্য গৃহের মধ্যে ছাদ দেওয়া যে-জায়গাটা তৈরি করা হয়েছিল, সেটা এবং যে-দরজা দিয়ে যিহোবার গৃহে রাজা প্রবেশ করতেন, সেটা তিনি সরিয়ে দিলেন। তিনি অশূরের রাজার কারণে এমনটা করলেন। ১৯  আহসের জীবনের বাকি কাহিনি এবং তিনি যে-সমস্ত কাজ করেছিলেন, সেই সমস্ত কিছুর বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে। ২০  তারপর, আহস মারা গেলেন* আর তাকে দায়ূদ-নগরে তার পূর্বপুরুষদের কবরে কবর দেওয়া হল। তার জায়গায় তার ছেলে হিষ্কিয়* রাজা হলেন।

পাদটীকাগুলো

আক্ষ., “আগুনের মধ্য দিয়ে পার করালেন।”
বা “যিহূদার লোকদের।”
বা “ভক্ষ্য নৈবেদ্য।”
আক্ষ., “আহস তার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শুয়ে পড়লেন।”
অর্থ, “যিহোবা শক্তিশালী করেন।”